কাতারের বিপক্ষে 'ভুল' না করার প্রতিজ্ঞা
>কাতারকে হারিয়ে দিতে পারলে এবং অন্য ম্যাচে থাইল্যান্ড না জিতলে প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমস ফুটবলের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ড ম্যাচে ভুল করেছিলেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। আজ কাতারের বিপক্ষে সে ভুল আর হবে না বলেই অভয় দিচ্ছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক।
বাংলাদেশের পোস্টের নিচে একসময় আমিনুল হক ছিলেন শেষ ভরসা। তাঁর অবসরের পর একজন বিশ্বস্ত গোলরক্ষকের খোঁজে এখন লাল-সবুজের দল। একজন কিছুটা হলেও আস্থা নিয়ে খেলছেন এই সময়ে। চলতি এশিয়ান গেমসে তিন সিনিয়র কোটায় গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে পোস্টের নিচে রাখছেন কোচ জেমি ডে।
উজবেকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ খেলেছেন আশরাফুল। তাঁর নৈপুণ্যে সে ম্যাচে বাংলাদেশের হারের ব্যবধান তিন গোলের বেশি হয়নি। থাইল্যান্ড ম্যাচেও ভালো খেলতে খেলতে শেষ দিকে একটা বল ঠিকমতো পাঞ্চ করতে গিয়ে পারলেন না আশরাফুল। ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে ফেলে পিছিয়ে পড়া থাইল্যান্ড।
আজ সন্ধ্যায় কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচে আর ভুল করতে চান না আশরাফুল। এই প্রথম দলকে এশিয়াডের দ্বিতীয় রাউন্ডে নিয়ে যেতে মাঠে দিতে চান নিজের সেরাটা। সেটি দিতে পারলে কাতারকে হারিয়ে স্বপ্ন পূরণ হবে—এমন বিশ্বাস এই গোলরক্ষকের।
বাংলাদেশ দলের হোটেল বসে আজ ম্যাচ জয়ের আশার কথাই বারবার বলেন আশরাফুল। জয় নিয়েই স্বপ্ন পূরণ সম্ভব বলে তাঁর বিশ্বাস, ‘যে ফুটবলটা আমরা গত দুটি ম্যাচে খেলেছি, তা ধরে রাখতে পারলে কাতারকে আমরা হারাতে পারব আশা করি। আমাদের তরুণ ফুটবলাররা ভালো খেলছে। ওদের ওপর আমার পুরো আস্থা আছে।’
এখন পর্যন্ত এশিয়ান গেমসে ফুটবল দলে খেলায় খুশিই আছেন এই গোলরক্ষক। তাঁর কথা, ‘আমাদের গ্রুপে উজবেকিস্তান ছাড়া বাকি দুটি দল থাইল্যান্ড ও কাতার প্রায় সমানই। আমরা ভেবেছিলাম, ওদের চেয়ে পিছিয়ে থাকব। কিন্তু গেমস শুরুর পর মনে সেই ধারণা গেছে পাল্টে। থাইল্যান্ডর বিপক্ষে বাজে গোল খেয়ে হেরেছি। এ জন্য আমার অনেক দুঃখ লাগছে, আফসোস হচ্ছে। ওই ম্যাচ জেতা থাকলে আমাদের দ্বিতীয় রাউন্ডে খুব ভালো সম্ভাবনা ছিল। তারপরও কাতারকে হারিয়ে আমরা স্বপ্ন পূরণ করতে চাইব।’
অবশ্য বাংলাদেশ আজ জিতলেও লাভ হবে না, যদি উজবেকদের হারিয়ে দেয় থাইল্যান্ড। সে ক্ষেত্রে ৫ পয়েন্ট নিয়ে থাইল্যান্ড চলে যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। তবে বাংলাদেশের জালে ৩ গোল ও কাতারকে ৬ গোলে উড়িয়ে দেওয়া উজবেকিস্তান মনে হয় না আজ থাইল্যান্ডের কাছে হারবে। হেসেখেলেই বরং আজ উজবেকদের জেতার কথা। এই বিশ্বাসটা আশরাফুলেরও আছে বলে কাতার ম্যাচ থেকে পুরো পয়েন্ট পেতে মুখিয়ে আছেন তিনি।
আশরাফুল ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। ফুটবলার কোটায় এই বাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে ফুটবল খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই চোখ কেড়ে নিলেন। তারপর ভাবলেন জাতীয় স্তরে খেলা সম্ভব তাঁর পক্ষে, সিদ্ধান্ত নেন সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দেবেন। মধ্যে দারুণ সম্ভাবনা দেখে ক্লাব স্তরে খেলতে সহায়তার হাত বাড়ান সেনাবাহিনীতে তাঁর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেনাবাহিনী ছেড়ে এখন আশরাফুল হয়ে উঠেছেন দেশের এক নম্বর গোলরক্ষক।
ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন ও দিদারুলও একসময় ছিলেন সেনাবাহিনীতে। তিনজনই শীর্ষ স্তরে পেয়েছেন প্রতিষ্ঠা। নাসির এই সফরে আছেন বাংলাদেশ দলের সঙ্গে। তবে সিনিয়র কোটায় তাঁকে অনূর্ধ্ব-২৩ দলে রাখা হয়নি। যদিও সাফের জন্য মূল জাতীয় দলে থাকবেন নাসির। সেই নাসির সতীর্থ আশরাফুলকে নিয়ে বলছিলেন, ‘পোস্টের নিচে ওর ওপর আস্থা রাখা যায়। ভালো গোলকিপার। খেলাটা ভালো বুঝতে পারে। খেলার প্রতি ওর নিবেদনও অনেক। দেখাই যাক, আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় শুরু ম্যাচে সেই আস্থার প্রতিদান কতটা দিতে পারেন আশরাফুল ইসলাম রানা।