Thank you for trying Sticky AMP!!

থেমে গেল সেই কণ্ঠস্বর

মনজুর হাসান ১৯৪০–২০১৪

দুজনের বন্ধুত্ব ছিল ৬৪ বছরের পুরোনো। প্রবীণ সাংবাদিক কামরুজ্জামান প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফোন করতেন ধারাভাষ্যকার মনজুর হাসানকে (মিন্টু)। দিনে অন্তত পাঁচ-ছয়বার টেলিফোনে কথা হতোই দুজনের। কিন্তু আর কোনো দিন টেলিফোনের অন্য প্রান্ত থেকে গুরুগম্ভীর সেই কণ্ঠস্বর শুনতে পাবেন না কামরুজ্জামান। ভারতে বেড়াতে গিয়ে গতকাল না ফেরার দেশে চলে গেলেন ৭৫ বছর বয়সী মনজুর হাসান।
প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ কামরুজ্জামান বলছিলেন, ‘আমার বুক খালি হয়ে গেছে। ও তো একজন ধারাভাষ্যকারই নয়, চমৎকার মানুষও ছিল।’
স্ত্রী পারভীন হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ১৩ নভেম্বর ভারত ভ্রমণে যান মনজুর হাসান। রাজস্থানের জয়পুরের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। কাল সন্ধ্যায় গোসলখানায় পা পিছলে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে বমি, দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
খেলাপাগল একজন মানুষ ছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে জন্ম হলেও মাত্র চার বছর বয়সে বাবার হাত ধরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসা। বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকার বকশীবাজারে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পঞ্চাশের দশকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিস দলে। ১৯৬০ সালে তাঁর অধিনায়কত্বে ঢাকা ফুটবল লিগে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন ওয়ান্ডারার্স। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে এশিয়ান গেমসে খেলেছেন টোকিওতে। প্রায় ২৬ বছর ধরে ঢাকা লিগে ক্রিকেটও খেলেছেন। বিশিষ্ট ধারাভাষ্যকার প্রয়াত আবদুল হামিদের মাধ্যমে ধারাভাষ্যে হাতেখড়ি ১৯৭৩ সালে। সর্বশেষ ধারাভাষ্য দিয়েছেন সম্প্রতি শেষ হওয়া বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টে। আবদুল হামিদ কিছুদিন আগে চলে গেছেন, এবার গেলেন মনজুর হাসান। বাংলাদেশের ক্রীড়া ধারাভাষ্য জগতে নেমে এল বিরাট শূন্যতা।
ক্রীড়াঙ্গনে তাই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বিসিবি, বিওএ ও বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি।