Thank you for trying Sticky AMP!!

আফগানিস্তানকে হারাতে পারেনি ভারত

আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের উল্লাসটা তো এমনই হবে। ছবি: এএফপি

শেষ ওভারের রোমাঞ্চ বুঝি একেই বলে...।

জিততে হলে ভারতের ৬ বলে দরকার ৭ রান, হাতে ১ উইকেট। আফগানিস্তানের জন্য সহজ হিসাব—ভারত ৭ রান তোলার আগেই জাদেজা কিংবা খলিল আহমেদের উইকেট নিতে পারলেই হলো। প্রথম বলে রানের সুযোগ থাকলেও নেননি জাদেজা। নিজে ক্রিজে থেকে যদি কিছু করতে পারেন—এই আশায়। দ্বিতীয় বলে রশিদ খানকে উড়িয়ে মারলেন। আম্পায়ার চারের সিগন্যাল দিলেও সেটা পছন্দ হয়নি রোহতি শর্মাদের। টিভি পর্দায় তাঁদের প্রতিক্রিয়া দেখে সেটাই মনে হলো। পরের বলেই ১ রান নিয়ে জায়গা বদল করলেন জাদেজা। স্ট্রাইকে খলিল আহমেদ। ভারতীয়দের বুকের ধুকপুকানি তখন চরমে। পড়িমরি করে ১ রান নিলেন খলিল। ম্যাচ টাই। ভারতীয় সমর্থকেরাও স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। ১ বল হাতে রেখেই জিততে চাইলেন জাদেজা। রশিদ খানের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে নাজিবুল্লাহর তালুবন্দী হলেন। হাতাশার কালো মেঘে ঢেকে গেল ভারতীয় শিবির। জয় না পেয়েও জয়ের উল্লাসে মেতে উঠলেন আফগানিস্তানের খেলোয়াড়–সমর্থকেরা। আফগানদের কাছে যে টাই জয়ের সমান, বিশেষ কিছু। আর ভারতের জন্য এটা তো একরকমের পরাজয়ই বটে!

এশিয়া কাপে এই ম্যাচর জয়–পরাজয় কিংবা টাইয়ে ভারতের কিছু আসে–যায় না (এশিয়া কাপের হিসাবে)। তবে আফগানিস্তানের জন্য এটা অনেক কিছু। সে জন্যই কিনা নিজেদের নিয়মিত খেলোয়াড়দের বেশির ভাগকেই বিশ্রামে রেখে খেলতে নেমেছিল ‘টিম ইন্ডিয়া’। এই ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন ভারতের ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ছিলেন না ভুবনেশ্বর-বুমরা-চাহালও।


ম্যাচে ছিলেন না অধিনায়ক রোহিত শর্মা। অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন ধোনি। অধিনায়ক হিসেবে এটি তাঁর ২০০তম ম্যাচ ছিল। এই বিশেষ দিনে ধোনি কি এমন রোমাঞ্চকর ম্যাচটি মনে রাখবেন? প্রশ্নটা রয়েই গেল।

আফগানদের ২৫২ রানের জবাবে রাহুল ও রায়ডুর ওপেনিং জুটিতে ১১০ রান ভারতের। কিন্তু দুজনই ফিফটি করে আউট হওয়ার পর কার্তিক (৪৪) ছাড়া কেউই দাঁড়াতে পারেননি। ২০৪ থেকে ২০৫—১ রানে পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেট হারায় ভারত, দুই রানআউটের ‘সৌজন্যে’ ২৪৫ রানে হারায় নবম উইকেটও।

আফগানিস্তানের হয়ে অদ্ভুত এক ইনিংসই খেললেন শেহজাদ। সতীর্থ ব্যাটসম্যানরা যেখানে স্বচ্ছন্দে এগোতে পারেননি, আফগান ওপেনার শুরু থেকেই পেটাতে শুরু করেছেন ভারতীয় বোলারদের। আফগানিস্তানের স্কোর যখন ৫২, শেহজাদের রানই ৪৫! শেহজাদ ফিফটি পেলেন ভাগ্যের ছোঁয়ায়। ৪৯ রানে দাঁড়ানো আফগান ওপেনার ৯ম ওভারের পঞ্চম বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলন, হাতে জমাতে পারেননি অম্বাতি রাইডু। শেহজাদ সেঞ্চুরিও পেলেন ভাগ্যের ছোঁয়ায়। ২১তম ওভারে খলিল আহমেদের বলে কটবিহাইন্ডের আউট দিয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। ৯৩ রানে দাঁড়িয়ে থাকা শেহজাদ রিভিউ নিলেন। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল বলটা তাঁর ব্যাটে নয় বাহুতে লেগেছে। ব্যস, আর তাঁকে পায় কে! ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম তিন ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি পাওয়া শেহজাদ পঞ্চমবারের তিন অঙ্ক ছুঁলেন, সেটি প্রিয় খেলোয়াড় ধোনিকে সাক্ষী রেখে!

শেহজাদ যখন সেঞ্চুরি করেছেন, আফগানিস্তানের রান তখন ৪ উইকেটে ১৩১। আর এতেই রেকর্ড বইয়ে নাম উঠে গেছে তাঁর। ২০০৫ সালে কানপুরে ভারতের বিপক্ষেই শহীদ আফ্রিদি যখন সেঞ্চুরি করেন তখন পাকিস্তানের স্কোর ছিল ১৩১। দলীয় স্কোরের ৭৬ শতাংশ রানই তাঁর। ১৩ বছর পর আফ্রিদির রেকর্ড ছুঁলেন শেহজাদ। ৩৮ ওভারে কুলদীপ যাদবের বলে লং অফে দিনেশ কার্তিকের ক্যাচ হওয়ার আগে শেহজাদের রান ১১৬ বলে ১২৪। মিডল অর্ডারে ব্যর্থতা আর শেহজাদ ফিরে যাওয়ার পরও আফগানিস্তান লড়াইয়ের স্কোর পেয়েছে সাতে নামা মোহাম্মদ নবীর ৫৬ বলে ৬৪ রানের সৌজন্যে।