Thank you for trying Sticky AMP!!

হরিধান: হরিপদের সোনালী সন্তান

>

বেশি ফলন দেয়—ধানের এমন একটি নতুন জাত আবিষ্কার হয়​ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষক হরিপদ কাপালির হাত ধরে। যা পরে ‘হরি ধান’ হিসেবে পরিচিতি পায় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে এর চাষাবাদ শুরু হয়। ২০০৩ সালের ২৩ নভেম্বর সেই সংবাদ উঠে আসে প্রথম আলোর ‘আলোকিত দক্ষিণ’ ক্রোড়পত্রে। পরে ২০০৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবারের বিশেষ প্রতিবেদন হিসেবে হরি ধানের কথা প্রকাশিত হয় প্রথম আলোতে।  বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটও ‘হরি ধান’কে স্বীকৃতি দিয়েছে।

.

ঝিনাইদহ জেলার পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে নাম না জানা এক জাতের ধান চাষ হচ্ছে ব্যাপক হারে। আসাদ নগর বংকিরাসহ পাশ্ববর্তী গ্রামগুলোর কৃষকরা তাদের শত শত একর জমিতে এই ধান চাষ করে বাম্পার ফলন ফলাতে সক্ষম হয়েছেন। অল্প খরচে অধিক ফলনে এই ধান দেখতে ও বীজ সংগ্রহে প্রতিদিন দূর-দূরান্তের অসংখ্য লোক গ্রামগুলোতে আসছে।
কৃষি বিভাগ অজানা এই ধানের ফলন ভালো হচ্ছে বলে জানালেও ধানের জাত বলতে পারেননি। তারা দ্রুত পরীক্ষার মাধ্যমে জাত বাছাই করার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছে।
তবে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আসাদনগর গ্রামের হরিপদ কাপালী এই নাম না জানা জাতের ধান প্রথম চাষ করেন। তার কাছ থেকে বীজ নিয়ে অন্যরা ওই ধান করছে। ফলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এলাকার লোকজন ধানের নাম দিয়েছেন ‘হরি ধান’। কৃষকরা জানান আশপাশের দশ-বারো গ্রাম ছাড়িয়ে বর্তমানে অন্য জেলায়ও এই ধানের চাষ শুরু হয়েছে। কম খরচে অধিক ফলন তুলতে দেখে সবাই এই ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছে। হরি ধানে চিটা কম ও বিচালীর দামও বেশি।

সরেজমিন আসাদ নগর গ্রামে গিয়ে হরিপদ কাপালীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ছয়-সাত বছর আগে তিনি জমিতে অত্র অঞ্চলে প্রচলিত বিআর১১ জাতের ধান চাষ করেন। ওই ধান ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করার সময় চার-পাঁচটি মোটা ধান গাছ দেখতে পান যা আগাছা হিসেবে কেটে না ফেলে তিনি রেখে দেন। তার ধারণা ছিল এই গাছে হয়তো বা ধান হবে না কিন্তু অন্যান্য ধান গাছের সঙ্গে এই গাছগুলোও বাড়তে থাকে এবং ভালো ধান হয়। ধানের গাছগুলো মোটা ও লম্বা হয়।

হরিপদ ওই গাছ থেকে পাওয়া ধানগুলো আলাদা করে রেখে দেন। পরের বছর তিনি দুই থেকে তিনশ গ্রামের ওই ধান বীজের জন্য আলাদা বীজতলা তৈরি করেন এবং আলাদা জমিতে রোপণ করেন। বাকিতে জমিতে করেন অন্য ধান। কিন্তু সমান ভাবে উভয় ধানের পরিচর্যা করেন। আচার্য অন্যান্য ধান থেকে অজানা জাতের ধানের ফলন ভালো হয়। এরপর ধান কাটার সময় তিনি স্বর্ণা জাত ও নাম না জানা ওই জাতের উত্পাদন পরীক্ষা করেন। নিজের দুই জাতের সমপরিমাণ জমির ধান কেটে দেখতে পান অজানা জাতের ধানের ফলন বেশি হয়েছে। এর পরের বছর তিনি দশ কাঠা জমিতে এই ধানের চাষ করেন। তার ক্ষেতের ধানগাছ দেখে এলাকার লোকজন মুগ্ধ হন। আশপাশের লোকজন ধানের ক্ষেত দেখতে আসতে শুরু করেন। পরে ধান কাটার সময় ফলন দেখে অন্য কৃষকরা বীজ নেওয়ার জন্য তার কাছে ধন্যা দেন। বীজ দিতে না পারায় অনেকে তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন।

