Thank you for trying Sticky AMP!!

'নীলকণ্ঠ নয়, আকাতাই থাকতে চাই'

ইউসুমি আকাতা

জন্ম জাপানে। বাবা ভারতীয়, সেই সূত্রে নিয়েছেন ভারতীয় নাগরিকত্ব। আগামীকাল কাঠমান্ডুতে শুরু সাফ ফুটবলে ভারতের বড় ভরসাও ইউসুমি আকাতা। কাল অনুশীলনের পর নিজের জীবন ও ক্যারিয়ারের পূর্বাপর নিয়ে বললেন এই মিডফিল্ডার
 শুনেছি, আপনার জন্ম জাপানে। আপনি এত দিন জাপানি ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় হয়ে গেলেন।
ইউসুমি আকাতা: আমার বাবা ভারতীয়, কিন্তু মা জাপানি। বহু বছর ধরে বাবা জাপানে আছেন। আমিও এত দিন একজন জাপানি হিসেবেই বেড়ে উঠেছি। কিন্তু ভারতের জাতীয় দলের খেলার স্বপ্নপূরণ করতেই আসলে আমি ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছি।
 আপনি জে লিগের দ্বিতীয় স্তরে খেলেছেন। জাপানে ক্যারিয়ার গড়ার লোভনীয় হাতছানি ছেড়ে ভারতে আসার টানটা বড় হয়ে গেল কেন?
আকাতা: দেখুন, সব ফুটবলারেরই স্বপ্ন থাকে একদিন জাতীয় দলে খেলার। জাপানের জাতীয় দলে খেলা আমার পক্ষে সম্ভব মনে হচ্ছিল না। ২৭-২৮ বছর বয়স হয়ে গেছে। ভাবলাম, ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ নিতে পারি কি না। তাই বছর ছয়েক আগে আমি ইস্ট বেঙ্গল দিয়ে ভারতীয় ঘরোয়া ফুটবলে খেলা শুরু করি। সেখানে বছর তিনেক খেলে পুনে এফসিতে এসেছি, এই দলটি গতবারের আই লিগের রানার্সআপ। এভাবে খেলতে খেলতেই কয়েক মাস আগে ডাক পেয়ে গেলাম ভারতীয় দলে।
 বাবা ভারতীয় হওয়ার পরও ভারতের নাগরিকত্ব ছিল না?
আকাতা: ভারতের নিয়ম হচ্ছে, দ্বৈত নাগরিক হওয়া যাবে না। আমাকে একটা বেছে নিতে বলা হয়েছে। তাই ভারতীয় নাগরিকত্বই বেছে নিলাম। এ জন্য অবশ্য আমাকে ভারতীয় মেয়ে বিয়ে করতে হয়েছে। আমার ভারতীয় নাম হয়েছে নীলকণ্ঠ। তবে নীলকণ্ঠ নয়, আমি আকাতা নামেই পরিচিত থাকতে চাই।
 আপনাকে দেখতে জাপানি সামুরাইদের মতো। লম্বা চুল...
আকাতা: (হাসি) এটা আসলে শখ করে রাখা। আমাকে দেখে কি সত্যিই সামুরাই লাগছে (আবার হাসি)?
 মেহতাবের পর ভারতীয় দলের মাঝমাঠের প্রাণ বলা হচ্ছে আপনাকে। নিজেকে আসলে কোথায় দেখতে চান?
আকাতা: আমি এই অঞ্চলের একজন সেরা খেলোয়াড় হতে চাই। অনেকেই বলেন, আমার গতি ভালো। মাঝমাঠ থেকে উইংয়ে দ্রুত চলে যেতে পারি। আমি এখন নিজেকে আর শাণিত করছি। এ বছরের গোড়ায় ফিলিস্তিনের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে ভারতীয় দলে আমার অভিষেক। এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে তিনটি ও তিনটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছি তেরঙা জার্সি পরে। আরও খেলে যাওয়াই মূল লক্ষ্য।
 আপনার পথ ধরে অনেক জাপানি ফুটবলার এখন ভারতে ঘরোয়া লিগে খেলছে? তাহলে এ ক্ষেত্রে আপনি পথপ্রদর্শক...
আকাতা: জাপানের শীর্ষ লিগে খেলার সুযোগ অনেকেই পায় না। তারা চলে আসছে ভারতে। সংখ্যাটা এখন জনা পনেরো হবে। এটা ওই খেলোয়াড়দের পেশাদার ফুটবলে নাম লেখানোর বিরাট একটা মঞ্চ হয়ে উঠেছে।
 আপনি তো সামাজিক কাজেও যুক্ত। উত্তরাখন্ডে সাম্প্রতিক বন্যায় হতাহতদের সাহায্যে কী করছেন?
আকাতা: কয়েক বছর আগে জাপানে সুনামি হয়েছিল জানেন, সে সময় বহু ভারতীয়র সঙ্গে যোগাযোগ করে আমি টাকা তুলেছি আর্তমানবতার সেবায়। ভারতের উত্তরাখন্ডের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদেরও আর্থিক সহায়তা করতে শিগগিরই কাজে নামব।

 বাংলাদেশের ফুটবল সম্পর্কে জানেন?
আকাতা: না, বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। কোনো ম্যাচ দেখা হয়নি। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে প্রথম দেখব।
 এবারের সাফ টুর্নামেন্টে ভারতকেই সবাই ফেবারিট বলছে। এটা কি ভারতের জন্য চাপ হয়ে যাচ্ছে?
আকাতা: চাপ তো অবশ্যই। তবে চাপ সামলে আমাদের উজ্জীবিত থাকতে হবে। খেলাতেই শতভাগ মনোযোগ রেখে আমরা সাফ জিততে চাই।