Thank you for trying Sticky AMP!!

দিলশানকে দেখেও শিখল না কেউ

গাজী আশরাফ হোসেন

একটা দলের বোলিং গভীরতা, দুটো পাওয়ার প্লে, ডেথ ওভারে অধিনায়কের বোলিং সমন্বয় ও বোলারদের নৈপুণ্যের মূল্যায়ন যথাযথভাবে করা যায় দলটা যদি এক দিনের ম্যাচে আগে বল করে। কাল বাংলাদেশ দলকে আগে বল করতে দেখে সে আশাতেই ছিলাম। কিন্তু ক্যাচ, স্টাম্পিং ও রানআউট মিসের মহড়ায় খেলা দেখাটাই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াল। শ্রীলঙ্কার মাথায় যে চাপের বোঝা ছিল, তা আমরা প্রথম সেশনের শুরুতেই নিজেদের মাথায় নিয়ে নিলাম।
উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান না আসায় ৩৮ বছরের দিলশানের ফিটনেস দেখলাম। নিজের ও সাঙ্গাকারার রানের জন্য একই গতিতে দৌড়ালেন শেষ অবধি। ক্লান্তি নিশ্চয়ই ছিল, তবে এলোমেলো কোনো শট খেলতে দেখলাম না। এই বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত এক দিনের ম্যাচে শ্রীলঙ্কা আমাদের বিপক্ষে মোট যা রান করেছে তার ৭৮ শতাংশ তাদের তিন বর্ষীয়ান ব্যাটসম্যানের। এই ম্যাচেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটল। ব্যাটিংয়ে আমাদের কোনো ব্যাটসম্যানই পারেনি দিলশানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে। ফলাফলটা তো আপনারা দেখেছেনই।
গতির সঙ্গে তাসকিন ও রুবেলকে মাশরাফির মতো ভালো লাইন-লেন্থে বল করার দক্ষতা রপ্ত করার দিকেও মনোযোগী হতে হবে। উইনিং কম্বিনেশন ঠিক রাখতে গিয়ে আমরা মুমিনুলের জায়গায় একটা স্পিনার খেলালাম না। কিন্তু আমি মনে করি, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচে যদি টিম ম্যানেজমেন্টের বাড়তি স্পিনার খেলানোর চিন্তা থেকে থাকে, তাহলে তাকে গতকালের ম্যাচে খেলিয়ে ধাতস্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। কারণ আমাদের তরুণ স্পিনারদের হাতে এমন কোনো জাদুর কাঠি নেই যে হুট করে অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে বল করতে নেমেই দারুণ কিছু করে ফেলবে। আর একটা কথা বলে রাখি—কাল শুরুতেই উইকেট পড়ার পর মুমিনুলকে পাঠিয়ে সাকিব ও মুশফিককে পরে নামানোর কৌশল আমার কাছে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের টিম ম্যানেজমেন্টের আচরণের মতো মনে হয়েছে।
দলে অধিনায়কের পদটি কখনোই স্থায়ী নয়। তবে যতক্ষণই আপনি অধিনায়ক থাকবেন, আপনাকে আপনার ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটাতে হবে। একাদশ নির্বাচন থেকে শুরু করে ম্যাচ চলাকালে ব্যাটিং অর্ডার নির্ধারণে এবং বোলিংয়েও অধিনায়কের চিন্তাভাবনার শতভাগ বাস্তবায়ন হওয়া উচিত। অধিনায়ক টিম ম্যানেজমেন্টের বা দলের অন্য খেলোয়াড়ের পরামর্শ শুনতে পারেন। তবে সেসবের সঙ্গে একমত পোষণ না করলে তাঁর উচিত নিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকা।
কোচ ভূমিকা রাখবেন অনুশীলন ও কৌশল নির্ধারণে। খেলা চলাকালে যেন কেউ মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে না পারে, সেটার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ অধিনায়ককেই নিশ্চিত করতে হবে। ক্রিকেট খেলাটিই এমন যে তাতে অধিনায়কের একটা বিরাট কর্তৃত্ব থাকে। আশা করছি, বিশ্বকাপে আমরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সে কর্তৃত্ব মূল্যায়নের সুযোগ পাব।