হরিপদ জানান প্রথম বছর তার দশ কাঠা জমিতে যে ধান উত্পাদন হয়েছিল তার সবই বীজ করে গ্রামের কৃষকদের দিয়েছি এভাবে একে ওপরের কাছ থেকে বীজ নিয়ে এই ধানের চাষ শুরু করেছে। গত দুই/তিন বছরের ব্যবধানে পুরো এলাকায় এই ধান ছড়িয়ে পড়েছে। এ জাতের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় কৃষকরা এই ধানকে তার নাম অনুসারে ‘হরিধান’ নামকরণ করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ধানের চাষ সম্পর্কে কৃষকরা জানান, অন্যান্য ধান চাষের মতো হরিধানের চাষ করতে হয়। বিআর১১ বা স্বর্ণা জাতের ধান রোপণের সময় এই ধান রোপণ করা যায়। একই সময় কাটাও যায়। এক বিভাগ জমিতে স্বর্ণা জাতের ধান চাষ করলে সাধারণত ১৮ থেকে ২০ মণ ধান উত্পাদন হয়ে থাকে। আর হরি ধান উত্পাদন হচ্ছে ২০ থেকে ২২ মণ। কৃষকরা জানান, এই ধানের উত্পাদন খরচও কম। তাদের ভাষায় অন্য যেকোনো জাতের ধান এক জমিতে চাষ করতে খরচ হয় প্রায় এক হাজার পাঁচশ টাকা আর হরি ধান চাষ করতে তার অর্ধেক খরচ হয়।

ধানের ক্ষেতে সার এবং ওষুধ উভয় কম লাগে। স্বর্ণা ও বিআর১১ জাতের ধান দুই থেকে তিনবার ইউরিয়া সার দিতে হয়। হরিধানের ক্ষেত্রে একবার সার দিলেই চলে।

কৃষকরা জানান, এই ধানের গাছ এমনিতে বড় ও মোটা হয়। তাছাড়া ধান গাছের কাণ্ড খুব শক্ত ও মোটা হওয়ায় সহজে পোকায় আক্রমণ করতে পারে না। কৃষকরা জানান, গত বছর এই ধান চাষে আগ্রহী চাষিদের মধ্যে বীজ নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়েছে। অনেকেই এসে বীজ না পেয়ে ফিরে গেছেন। কৃষকরা আরও জানান, হরিধানের গাছ লম্বা হওয়ায় এর বিচালীর (খড়) কদরও বেশি। এই বিচালী পাঁচশ টাকা দরে হাজার বিক্রি হয়। যা অন্যান্য বিচালীর দামের থেকে দেড়গুণ বেশি।

হরিধান চাষ করেছেন আসাদনগর গ্রামের কিতাবদী মণ্ডলের পুত্র শুকুর আলী। তিনি জানান, আড়াই বিঘা জমি আছে তার। যার সবটুকুতেই হরিধানের চাষ করেছেন। গত বছর এক বিঘা চাষ করেন। ফলন ভালো দেখে এবার পুরো জমিতেই চাষ করেছেন। শুকুর বলেন, জাত বুঝি না, ফলন ভালো দেখে তিনি এই ধানের চাষ করেছেন। এবং আগামীতেও করবেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে তার কাছ থেকে অনেক আত্মীয়স্বজন এই ধানের বীজ নিয়ে গেছেন। আরও অনেকে চেয়ে রেখেছেন। তারা এটা হরি ধান বলেই চেনেন।

শুকুর আলী জানান, পাশ্ববর্তী ভূটলে, নবীনগর, যাদবপুর, শাহপুর, বোয়ালীয়া, কুমড়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা জেলার ফকিরডাঙ্গাসহ ১১/১২টি গ্রামে এই ধানের চাষ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাদের গ্রাম আসাদনগরের ছয়শ একর জমিতে এই হরি ধানের চাষ হয়েছে। পাশ্ববর্তী বংকিরা গ্রামের সুধীর কুমার জানান, প্রতিবছর তিনি ছয় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন। এবার সবটুকুতেই হরিধান চাষ করেছেন। অন্যজাতের ধান চাষ করেননি। তিনি জানান, তাদের গ্রামের প্রায় সবাই এই হরিধানের চাষ করেছেন। তিনি আরও জানান, ধানটা দেখতে মোটা হলেও চাল ভালো হয়। যা ভাত রান্না করে খেতেও সাধ লাগে। অন্যান্য চালের ভাতের থেকে এই ধানের ভাতের সাধ বেশি।

আসাদনগর গ্রামের সামাদ শেখের স্ত্রী আরজিনা খাতুন জানিয়েছেন, চাউল দেখতে একটু মোটা হলেও রান্নার পর দেখতে খুব ভালো লাগে। আর খেতে ভালো। তাছাড়া (বরকত!) ভাতও বেশি হয়। মুজিবুর রহমানের স্ত্রী বৃষ্টি পারভিন বলেন, এই চালের ভাত খেতে তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এখন অন্য চালের ভাত খেতে ভালো লাগে না। একই গ্রামের সফিকুল ইসলামের স্ত্রী বিউটি খাতুন জানান, ধানের চিটা খুবই কম হয়, যে কারণে কাটার পর পরিষ্কার করতে কষ্টও কম।

হরিধান সম্পর্কে কৃষি বিভাগের ওই এলাকার ব্লক সুপারভাইজার তোফাজ্জল হোসেন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ধানটির জাত কী তা তারা বলতে পারছেন না। তবে ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা এটার চাষ করছেন এবং তারাও চাষের পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি হরি ধানের ফলন সম্পর্কে বলেন, গত ১৭ নভেম্বর তার ব্লকের সাধুহাটি ধর্মতলা পাড়ার কৃষক আতর আলীর ক্ষেতে দুই ধরনের ধান কেটে তারা ফলন পরীক্ষা করেছেন। যেখানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হরিবুল্লাহ সরকার উপস্থিত ছিলেন।

উভয় ক্ষেতের দশ মিটার করে জায়গা ধান কাটার পর তারা হিসাব করে দেখতে পান স্বর্ণা হয়েছে হেক্টরে কাঁচা পাঁচ দশমিক সাত মেট্রিক টন। আর শুকনা হয়েছে চার দশমিক পাঁচ মেট্রিক টন। অন্যদিকে হরি ধান উত্পাদন হয়েছে হেক্টরে কাঁচা পাঁচ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন ও শুকনা চার দশমিক ছয় মেট্রিক টন।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হরিবুল্লাহ সরকার জানান, তারা জাতটির পরীক্ষার জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করবেন। এখন পর্যন্ত ব্লক সুপারভাইজার ও কৃষিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ধানের ফলন ভালো বলে উল্লেখ করেন। জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক হাকিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ধানটির জাত তারা যাচাই করবেন। সে লক্ষে তিনি এলাকায় গিয়েছেন এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দ্রুত ধানের জাত পরীক্ষা করবেন বলে কৃষকদের জানান।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাধু হাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগ ধানটি পরীক্ষা করে বীজ বাজারজাত করবে এটা তিনি আশা করেন। তিনি দাবি করেন যেহেতু অল্প খরচে হরিধানের অধিক ফলন হচ্ছে সেহেতু এর নামকরণ ঠিক রেখে সারা দেশে কৃষকদের মাঝে এই ধান চাষ ছড়িয়ে দেওয়া উচিত।

হরিপদ কাপালীর সাক্ষাত্কার

আমার স্মৃতি ধরে রাখবে হরি ধান

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামের মত ঈশ্বর কুণ্ডু কাপালীর পুত্র হরিপদ কাপালী। বয়স ৭০ বছর। বিয়ে করেছেন বাল্য বয়সে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সন্তান আসেনি তার ঘরে। স্ত্রী সুনীতি রানী কাপালীকে নিয়ে ভালোই চলছে তার সংসার। বসে আলাপকালে হরিপদ জানান, ‘লেখাপড়া জানিনে, তবে মাঝ বয়সে নাম লেখা শিকিচি’। তবে এসব এখন কোনো বড় বিষয় নয়। বড় বিষয়, একটা বিরাট অঞ্চলের লোক হরিপদকে চেনেন। তিনি যে হরি ধানের জনক।

প্রশ্ন: কৃষিকাজে যুক্ত হলেন কবে?

