Thank you for trying Sticky AMP!!

সাকিবের মুখে কোনো কথা নেই

সাকিব আল হাসান

নানা গুঞ্জন, ফিসফাস, প্রশ্ন। শাস্তির বিরুদ্ধে কি আপিল করবেন সাকিব আল হাসান? কিংবা কোনো প্রতিক্রিয়া? কারও কারও মুখে এ-ও শোনা গেল, দু-এক দিনের মধ্যে নাকি সাকিব সস্ত্রীক যুক্তরাষ্ট্র চলে যাবেন! যদি যান, যাওয়ার আগে কি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলবেন ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ এই অলরাউন্ডার?
মিরপুরের বিসিবি কার্যালয় থেকে শুরু করে বনানী ডিওএইচএসে সাকিবের বাসার সামনে—সবখানেই এসব প্রশ্ন। প্রশ্নগুলোর উত্তর একমাত্র যিনি দিতে পারবেন, সেই সাকিব নিশ্চুপ। তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের সামনে ভিড় করা সংবাদকর্মীরা ইন্টারকমে যোগাযোগ করেছিলেন সাকিবের ফ্ল্যাটে। সেখান থেকে জানানো হলো সাকিব কথা বলবেন না। তবে দু-এক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাওয়ার খবরটি গুজব বলেই জানিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র।
কাল রাতে মুঠোফোনে কথা হলে অবশ্য সাকিব এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করতে রাজি হলেন না, ‘এখন আমি কোনো বিষয়েই কোনো কথা বলব না।’
সরাসরি কথা না বললেও ভক্ত-সমর্থকদের উদ্দেশে কাল ফেসবুক ও টুইটারে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন সাকিব। তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় ভক্তরা, রমজান মোবারক। অতীতে, এমনকি এখনো আপনাদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা ও সমর্থন পাচ্ছি, তাতে আমি অভিভূত। আমি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে জানাচ্ছি, আজ আমি যা, সবই আপনাদের অফুরান ভালোবাসা, সমর্থন আর আমাদের পতাকার জন্য। এই ভালোবাসা আর আবেগের কথা মনে রেখেই আমি খেলি। দেশ আমার কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য লড়াই করতে আমি সর্বদা প্রস্তুত। আশা করি, আপনারা সব সময়ই আমাকে আপনাদের হৃদয়ে ঠাঁই দেবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন। সবার প্রতি ভালোবাসা রইল।’
লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে পরশু অনুশীলনে যোগ দিলেও কাল আর মিরপুরে আসেননি সাকিব। অন্যরা অনুশীলন করেছেন। অনুশীলনের আগে সাকিবের শাস্তি নিয়ে কথা বলতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম

সাকিব যেমন ভক্তদের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দিতে ফেসবুক-টুইটারের আশ্রয় নিয়েছেন, ভক্ত-সমর্থকেরাও তেমনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানাচ্ছেন প্রিয় খেলোয়াড়ের প্রতি তাঁদের সমর্থন। অপরাধের তুলনায় সাকিবের শাস্তিটা বেশি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। সমালোচনা করেছেন বিসিবির, ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আকরাম খানেরও। আকরাম কেন সাকিবকে সিপিএলে খেলতে যাওয়ার মৌখিক অনুমতি দিলেন, কেনই-বা পিঠটান দিয়ে সে অবস্থান থেকে সরে এলেন, সেই প্রশ্ন অনেকের।

শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, সাকিবের জন্য আজ রাজপথেও নামতে যাচ্ছে সমর্থকদের একটা দল। শাহবাগে সাকিবের শাস্তির প্রতিবাদ জানিয়ে তারা মানববন্ধন করবে বলে জানা গেছে। আবার উল্টোটাও আছে। ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে শোধরাতে সাকিবের এমন শাস্তি প্রয়োজন ছিল বলেও অনেকে মত প্রকাশ করেছেন ফেসবুকে।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম দাঁড়িয়েছেন সাকিবের পাশে। আমিনুল তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার দৃষ্টিতে এটা ব্যবস্থাপনার একটা বাজে দৃষ্টান্ত। সাকিবের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ পরিষ্কার করেনি বিসিবি। অবশ্যই এটা অনেক দিন ধরে চলে আসছে। কিন্তু যখন এটা ঘটল তখন কেন তার সমাধান করা হয়নি? মনে হচ্ছে সব অভিযোগের জবাবেই এই এক শাস্তি। এটা অন্যায়।’ বর্তমানে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের ক্রিকেট উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আমিনুল বিসিবির সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আমরা জানি তার (সাকিবের) মৌখিক এনওসি ছিল। তার পরও সে বিসিবির নির্দেশ মেনে লন্ডন থেকে ফিরে এসেছে। এতেই পরিষ্কার যে বিসিবিতে সমন্বয়ের সমস্যা আছে, আছে ব্যবস্থাপনার অপব্যবহার। তাদের উচিত সেগুলোর জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া।’ স্ট্যাটাসের শেষে ২০১৫ বিশ্বকাপের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আমিনুল বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘২০১৫ বিশ্বকাপের জন্য কি প্রস্তুতি...!’

সব ধরনের ক্রিকেট থেকে সাকিবের ছয় মাসের বহিষ্কারাদেশ শেষ হবে আগামী ৮ জানুয়ারি। আর ২০১৫ বিশ্বকাপ শুরু হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার মানে বিশ্বকাপের মাত্র এক মাস আগে ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব এবং প্রায় কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই নামতে হবে বিশ্বকাপ খেলতে! এর আগে আছে কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে সেগুলোতে খেলতে পারবেন না সাকিব।
তবে সাকিব শাস্তি কমানোর আবেদন করলে বদলে যেতে পারে পরিস্থিতি। সে ক্ষেত্রে কমে আসতে পারে নিষেধাজ্ঞার সময়টা। সাকিব এ রকম একটা আবেদন করুক, ভেতরে ভেতরে এটা নাকি চায় বিসিবিও।