Thank you for trying Sticky AMP!!

কোহলিই দেখাচ্ছেন পথ

কোহলিই দেখাচ্ছেন পথ

প্রথম টেস্টের ব্যর্থতায় বিরাট কোহলিকে কম কথা শুনতে হয়নি। বীরেন্দর শেবাগ তো বলেই দিলেন, দ্বিতীয় টেস্টে খারাপ করলে কোহলির বাদ পড়া উচিত। কোহলি এমন কথার পরও ভালো খেলবেন না, তা কি হয়! সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষেও লড়াইয়ে আছে ভারত। কারণ, এখনো উইকেটে আছেন কোহলি। অধিনায়কের লড়াকু ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৮৩ রানে দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। প্রোটিয়ারা এগিয়ে আছে ১৫২ রানে।

লুঙ্গি এনগিডি নামটি এমনিতেও মানুষের ভুলতে সময় লাগত। মনে রাখার ব্যাপারটি যেন আরও দীর্ঘ হয়, সেটা নিশ্চিত করলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার। চেতেশ্বর পূজারাকে প্রথম বলেই রান আউট করে দিয়েছেন লুঙ্গি। টেস্টের দুই ইনিংসে দুই দলের তিন নম্বর ব্যাটসম্যান রান আউট হওয়ার মতো অদ্ভুত এক ঘটনাও তাই দেখা গেল। ২৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া ভারত অবশ্য ভালোই প্রতিরোধ গড়েছে।

কারণ কোহলি ফর্মে ফেরার জন্য আজকের দিনটি বেছে নিয়েছেন। দারুণ সব শটে ১৩০ বল খেলে অপরাজিত আছেন ৮৫ রানে। তাঁকে ভালো সঙ্গ দিয়েছেন মুরালি বিজয়। ৭৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি গড়ে বিজয় ফিরেছেন ৪৬ রানে। দিনের শেষ সেশনে ফিরেছেন রোহিত শর্মা ও পার্থিব প্যাটেল। এর মাঝে পার্থিব ফিরেছেন লুঙ্গিকে টেস্টে প্রথম শিকারের স্বাদ দিয়ে।  

এর আগে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে মাত্র এক ওভার ব্যাট করতে নেমেছিল ভারত। এ জন্য পেসারদের বিরক্ত করতে ইচ্ছে হলো না ফাফ ডু প্লেসির। তাই বলটা তুলে দিলেন কেশব মহারাজের হাতে। তাতেই হয়ে গেল ইতিহাস। এক শ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকান কোনো স্পিনার নিজেদের প্রথম ইনিংসে বোলিং উদ্বোধন করলেন। 

মহারাজের ইনিংসের শুরুতে বল করাটা কত বড় ঘটনা, সেটা ভেবে দেখার জন্য কিছু তথ্য দেওয়া যাক। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৪২০ টেস্টে কোনো স্পিনারের প্রথম ওভার করার ঘটনাই আছে মাত্র ৯টি। বোলারের সংখ্যা তো আরও কম, মাত্র ৫। অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলে ফাস্ট বোলার কিংবা পেসারদের ডিঙিয়ে চকচকে লাল চেরিটা হাতে নেওয়ার সাহস করাটাও তো কঠিন। সর্বশেষ যে বোলার এমন সাহস দেখিয়েছেন তিনি পল অ্যাডামস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কেপটাউনে প্রথম ওভারেই বল তুলে দেওয়া হয়েছিল এই চায়নাম্যানের হাতে। কিন্তু সেটা ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে।

দলের প্রথম ইনিংসেই বল হাতে নেওয়ার ঘটনাটি ১৯১২ সালের। আরেক লেগি অব্রে ফকনার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বল হাতে নিয়েছিলেন ম্যাচের একদম প্রথম ইনিংসেই। অবশ্য ফকনার কোনো উইকেট না পাওয়ায় জুয়াটা সেবার কাজে লাগেনি। আর ম্যাচটা দক্ষিণ আফ্রিকাতেও হয়নি। ম্যানচেস্টারে আতিথ্য নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলই।

নিজেদের মাঠে প্রথম ইনিংসে প্রথম বল হাতে নেওয়ার একমাত্র কীর্তিটা এত দিন শুধু একজনেরই ছিল। জর্জ রোয়ে, মহারাজের মতোই আরেক বাঁহাতি স্পিনার। মাত্র পাঁচ টেস্ট খেললেও অনন্য এক রেকর্ড তাঁর। যে ৮ ইনিংসে বল করেছেন, হয় একে কিংবা দুইয়ে বল করেছেন! ১৮৯৬ জোহানেসবার্গে নিজের অভিষেকেই প্রথম ওভার করার সৌভাগ্য হয়েছিল। ১৯০২ সালে সেই জোহানেসবার্গেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলেছিলেন। সেই টেস্টেও প্রথমে বল হাতে নিয়েছেন রোয়ে। এটাই ছিল ঘরের মাঠে কোনো প্রোটিয়া স্পিনারের প্রথম ইনিংসেই বোলিং উদ্বোধন করার শেষ কীর্তি।

ও, আজ তো মহারাজ এ কথাটা বলার আর উপায় রাখলেন না! যদিও ডু প্লেসির ফাটকাটা কাজে লাগেনি শেষ পর্যন্ত। এর আগে লোয়ার অর্ডার নিয়ে প্রোটিয়া অধিনায়কের নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে আগের দিনের সঙ্গে ৬৬ রান যোগ করে শেষ ৪ উইকেট হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৬৩ রান করেছেন ডু প্লেসি। এই উইকেটে স্পিনারদের জন্য যে কিছু আছে, অশ্বিনের ৪ উইকেট সেটাই বলছে। ভারতীয় অফ স্পিনার অবশ্য ১১৩ রান খরচ করেছেন এর জন্য। তবে অশ্বিনের বলে লম্বা লম্বা টার্ন দেখেই হয়তো ডু প্লেসির মনে ফাটকাটা খেলার উৎসাহ দেখা গেছে।