হরিপদ: বাল্য বয়স থেকে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ করতে যেতাম। অসচ্ছল পরিবারে জন্ম হওয়ায় পড়ালেখা হয়ে ওঠেনি। প্রথম জীবনে অনেক কষ্ট করত হয়েছে। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে ঘাড়ে। কিছুদিনের মধ্যে সংসার পৃথক হয়ে যায় তাদের। মাত্র দেড় বিঘা জমি আছে আমার।

প্রশ্ন: এখন কেমন আছেন?

হরিপদ: বয়স অনেক হয়েছে। এখন মরণের জন্য অপেক্ষা। এই সময় আমার সাধনায় হরি ধান মাঠে এসেছে। খুব ভালো লাগছে। তিনি বলেন কত লেখাপড়া জানা মানুষেরে লোকে চেনে না। অথচ আমাকে সবাই চিনছে। এটা আমার বড় শান্তি।

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলাকে দেখিয়ে বলে, ওই হচ্ছে আমার স্ত্রী। নাম সুনীতি রাণী কাপালী। আমাদের বুড়োবুড়ির সংসার ভালোই চলছে।

প্রশ্ন: হরিধান কিভাবে পেলেন?

হরিপদ: পাঁচ/ছয় বছর পূর্বে আষাঢ় মাসে ইরি ধানের ক্ষেতে ঘাস পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখি চার/পাঁচটি গাছ। সেগুলো অন্যগুলোর চেয়ে মোটা ও বড়। তখন চিন্তা করি গাছ যখন মোটা ও বড় তখন ধানও ভালো হবে। তাই আগাছা হিসেবে কেটে না ফেলে ধানগুলো রেখে দেই। পরে ওই গাছগুলো থেকে ধান বুনি। ভালো ফলন দেখে মানুষেও বীজ চায়। একজন/দুজন করে পর্যায়ক্রমে আর সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। জাত না চিনতে পারলেও কম খরচে ফলন ভালো দেখে সবাই চাষ করতে শুরু করেছেন।

প্রশ্ন: এটাতো এখন হরি ধান নামে পরিচিত। নাম কে দিয়েছেন?

হরিপদ: এটা আমার নামেই হয়েছে। তবে এটার নাম দিয়েছে লোকজন। এখন শুনতে আমারও বেশ ভালো লাগে। মনে হচ্ছে এই ধানটা আমি সৃষ্টি করলাম। কৃষি বিভাগের লোকজন বাড়িতে আসছেন। দামি দামি গাড়িতে করে তারা যখন আসছেন, তখন নিজের মধ্যে গর্ববোধ হচ্ছে। মনে হচ্ছে পাড়া গাঁয়ের অশিক্ষিত হরিকে আজ সবাই চিনে ফেলেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা বীজের জন্য এসে হরি লোকটি কে তার খোঁজ করছেন। এটাও আমাকে খুব আনন্দ দিচ্ছে।

প্রশ্ন: এই ধান নিয়ে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে?

হরিপদ: আমাদের কোনো ছেলেমেয়ে নেই। এখন মনে হচ্ছে হরি ধানটি আমাদের জীবনের আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এই ধান আমার মনের সব কষ্ট দূর করে দিয়েছে। ধানটি যে জাতেরই হোক কৃষকের দেওয়া নামটি যেন থাকে। আমার বংশে যেহেতু কেউ নেই তাই হরি ধানের মাধ্যমেই আমি বেঁচে থাকতে চাই।

প্রশ্ন: সরকারের কাছে কি আপনার কিছু চাওয়ার আছে?

হরিপদ: সরকারের কাছে দাবি—এই ধানটির ফলন ভালো এবং উত্পাদন খরচও কম, তাই কৃষকরা যাতে এই ধানের চাষ করে সে ব্যবস্থা যেন সরকার করে। তাদের দেওয়া নামটি অক্ষুণ্ন রেখে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক এই ধান।