Thank you for trying Sticky AMP!!

লিওনেল মেসি ও নেইমার

মেসি–নেইমার পিএসজির টাকার ‘ক্রীতদাস’, এমবাপ্পে ‘অপহৃত’

লিওনেল মেসি ও নেইমার—বার্সেলোনার সমর্থকদের কাছে নস্টালজিক দুটি নাম! নেইমার ২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছাড়ার পর অনেকবারই তাঁর ক্যাম্প ন্যুতে ফেরার গুঞ্জন উঠেছে।

মেসি ক্যাম্প ন্যু ছেড়েছেন গত বছর। অনেকেরই আশা, তিনিও ফিরবেন ভালোবাসার ক্লাবটিতে। ২০১৭ সালের আগে মেসি–নেইমার এবং সঙ্গে লুইস সুয়ারেজ থাকতে বার্সার কী দিনই না কেটেছে!

ক্যারিয়ারে অন্তত শেষ দিকে তাঁদের ফিরে আসার আশা করেন বার্সার অনেক সমর্থকই। স্বপ্ন দেখেন, গাঁটের পয়সা খরচ করে বার্সাই একদিন তাঁদের ফিরিয়ে আনবে। ভুল, বার্সেলোনা পয়সা খরচ করে তাঁদের ফিরিয়ে আনবে না।

ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা জানিয়ে দিয়েছেন, মেসি–নেইমার বার্সায় ফিরতে চাইলে সেটা হতে হবে ফ্রি ট্রান্সফার। অর্থাৎ, কোনো দলবদল ফি ছাড়া ফেরার শর্ত দিয়েছেন এই সভাপতি। তবে সেখানেও একটা কিন্তু আছে।

কাতালান ক্রীড়া সংবাদমাধ্যম ‘লা এসপোর্তিউ দে কাতালুনিয়া’কে লাপোর্তা বলেছেন, ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড়কে আবারও টাকা খরচ করে ফিরিয়ে আনাটা ‘অর্থহীন’। মেসি ও নেইমার পিএসজির অর্থের ‘ক্রীতদাস’ও বলেছেন লাপোর্তা। ফরাসি ক্লাবটি কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ‘অপহরণ’ করেছে বলেও মনে করেন বার্সা সভাপতি।

পিএসজিতেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমবাপ্পে

নেইমারকে পছন্দ কি না, এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মুখের অর্গল খুলে দেন লাপোর্তা, ‘কে নেইমারকে পছন্দ করে না? সে আলাদা ঘরানার খেলোয়াড়। পিএসজির সঙ্গে তার (তিন) কয়েক বছর চুক্তি বাকি আছে। পিএসজির মতো ক্লাবে সই করা খেলোয়াড়েরা আসলে টাকার কাছে দাসত্ব মেনে নিয়েছে।’ নেইমারের বার্সায় ফেরা প্রসঙ্গে লাপোর্তার জবাব, ‘বার্সায় সে শুধু একভাবেই ফিরতে পারে—ফ্রি ট্রান্সফার। আগে ক্লাবে খেলেছে, এমন কাউকে দলবদলের টাকা পরিশোধ করে ফিরিয়ে আনাটা অর্থহীন।’

মেসিকে নিয়েও একই শর্ত বেঁধে দেন লাপোর্তা, ‘মেসি চলে গেছে। আমরা সবাই চেয়েছিলাম তার ক্যারিয়ার এখানে (বার্সায়) শেষ হোক, কিন্তু স্প্যানিশ লিগে ফেয়ার প্লে নিয়ম এবং পিএসজির প্রস্তাবের জন্য পারেনি। সে কখনো (বার্সায়) ফিরতে চাইলে ফ্রি ট্রান্সফারে আসতে হবে।’ এরপরই কথায় একটা কিন্তু রেখে দেন বার্সা সভাপতি, ‘কোচিং স্টাফকেও দেখতে হবে আমাদের প্রকল্পের সঙ্গে সে খাপ খায় কি না।’ অর্থাৎ, শুধু ফ্রি ট্রান্সফার হলেই হবে না, বার্সার ক্রীড়া প্রকল্পের সঙ্গে খাপ খায় কি না, সেটাও দেখতে হবে, তবেই বার্সায় ফিরতে পারবেন তাঁরা।

৩৪ বছর বয়সী মেসি গত বছর ফ্রি ট্রান্সফারে পিএসজিতে যোগ দেন। দুই বছরের এই চুক্তিতে মেসি চাইলে আরও এক বছর মেয়াদ বাড়াতে পারবেন। এরই মধ্যে পিএসজিতে এক মৌসুম খেলেছেন মেসি। সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, ক্যারিয়ার নিয়ে মেসি যে সিদ্ধান্তই নেন, সেটি হবে কাতার বিশ্বকাপের পর। গত মৌসুমে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেন নেইমার। ব্রাজিল তারকাও নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ শেষে ক্যারিয়ার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা

মেসি–নেইমারকে পয়সা খরচ করে বার্সা কেন ফেরাবে না, সেটাও ব্যাখ্যা করলেন লাপোর্তা, ‘নেইমারের কি ফ্রি–তে আসা উচিত? বার্সায় যারা ফিরতে চায় তাদের ফ্রি–তেই আসা উচিত। আমরা কেনার ক্ষেত্রে এমন অবস্থানে নেই যে এসব খেলোয়াড়কে জন্য দলবদলের টাকা দিতে পারব। কিংবা তহবিল থাকলেও আমরা সেটা করতাম না। এটা অযৌক্তিক হতো।’

কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়েও কথা বলেছেন লাপোর্তা। রিয়াল মাদ্রিদ ফরাসি তারকার পিছু ছুটেও পারেনি। এমবাপ্পে নিজেই রিয়ালকে তাঁর স্বপ্নের ক্লাব বললেও শেষ পর্যন্ত পিএসজির সঙ্গেই তিন বছরের নতুন চুক্তি করেছেন।

ফরাসি ক্লাবটি বিপুল পরিমাণ পারিশ্রমিক এবং সাইনিং বোনাসের লোভ দেখিয়ে ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডকে ধরে রেখেছে। নতুন চুক্তিতে এমবাপ্পেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনভুক্ত খেলোয়াড়।

লাপোর্তা মনে করেন, লোভনীয় এসব চুক্তি ইউরোপের ফুটবল বাজারের ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের প্রতি কোনো সমবেদনা দেখাননি বার্সা সভাপতি, ‘এসব (চুক্তি) বাজারকে বিকৃত করে। খেলোয়াড়েরা টাকার কাছে অপহৃত হয়। রাষ্ট্র পেছনে থাকলে একটা ক্লাবের এমন প্রভাবই দেখা যায়। কাজটা হয়েছে ইউরোপিয়ান কমিউনিটির সব আদর্শের বিপরীতে।’