Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্রাম চায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম

পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে চাপ পড়ছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠের ওপর। ধুলা ওড়া অসমতল মাঠে খেলাটা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন ফুটবলাররা।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠে সবুজের দেখা মেলে কম। গোলপোস্টের সামনে তো হয়ে উঠেছে ন্যাড়া

‘এই মাঠে বল নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন। বল নিয়ে ঠিকভাবে দৌড়ানোও যায় না’—কথাটা বলছিলেন রাউল বেসেরা। ফেডারেশন কাপে বসুন্ধরা কিংসকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে ৫ গোল করে যৌথভাবে সেরা গোলদাতা হয়েছিলেন আর্জেন্টিনার এই স্ট্রাইকার। অথচ খেলা শেষে বিজয়মঞ্চে দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠের দুরবস্থা নিয়ে হতাশা লুকাতে পারেননি তিনি। মাঠ নিয়ে হতাশ বিভিন্ন ক্লাবের জার্সিতে খেলা জাতীয় দলের ফুটবলাররাও।

মাঠের অনেক জায়গায় ঘাস নেই বলে খেলার সময় ধুলা ওড়ে। মাঠ অসমতলও। কখন যে বলের গতি বদলে যায়, বোঝা মুশকিল। এমন মাঠে বলকে বশ মানানো আসলেই কঠিন কাজ। জাতীয় দল ও আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানা বলেন, ‘এমন মাঠে ফুটবল খেলা যায় না। ঘাস নেই, ধুলা ওড়ে। বল নিতে গেলেই ভয় লাগে, ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারব কি না!’

এমন মাঠে খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার আশঙ্কাও প্রবল। চোট কাটিয়ে এই মৌসুমে নিয়মিত হয়েছেন জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। লিগে চারটি গোল করা শেখ রাসেলের এই মিডফিল্ডারের মাঠ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ, ‘মাঠ খুবই শক্ত। খেলতে কষ্ট হয় এখানে। কারণ, শক্ত মাঠে বেশি দৌড়ানো যায় না। একটু দৌড়ালেই হাঁটু ব্যথা করে। পেশি দ্রুত দুর্বল হয়ে যায়।’

লিগে দুর্দান্ত খেলছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। ৭ ম্যাচ শেষে অপরাজেয় থেকে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে তারা। দলটার কোচ শফিকুল ইসলামও কয়েক দিন আগে মাঠ নিয়ে হতাশা লুকাতে পারেননি, ‘এমন মাঠে ভালো ফুটবল খেলা কঠিন। মাঠ ভালো না হলে খেলোয়াড়দের বেশি বেশি চোটে পড়ার আশঙ্কা থাকে।’

প্রিমিয়ার লিগের ১৩ দলের ৯টিরই হোম ভেন্যু সবেধন নীলমণি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। গত ১৩ জানুয়ারি লিগ শুরু হওয়ার পর কাল পর্যন্ত এই মাঠে ম্যাচ হয়েছে ৩৬টি। অথচ এক মাঠে সপ্তাহে সর্বোচ্চ তিনটির বেশি ম্যাচ হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সাবেক প্রশাসক ইয়াহিয়া খান। অথচ গড়ে এই মাঠে প্রতিদিন একটির বেশি ম্যাচ হচ্ছে।

আর শুধু কি ফুটবল, ১৫-১৭ জানুয়ারি এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়েছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা। বর্শা ও ডিসকাস থ্রো হয়েছে মাঠেই। এমনকি একটি সংগঠনের কিডস অ্যাথলেটিকসের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠ। এ ছাড়া ফুটবলের ছোটখাটো অনেক আয়োজনও এই স্টেডিয়ামেই হয়। বিশেষ দিবসে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের ভেন্যুও হয় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামই।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সহকারী প্রশাসক শাহ আমিনুল হক বলেছেন, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবেই মাঠের এই হাল, ‘শীতকালে মাঠের পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন। কিন্তু মাঠ পাচ্ছে না। আমরা পরিচর্যার কাজটি ঠিকমতো করলেও বিশ্রামের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। ঘাস বড় হতেও তো তিন-চার দিন সময় লাগে। সেটা হচ্ছে না।’

মাঠের ওপর চাপ পড়ার কথা স্বীকার করছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইমও, ‘মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংস ছাড়া প্রায় সব দলই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে হোম ভেন্যু হিসেবে চেয়েছিল। কয়েকটি দলকে বুঝিয়ে ঢাকার বাইরে নিয়েছি। এক মাঠে বেশির ভাগ দলের ভেন্যু হওয়াতেই মাঠের ওপর বেশি চাপ পড়ছে।’

প্রিমিয়ার লিগে এবার ঢাকার আশপাশে টঙ্গী, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লায় ভেন্যু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ওপর চাপ কমাতে এ রকম ভেন্যু আরও বাড়ানোই হতে পারে সমাধান। তাতে বিশ্রাম পেয়ে সতেজ হয়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠ।