ম্যাচের ফলাফলে লেখা থাকবে ড্র। স্কোর কার্ডও বলবে, দুই দলের লড়াইটা ভালোই জমেছে। তবে টেস্টে ড্র ম্যাচেও অনেক সময় থাকে জয়-পরাজয়ের হিসাব-নিকাশ। ক্রিকেটীয় পরিভাষায় সেটির নাম ‘মোরাল ভিক্টরি’ বা নৈতিক জয়। তো চট্টগ্রাম টেস্টে নৈতিক বিজয় হলো কোন দলের?
ম্যাচটি যাঁরা দেখেছেন, এর উত্তর তাঁদের জানা থাকার কথা। নৈতিক বিজয়ের হিসাব-নিকাশে বড় একটা ভূমিকা থাকে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের। সেখানে কোন দল এগিয়ে, সেটিও মোটামুটি স্পষ্ট। আরও স্পষ্ট করে দিল দুই দলের সংবাদ সম্মেলন। দুই অধিনায়কের প্রতিক্রিয়াই বলছে, চট্টগ্রাম থেকে নৈতিক বিজয় নিয়ে ঈদের ছুটিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। ওই জয়ের রেশ নিয়ে ঈদের পর আবার শুরু হবে অনুশীলন, ওই রেশ নিয়েই আবার মাঠে নামবে দ্বিতীয় টেস্টে!
দুই দলের আগের নয় টেস্টের আটটিতেই জিতেছে নিউজিল্যান্ড। একমাত্র ড্রটি বৃষ্টির কারণে। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড লড়াইয়ে কিউইদের জয় ছাড়া অন্য যেকোনো ফলই হওয়ার কথা অঘটন। অথচ কাল কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কী বলেছেন শুনুন, ‘অবশ্যই এই টেস্টের ফলকে আমরা ইতিবাচক বলব। আমরা যথেষ্ট ভালো খেলেছি, বাংলাদেশও অনেক ভালো খেলেছে। দুই দলই দারুণ ব্যাটিং করেছে। সিরিজটা ভালোভাবে শুরু হলো। আমরা জিতলে অবশ্যই ভালো হতো, তবে যা হয়েছে সেটিও খারাপ নয়।’ জিম্বাবুয়ে ছাড়া অন্য কোনো দেশের অধিনায়ক বাংলাদেশের সঙ্গে ড্র করাকে বলছেন ইতিবাচক ফলাফল, এটা অভাবনীয় ছিল কিছুদিন আগেও। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার একটি বড় প্রমাণ এটি। আর ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তো সব সময়ই জোগায় আত্মবিশ্বাসের রসদ। কাল মুশফিকও বললেন, ‘আমি সব সময় বলেছি, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ধারাবাহিক হলে দলও ধারাবাহিক হবে। এখন দলে পারফরমার বেড়েছে, সবাই নিয়মিত পারফর্ম করছে। দল হিসেবেও তাই আমরা উন্নতি করছি।’
চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশ চালিয়ে খেললে জিততে পারত, এই কথাটি সম্ভবত এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে দেশজুড়ে। মুশফিক অবশ্য জানালেন, জিততেই হবে, এমন কোনো বার্তা ছিল না ব্যাটসম্যানদের প্রতি। বরং সবাইকে সহজাত খেলার কথাই বলা হয়েছিল। বাস্তবতাও তাই ছিল। ৪৬ ওভারে ২৫৬ রানের লক্ষ্য, ম্যাচ আসলে ওখানেই একরকম শেষ। ‘স্পোর্টিং’ ইনিংস ঘোষণার জন্য অনেক বাহবা পেয়েছেন ম্যাককালাম। যদিও ম্যাচের শেষ দিন শেষ দুই সেশনে ওভারপ্রতি প্রায় সাড়ে পাঁচ করে রান করা অসম্ভবের কাছাকাছি একটা ব্যাপার।
তবে ব্যাটিং প্র্যাকটিসটা ভালোই করেছে বাংলাদেশ, প্রাপ্তির ঝুলিতে কিছু হলেও ভরেছেন সাকিব-তামিম। সবকিছুই আত্মবিশ্বাস আরেকটু উঁচুতে নিয়ে গেছে মুশফিকের। দৃঢ় কণ্ঠে বলে গেলেন, ‘আমাদের জন্য এটি অনেক বড় একটি সিরিজ। আশা করি পরের টেস্ট জিতব, অনেক কিছু পাব এই সিরিজ থেকে।’