Thank you for trying Sticky AMP!!

একদিন আমরা ট্রফি জিতবই!

রায়না আউট হওয়ার পর সাকিবের হাস্যোজ্জ্বল মুখ। ম্যাচ শেষে অবশ্য হতাশা নিয়েই ফিরেছেন অধিনায়ক। ছবি: শামসুল হক

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান একজন ব্যতিক্রম মানুষ। প্রচণ্ড চাপেও ভেঙে পড়েন না। অন্যরা যেখানে আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত নেন, সেখানে সাকিব সব সময় ভেবেচিন্তে ঠান্ডা মাথাতেই সবকিছু করেন। আবেগ যে তাঁকে ভাসায় না, তা নয়। কিন্তু সাকিব সেই মানুষদের একজন, কান্না লুকোতে জানেন। শুধু একবারই তাঁর কান্না দেখা গেছে। ২০১২-র ফাইনালে সতীর্থদের কান্নায় বুক পেতে দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজেই আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি।

আজ সাকিব কি আড়ালে কেঁদেছেন? কাঁদলেও স্বীকার করবেন না। ম্যাচ শেষের পুরস্কার বিতরণী। শেষ বলটায় অন্য কিছু হলে এই মঞ্চে আলো কেড়ে নিত তাঁকেই। সাকিবের হাতেই উঠত চকচকে ট্রফি। কিন্তু বিনোদনের জন্য যার আয়োজন, সেই খেলা কখনো কখনো বড় নির্মমও। বিষণ্নতার আঁধারে ডুবে থাকা সাকিব এলেন। মাইক্রোফোনের সামনে খসখসে এক কণ্ঠস্বর নিয়ে। মুখ খুলতেই টের পাওয়া গেল কাঁপছে গলা। কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। বাক্যের খেই হারিয়ে ফেলছেন কখনো কখনো।

গলা কাঁপতেই পারে। এমন একটা ম্যাচের পর এটা না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। এ ম্যাচ জিততে পারত যে–কেউ। সে ম্যাচে শেষ বলে কার্তিকের দুর্দান্ত এক ছক্কায় আরেকটি ফাইনাল থেকে হতাশা নিয়ে ফিরল বাংলাদেশ, ‘একটা ফাইনাল থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়া যায় না। আমরা দুর্দান্ত খেলেছি, যে–কেউ ম্যাচটা জিততে পারত। কিন্তু ভারত স্নায়ুর চাপটা সামলেছে ভালোভাবে।’

এমন ম্যাচে স্নায়ুর চাপ পেয়ে বসেছিল সবাইকেই। তাই একাদশে না থাকা তাসকিন, আবু হায়দারের চোখেও জল নামে এ হারে। শেষ ওভারে ভয়ংকর চাপ নিয়ে বল করতে আসা অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকারও উইকেটের মাঝখানে শুয়ে পড়েন। ২০তম ওভারে বল করার ওই চাপটা নিতে হয়েছিল এর আগেই মোস্তাফিজ-রুবেলের কোটা পূরণ হয়ে যাওয়াতেই।

সাকিব অবশ্য এমন সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই মানছেন, ‘আমরা আমাদের সেরা বোলারকেই ১৮ ও ১৯তম ওভারে আনতে চেয়েছি। রুবেল যদি ওই ওভারে ১৫ রান দিত, তাহলেও আমরা ব্যাপারটা সামলে নিতে পারতাম। সে কিন্তু বোলিং লেংথে খুব ভুল করেনি, দীনেশ কার্তিককে কৃতিত্ব দিতে হচ্ছে। সে এল আর প্রথম বল থেকে ছক্কা মারতে শুরু করল। আমরা জানতাম, ১৬৬ রান রক্ষা করা কঠিন। কিন্তু আমরা আশাবাদী ছিলাম। সবাই তাদের সেরা দিয়েছে, শতভাগ।’

১৯তম ওভারে রুবেল ২২ রান দিয়েছেন—এটাই হয়তো মানুষ মনে রাখবে। কিন্তু আগের তিন ওভারে যে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন এই রুবেলই। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন দলের সবাই। সাকিব তাই বিশ্বাস রাখেন, বারবার এমন হতাশা নিয়ে ফিরবে না বাংলাদেশ, একদিন ট্রফি নিয়ে উল্লাস করবেই বাংলাদেশ, ‘হারতে খারাপ লাগে, কিন্তু আমরা ভালো করেছি। আমরা এ থেকেই ইতিবাচক অনেক কিছু শিখতে পারি। একদিন আমরাই জিতব।’