Thank you for trying Sticky AMP!!

বার্সাকে হারিয়ে জয়ের হাসি হেসেছে আতলেতিকোই।

স্টেগেনের ভুলে হেরে গেল বার্সেলোনা

আধুনিক গোলরক্ষকদের কাজ শুধু শট আটকানোতেই সীমাবদ্ধ থাকে না। তাঁদের ডি-বক্সের মধ্যে বাড়তি একজন ডিফেন্ডারের কাজও করতে হয়। যে ডিফেন্ডার একদম পেছন থেকে আক্রমণ গড়ে দিতে পারে। নিখুঁত লং বল, শর্ট পাস দিতে পারে। প্রয়োজনে ডি–বক্স থেকে বেরিয়ে এসে দলকে বিপদমুক্ত করতে পারে। আধুনিক ফুটবলে এমন গোলরক্ষকদের একটা গালভরা নামও আছে—‘সুইপার কিপার’। বায়ার্ন মিউনিখের ম্যানুয়েল নয়্যার থেকে শুরু করে লিভারপুলের অ্যালিসন, বার্সেলোনার টের স্টেগেন, আর্সেনালের বার্নড লেনো, টটেনহামের উগো লরিস, ম্যানচেস্টার সিটির এদেরসন—সবাই কমবেশি ‘সুইপার কিপার’–এর ভূমিকা পালন করেন।

এ ভূমিকায় খেললে দল সুবিধাও যেমন বেশি পায়, ভুল করলে দিতেও হয় চড়া মাশুল। ওই যে, ইংরেজিতে একটা কথা আছে না ‘হাই রিস্ক, হাই রিওয়ার্ড’ সুইপার কিপারদের কাজটাও ঠিক তেমন। সুইপার কিপাররা নিজেদের কাজে একটু ভুল করে ফেললে যে কত বড় মাশুল দিতে হয়, তার প্রমাণ গত রাতে পেল বার্সেলোনা। দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো জার্মান গোলরক্ষক টের স্টেগেন বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন আতলেতিকোর বিপক্ষে। আতলেতিকোই বা ছেড়ে কথা কইবে কেন? সে ভুল থেকেই গোল পেয়েছে তারা। আর তাতেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে দিয়েগো সিমিওনের দল। এই জয়ের ফলে মাত্র আট ম্যাচেই ২০ পয়েন্ট হয়ে গেছে তাদের, চলে এসেছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। যদিও শীর্ষে থাকা রিয়াল সোসিয়েদাদের চেয়ে একটা ম্যাচ কম খেলেছে তারা। হাতে থাকা ম্যাচ জিতলেই এককভাবে শীর্ষে থাকবে আতলেতিকো।

ঠিক এভাবেই টের স্টেগেনকে বোকা বানিয়েছেন কারাসকো।

ওদিকে বার্সেলোনার অবস্থা? তথৈবচ, ছন্নছাড়া। ম্যাচ নিয়মিত কীভাবে জিতে আসতে হয়, সেই ফর্মুলাটাই যেন বের করতে পারছেন না নতুন কোচ রোনাল্ড কোমান। ম্যাচ শেষে শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের পানে চেয়ে আছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি, মোটামুটি সব ম্যাচের পরই যেন এই দৃশ্যটা দেখা যাচ্ছে। অথচ নিজেদের সুযোগগুলো ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারলে আতলেতিকো নয়, জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ত বার্সাই। তিন মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে স্ট্রাইকে খেলা আতোয়ান গ্রিজমানের উদ্দেশ্যে দুর্দান্ত এক পাস দিয়েছিলেন তাঁর স্বদেশি উসমান দেম্বেলে। বাজেভাবে মিস করেন গ্রিজমান। এর দুই মিনিট পর স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সল নিগেজের বাঁ পায়ের দুরন্ত শট আরও দুর্দান্তভাবে আটকান টের স্টেগেন। গোটা ম্যাচেই দেম্বেলেকে সামলাতে কষ্ট হয়েছে আতলেতিকোর। কোকে তো তাঁকে একবার আটকাতে গিয়ে গড়বড়ই করে ফেললেন, দেখলেন হলুদ কার্ড। ১৪ মিনিটে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার আনহেল কোরেয়ার পাস থেকে শট নিয়ে সরাসরি পোস্টে লাগান স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মার্কোস ইয়োরেন্তে। ম্যাচের শুরু থেকে মেসি সেভাবে আতলেতিকোর রক্ষণভাগকে যন্ত্রণা দিতে পারেননি। ৩২ মিনিটে অবশেষে তাঁর এক শট আটকে দেন ইয়ান ওবলাক।

প্রথমার্ধের শেষে সেই ভুল। বার্সার রক্ষণভাগ থেকে পিকের একটা ভুলে বল চলে যায় আতলেতিকোর খেলোয়াড়ের কাছে। সেখান থেকে বল দেওয়া হয় আক্রমণভাগে থাকা বেলজিয়ান উইঙ্গার ইয়ানিক কারাসকোর দিকে লক্ষ্য করে। কারাসকো মোটামুটি ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেটা দেখেই কি না, টের স্টেগেনের মধ্যে ‘সুইপার কিপার’ সত্তা জেগে উঠল। কারাসকোর পায়ে বল আসার আগেই যেন ছোঁ মেরে নিতে পারেন, সে জন্য বক্স ছেড়ে এগিয়ে এলেন অনেক দূর। লাভ হলো না। উল্টো কারাসকোই নাটমেগ করে স্টেগেনকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন গোলের দিকে, এক শটে এগিয়ে দিলেন দলকে।

গোটা ম্যাচে মেসি মোটামুটি বোতলবন্দীই ছিলেন।

পরে লংলে, মেসির বেশ কিছু শট আটকে দিয়েছেন ওবলাক। পিয়ানিচের একটা শট লক্ষ্যভ্রষ্টও হয়েছে। ৮১ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে মেসি সমতায় ফেরাবেন দলকে, এমনটা মনে করা হলেও, হয়নি। শেষমেশ হারের গ্লানি নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বার্সেলোনাকে।

এই পরাজয়ে আট ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দশে বার্সেলোনা।