Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আইপিএল

এবারের আইপিএল কতটা বড়

আজ রাত আটটায় গতবারের দুই ফাইনালিস্ট কলকাতা নাইট রাইডার্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের মধ্যে ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে আইপিএলের নতুন মৌসুমের। অন্যান্য যেকোনো মৌসুমের তুলনায় এবার আইপিএল বেশ বড়—খবরটা পুরোনো। কিন্তু ঠিক কত বড়?

প্রতিবার সব মিলিয়ে ৬০টি করে ম্যাচ হলেও এবার ম্যাচসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৪। মুম্বাইয়ের তিন স্টেডিয়াম ওয়াংখেড়ে, ডিওয়াই পাতিল ও ব্র্যাবোর্ন মিলে আয়োজন করবে ৫৫টি ম্যাচ। পুনেতে আয়োজিত হবে ১৫টি ম্যাচ। তবে প্লে-অফের চার ম্যাচ কোথায় হবে, এখনো ঠিক হয়নি। এটা নিশ্চিত, আইপিএল খেলতে কোহলি-রোহিতদের অন্তত আকাশপথে ভ্রমণ করতে হচ্ছে না। ভারতীয় দর্শকদের জন্য সুসংবাদ, মাঠে বসেই খেলা দেখতে পারবেন ভক্তরা। এবার স্টেডিয়ামের মোট ধারণক্ষমতার এক-চতুর্থাংশ দর্শক পাচ্ছেন সে সুযোগ। তবে একটা শর্ত পূরণ করতে হবে, সবার থাকতে হবে টিকা সনদ।

হার্দিক পান্ডিয়া ও লোকেশ রাহুল - নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির দুই অধিনায়ক

এবার আইপিএলকে ম্যাচসংখ্যা বিচারে সবচেয়ে বড় বললে ২০১১ সালের টুর্নামেন্ট টেনে আনতে পারেন অনেকে। এবারের মতো সেবারও ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজি ছিল। সেবারও মোট ৭৪টি ম্যাচ হয়। এবার ১০টি দলকে দুটি ‘ভার্চ্যুয়াল’ গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। আইপিএলে কোন দল কতবার শিরোপা জিতেছে এবং কতবার ফাইনাল খেলেছে, তার ভিত্তিতে করা হয়েছে এই গ্রুপিং।


ম্যাচসংখ্যা বাড়ার পেছনে নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির অন্তর্ভুক্তি ভূমিকা রেখেছে। পরিচিত আটটা ফ্র্যাঞ্চাইজি তো খেলছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ও গুজরাট টাইটানস নামের নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি। দল দুটি বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকায় (ভারতীয় রুপি ১২ হাজার ৫০০)। প্রায় ৭ হাজার ৯৮২ কোটি টাকায় (ভারতীয় রুপি প্রায় ৭ হাজার) লক্ষ্ণৌভিত্তিক দলটি কিনেছে আরপিএসজি নামের কলকাতাভিত্তিক এক বহুজাতিক কোম্পানি।

চেন্নাই কলকাতার ম্যাচ দিয়েই এবার শুরু হচ্ছে আইপিএল

অন্যদিকে ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকাভিত্তিক সিভিসি নামে আরেকটি কোম্পানি কিনেছে আহমেদাবাদভিত্তিক আরেকটি দল, যেটি বিক্রি হয় প্রায় ৫ হাজার ৯২৯ কোটি টাকায় (ভারতীয় রুপি প্রায় ৫ হাজার ২০০)। প্রতিটি দলের জন্য বিসিসিআইয়ের ভিত্তিমূল্য ছিল প্রায় ২ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। ফলে, লক্ষ্ণৌর দলটি আরপিএসজি কিনেছে প্রায় ২৫০ শতাংশ বেশি মূল্যে, অন্যদিকে সিভিসি ব্যয় করেছে ভিত্তিমূল্যের প্রায় ১৬০ শতাংশ বেশি অর্থ।


এ বছর থেকে আইপিএলের টাইটেল স্পনসর হিসেবে দেখা যাবে ভারতের বহুজাতিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী টাটাকে। তবে টাটার সঙ্গে বিসিসিআইয়ের ঠিক কত টাকার চুক্তি হয়েছে, তা জানা যায়নি। অঙ্কটা বড়ই হবে!

গত আইপিএলে রাজস্থানে খেলা মোস্তাফিজ এবার খেলবেন দিল্লির হয়ে

১০ ফ্র্যাঞ্চাইজির স্কোয়াড ভাগাভাগি করে দেওয়ার জন্য এবার খেলোয়াড়দের নিলামও হয়েছে বড় কলেবরে। দুই দিনব্যাপী নিলামে ৫৫১ কোটি ৭০ লাখ রুপির খেলোয়াড় কিনেছে ১০ দল। এর আগে ৩২৮ কোটি রুপির বেশি বিনিয়োগ করেছে দলগুলো।
শুধু কি খেলোয়াড়রাই টাকা পাবেন? ধারাভাষ্যকাররা পাবেন না? জানা গেছে, এবার আইপিএলে ইংরেজি ভাষায় যাঁরা ধারাভাষ্য দেবেন, সবাই আড়াই লাখ থেকে পাঁচ লাখ ডলার পাবেন পারিশ্রমিক হিসেবে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ কোটি ১৫ লাখ থেকে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। হিন্দি ধারাভাষ্য যাঁরা দেবেন, তাঁরা আয় করবেন ৮০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ ডলার পর্যন্ত, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৬৯ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা। সিলেক্ট ডাগআউটে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের আয় হবে প্রায় পাঁচ লাখ থেকে সাড়ে সাত লাখ ডলার। অর্থাৎ ৪ কোটি ৩০ লাখ থেকে ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা আয় করবেন তাঁরা।


বর্তমানে আইপিএলের মূল ডিজিটাল সম্প্রচারস্বত্ব ডিজনি স্টারের। ম্যাচপ্রতি তারা প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি রুপি করে দিচ্ছে ভারতীয় বোর্ডকে।

এই করোনার মধ্যে আইপিএল কেন?

এবারই ডিজনি স্টারের সঙ্গে চুক্তি শেষ হচ্ছে বিসিসিআইয়ের। আগামী বছর থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত মোট পাঁচ বছরের মিডিয়া–স্বত্ব বিক্রি করতে এর মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করেছে আইপিএলের পরিচালনা পর্ষদ, ২৮ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া যে প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে লাগবে আরও দুই মাস। বিসিসিআই আশা করছে, প্রতি ম্যাচে ডিজিটাল ও সম্প্রচারস্বত্ব বাবদ অন্তত ৩৫ হাজার কোটি রুপি করে আয় করা যাবে আগামী বছর থেকে, জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। অঙ্কটা বেড়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকাও স্পর্শ করতে পারে।


টাকার মচ্ছব বুঝি একেই বলে!