Thank you for trying Sticky AMP!!

এখন কী হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের?

ক্রিকেটাররা কবে খেলায় ফিরবেন কালও জানা যায়নি। ছবি: প্রথম আলো

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অনুশীলনের সময় জানিয়েছেন জাতীয় লিগের কোনো কোনো দলের ম্যানেজার। খেলোয়াড়েরা সূচিটা দেখেছেন। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। ধর্মঘট ডেকেছেন, অনুশীলনের সময় দেখে আর কী হবে! থমকে গেছে দেশের ক্রিকেট, এখন তাহলে কী হবে?

পরশু ক্রিকেটাররা জানিয়েছেন তাঁদের ১১ দফা দাবি। দাবি না মানা পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন তাঁরা। এ ঘটনার পর কাল জরুরি বৈঠকে বসে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ। সভা শেষে প্রায় ১ ঘণ্টা সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। কিন্তু তাঁর কথায় সমাধান আসেনি। বিসিবি সভাপতি অবশ্য বলছেন, ‘আমাদের দরজা খোলা আছে। তারা ফোন ধরছে না, কেটে দিচ্ছে। এখানে কী দাবি আছে যেটা আমাদের মানতে পারি না? তারা আমাদের কাছে আসে না কেন?’

বিসিবি বলছে, আগে তাদের সঙ্গে বসতে হবে। কথা বলতে হবে। এরপর ক্রিকেটারদের দাবিদাওয়া পূরণের বিষয়টি আসবে। বোর্ডের ডাকে সাড়া দিয়ে খেলোয়াড়েরা কি বসবেন বিসিবির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে? কাল রাত পর্যন্ত এ প্রশ্নের উত্তর জানা যায়নি। শুধু এতটুকু জানা গেল, বিসিবি সভাপতি কী বলেন, তাঁরা সেটি শোনার অপেক্ষায় ছিলেন। দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল যে সব কথা বলেছেন বেশির ভাগই পছন্দ হয়নি ক্রিকেটারদের।

বিশেষ করে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কিছু সমস্যা নিয়ে প্রকাশ্যে যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, এতে ভীষণ আহত বোধ করেছেন ক্রিকেটাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার বলছিলেন, ‘আমরা শুধুই আমাদের ক্রিকেটীয় সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি। এই দাবির সঙ্গে কেন এসব পারিবারিক-ব্যক্তিগত বিষয় আসবে? তিনি বোর্ডের অভিভাবক। বড় কোনো সমস্যা, বিপদে পড়লে তাঁর কাছেই তো জানাবে খেলোয়াড়েরা। তাই বলে সেগুলো জনসম্মুখে বলতে হবে!’

খেলোয়াড়েরা এখনো তাঁদের অবস্থানে অনড়। তবে কেউ কেউ আশাবাদী দু-এক দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে। বিসিবির বক্তব্য জানার পর এখন ক্রিকেটাররা কী করবেন সেটি কাল রাতে জানা যায়নি। বেশির ভাগ ক্রিকেটারই সংবাদমাধ্যম কিংবা বিসিবির কর্তাদের এড়িয়ে চলছেন। নিজেদের মধ্যে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বেশির ভাগই ফোন ধরছেন না কিংবা কথা বলতে চাইছেন না।

এ ঘটনায় বিসিবি আছে ভীষণ চাপে। কদিন পর ভারত সফর, সমস্যার সমাধান করতে হবে খুব দ্রুত। কিন্তু সমাধান হবে কীভাবে, সেটির পথ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় খেলোয়াড়দের শাস্তি দেওয়ার কথা উঠেছে পরশু বিসিবির কর্তাদের প্রথম বৈঠকে। তবে এটির বিপক্ষে মত জোরালো। খেলোয়াড়দের শাস্তি দিতে গেলে হিতে বিপরীত হবে বলে আপাতত এ বিষয়ে কিছু ভাবছে না। তবে ভবিষ্যতে যে শাস্তি দিতেও পারে, সেটির ইঙ্গিত থাকল নাজমুলের কথায়, ‘উই উইল ডু। এখন বেশি কিছু করতে গেলে কারা কারা আছে বের করতে পারব না। দেশের বিরুদ্ধে কারা কাজ করছে। ধীরে ধীরে দেখবেন সব বেরিয়ে আসবে। বাংলাদেশ ছোট জায়গায় বেরিয়ে যাবেই।’

যতই হুংকার ছাড়ুন, একটা পর্যায়ে নরম হতেই হচ্ছে বিসিবি সভাপতিকে। খেলোয়াড়েরাই যে বিসিবির প্রাণ। তাঁরা না থাকলে বোর্ডের অস্তিত্ব নিয়েই তো প্রশ্ন ওঠে। ক্রিকেটারদের ধর্মঘট যদি লম্বা হয়, ভারত সফরে যেতে না রাজি হন, তবে কী করবে বিসিবি? এবার নাজমুলের কণ্ঠটা বেশ নরম, ‘তোমরা যদি না খেল... তারা যদি খেলতে না চায় আমার কী করার আছে। খেলবে না। কিন্তু এতে তাদের লাভ কী?...যাবে না, আমার কিছু বলার নেই। বসতে চাইলে বসতে পারে, যেকোনো সময়।’

বিসিবির সঙ্গে ক্রিকেটাররা কখন বসবেন, এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।