Thank you for trying Sticky AMP!!

শুরুর মতো মাহমুদউল্লাহর শেষটাও হয়েছে দুর্দান্তই

আলো ছড়িয়ে শুরু, মাহমুদউল্লাহর শেষটাও আলো ছড়িয়েই

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবেই টেস্ট ক্রিকেটে অতীত হয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। অনেকটা অভিমান থেকেই গত জুলাই মাসে জিম্বাবুয়ে সফরে হারারে টেস্টের মাঝপথে সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আর টেস্ট খেলবেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে তখনো কিছু বলেননি। কিন্তু ‘অনানুষ্ঠানিক’ বিদায় তখনই হয়ে গিয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। টেস্টের মধ্যেই সতীর্থরা গার্ড অব অনার দিয়ে তাঁকে বিদায় জানিয়েছিলেন।

মাহমুদউল্লাহ আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষাতেই হয়তো চার মাস আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর ঘোষণা নিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছিলেন। কাল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর তিনি নিজের প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন। বলেন, ১২ বছর ধরে টেস্ট খেলার পর ‘বিদায়’ বলাটা সব সময়ই কঠিন। সেই কঠিন কাজই তিনি করেছেন, কারণ সব সময় মাথা উঁচু করেই পথ চলতে চান তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটাও তিনি করেছিলেন মাথা উঁচু করে, শেষটাও করেছেন সেভাবেই।

নিজের শেষ টেস্টে মাহমুদউল্লাহ খেলেছিলেন ১৫০ রানের ইনিংস

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও মাহমুদউল্লাহকে টেস্ট অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় আরও দুই বছর। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে কিংস্টন টেস্টে প্রথম খেলেন তিনি। অভিষেক টেস্টেই দেশের জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। দুই ইনিংসে নেন ৮ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেন ৫১ রানে। তাঁর অসাধারণ বোলিংয়েই বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। সে টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবাল অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করলেও মাহমুদউল্লাহর বোলিং পারফরম্যান্স দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

নিজের শেষ টেস্টেও (৫০তম) মাহমুদউল্লাহ ব্যাট হাতে ছিলেন অসাধারণ। গত জুলাইয়ে হারারে টেস্টে দলের বিপদের মুখে তিনি খেলেছেন ১৫০ রানের এক ইনিংস, যে ইনিংসে বাংলাদেশ বড় স্কোর গড়ে জিম্বাবুয়েকে হারায় বড় ব্যবধানে। মাহমুদউল্লাহও বৃত্ত পূরণ করেন। শেষটা করেন ম্যাচের সেরা হয়েই।

টেস্টে দেশেক নেতৃত্বও দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ

৫০ টেস্ট খেলেই মাহমুদউল্লাহ শেষ করে দিলেন সাদা পোশাকে নিজের ক্যারিয়ার। ব্যাট হাতে তাঁর পারফরম্যান্স মন্দ নয়। ৩৩.৪৯ গড়ে ২৯১৪ রান তাঁর। ৫টি সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে ১৬টি ফিফটি। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন। এরপর দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি পেতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় আরও আট বছর। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনি পান নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি।

তবে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম সেঞ্চুরি এসেছে খুব অল্প সময়ে। তৃতীয় সেঞ্চুরিটি তিনি পান দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দুই ইনিংস পরই। ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন ১৩৬ রানের ইনিংস। চতুর্থটি আসে এক ইনিংস বিরতি দিয়ে—এটিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, প্রতিপক্ষের মাঠে। তাঁর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির মঞ্চ হ্যামিল্টনে। ১৪৬ রানের ইনিংস ছিল সেটি। শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি শেষ টেস্টে—হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৫০। এর আগে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। সেঞ্চুরি করে কী অসাধারণভাবেই না ফিরেছিলেন তিনি!

কিন্তু ওই যে মাথা উঁচু করেই এগিয়ে যতে চান, মাথা উঁচু করেই টেস্টকে বিদায় বললেন মাহমুদউল্লাহ।