Thank you for trying Sticky AMP!!

অথচ লিটন ছিলেন 'নার্ভাস'!

বিশ্বকাপে অভিষিক্ত মাচে ৯৪ রানে অপরাজিত লিটন দাস। ছবি: শামসুল হক
>মোহাম্মদ মিঠুনের পরিবর্তে গতকালই বিশ্বকাপে প্রথম মাঠে নেমেছিলেন লিটন দাস। এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে অভিষিক্ত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে মানসিক দিক দিয়ে চাপে থাকার কথা তাঁর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে বড় অবদান রাখলেও ম্যাচ শেষে সে চাপের কথা অবলীলায় স্বীকার করেছেন লিটন।

অবশেষে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছেন লিটন দাস। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলতে নেমেই মুগ্ধ করেছেন। তাঁকে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকতে দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মজা-রসিকতা হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেন আরও কিছু রান করল না! কিংবা সাকিব আল হাসান আরেকটু কম রান কেন করলেন না—তাহলেই তো তিন অঙ্ক ছোঁয়া হতো লিটনেরও!

সাকিব দুর্দান্ত ছন্দে আছেন, কালও অসাধারণ ব্যাটিং করে অপরাজিত থেকেছেন ১২৪ রানে। লিটনের ইনিংসটাও কম মুগ্ধতা ছড়ানো নয়। তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে, যতক্ষণ ২২ গজে থাকবেন, ইতিবাচক ক্রিকেটে প্রতিপক্ষের মনোবল গুঁড়িয়ে এগোতে থাকবেন। কাল টন্টনে সাকিবের ইনিংসটা যদি ধ্রুপদি সেতারবাদন হয়, লিটনের ইনিংসটা হচ্ছে গিটারের ঝংকার। আশ্চর্য সব সাহসী শট এমন নির্দ্বিধায় খেলে গেলেন, কে বলবে এটাই ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাঁর প্রথম ম্যাচ। শরীর বরাবর ধেয়ে আসা শর্ট বলে পুল মারছেন, কখনো কিপারের মাথার ওপর দিয়ে উদ্ভাবনী শটে ছক্কা মারছেন—একজন ব্যাটসম্যান কতটা আত্মবিশ্বাসী হলে এত অবলীলায় চালাতে পারেন ব্যাট!

অথচ ক্যারিবীয় বধের অন্যতম নায়ক লিটন ছিলেন নার্ভাস। ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে জানিয়েছেন ইনিংসের শুরুতে ভীষণ স্নায়ুচাপে ভুগেছেন, ‘ব্যাটিংয়ে যাওয়ার সময় নার্ভাস ছিলাম। এ ধরনের ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত নই। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট খেলিয়েছে, এটা আমার জন্য বড় সুযোগ। একটু নার্ভাস ছিলাম। সাকিব ভাই অনেক সহায়তা করেছেন। অনেক কথা বলেছেন, যেটায় আমার স্নায়ুচাপ সরে গেছে। ’

স্নায়ুচাপ সরে যেতে একটু সময় লেগেছে লিটনের। শুরুতে তাঁর মনে হয়েছে, কিছুই অনুকূলে নেই। ৩০ রান করার পর তাঁর মনে হয়েছে, এবার সহজে এগোনো যায়। টন্টনের উইকেট তাঁর কাছে তখন ‘নিজের ঘর’ মনে হয়েছে। তবে সাকিবের কিছু কথা লিটনকে ভীষণ সহায়তা করেছে স্বচ্ছন্দ হতে, ‘তিনি বলছিলেন উইকেট অনেক সহজ, কিছুক্ষণ খেললে খেলাটা সহজ হয়ে যাবে। জোর করে কোনো শট খেলার দরকার নেই। স্বাভাবিকভাবে ব্যাটিং করতে বলেছিলেন। তিনি যখন বাউন্ডারি মারছিলেন, সহজ হতে সেটা আমাকে সহায়তা করেছে। এটা দেখে চাপমুক্ত হয়ে গেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক রান করেছি। তবে এমন ফিনিশিং কখনো করতে পারিনি। এত বড় মঞ্চে যে ফিনিশ করতে পেরেছি, এটা আমার অনেক বড় পাওয়া। ’

শুধু সাকিবই লিটনকে পরামর্শ দেননি। কখনো কখনো তাঁর ‘সিনিয়র পার্টনারকে’ও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একবার যেমন বলেছেন, ‘এমন সুযোগ সব সময় আসে না। আপনি অপরাজিত থাকলে রানও বাড়বে। খেলাটা সহজেই সামলানো যাবে।’

তবে লিটনের দুর্দান্ত খেলায় ভীষণ খুশি সাকিব। সংবাদ সম্মেলনে তো বলেছেনই। এ ছাড়া যখন উইকেটে ছিলেন ফিফটি করা এবং জেতার পর লিটনকে সাকিব পরম স্নেহে জড়িয়ে ধরেছেন। লিটন বলছেন, সাকিব জানতেন, প্রথমবারের মতো তাঁর জুনিয়র সতীর্থ বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে নেমেছে। তাকে সাহস দিয়ে এগিয়ে নেওয়াটা যেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। অবশ্য যে ব্যাটসম্যান দলকে জেতানোর দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতে পারেন, তরুণ সতীর্থকে ‘গাইড’ করে এগিয়ে নেওয়া আর কঠিন কী!