Thank you for trying Sticky AMP!!

কোহলির জয়জয়কার

>ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একই সঙ্গে আইসিসি বর্ষসেরা, বর্ষসেরা টেস্ট ও বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের ট্রফি জিতেছেন বিরাট কোহলি।

‘এখন যৌবন যার...।’ বিরাট কোহলির জন্য কথাটা একটু বদলে বলা যায়—‘এখন ফর্ম যাঁর, সব জিতে নেওয়ার তাঁরই সময়।’

কি ব্যাট হতে, কি অধিনায়ক হিসেবে—কোহলি ছুটছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে। ইতিহাস গড়ছেন, ক্রিকেট রূপকথায় নতুন নতুন অধ্যায় লিখে যাচ্ছেন। সমকালের সীমানা ছাড়িয়ে এখন সর্বকালের সেরাদের মধ্যেও উচ্চারিত হচ্ছে তাঁর নাম। ২০১৮ সালে বছরজুড়ে এমন অবিশ্বাস্য ফর্ম যে সেটার স্বীকৃতি পাওয়ার বেলায়ও একটা নতুন কীর্তি গড়ে ফেললেন কোহলি। ২০১৮ সালের আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটার তো হয়েছেনই, জিতেছেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফিও। একসঙ্গে এই শীর্ষ তিনটি পুরস্কার জিততে পারেননি আর কেউ। বর্ষসেরা টেস্ট ও ওয়ানডে দুটি দলেরই অধিনায়কও নির্বাচিত হয়েছেন ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান।

কোহলির জয়জয়কার যে পুরস্কারে, সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বও আছে। আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে জায়গা পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। এর আগে ২০১৫ সালেও বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে ছিলেন মোস্তাফিজ, পরের বছর পেয়েছিলেন বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার।

গত বছর ১৩ টেস্টে ৫টি সেঞ্চুরিসহ ৫৫.০৮ গড়ে ১৩২২ রান করেছেন কোহলি। ১৪ ওয়ানডেতে ৬ সেঞ্চুরিসহ ১২০২ রান করেছেন ১৩৩.৫৫ গড়ে। ১০টি টি-টোয়েন্টি খেলে করেছেন ২১১ রান। টেস্ট ও ওয়ানডে দুই সংস্করণেই বছরের সর্বোচ্চ রান তাঁর। প্রথমবারের মতো ভারতের অস্ট্রেলিয়া জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, টেস্ট জিতেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডেও। স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফির দাবিদার হিসেবে তাঁই আইসিসির ভোটিং একাডেমির সর্বসম্মত পছন্দ ছিলেন তিনি। যে ভোটিং একাডেমিতে ছিলেন আইসিসির ১২ পূর্ণ সদস্য ও ২ সহযোগী সদস্য দেশের ৩৬ জন সাবেক ক্রিকেটার, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক। বাংলাদেশ থেকে বিচারক প্যানেলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাবেক ক্রিকেটার আতাহার আলী খান, ফরিদ আহমেদ ও প্রথম আলোর ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র।

বর্ষসেরা ক্রিকেটার ও বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে কোহলির নির্বাচন ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। দুটিতেই তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা, যিনি টেস্টে গত বছরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি (১০ ম্যাচে ৫২ উইকেট)। বর্ষসেরা ওয়ানডে ট্রফি জয়ের দৌড়ে কোহলির কাছে হেরেছেন আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার রশিদ খান। গত বছর ২০ ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৪৮ উইকেট নিয়েছেন রশিদ।

গত বছরও আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছিলেন কোহলি, পেয়েছিলেন বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের স্বীকৃতিও। রিকি পন্টিংয়ের (২০০৬ ও ২০০৭) পর এই প্রথম কেউ আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফিটা নিজের কাছে রেখে দিতে পারলেন। এই দুজন ছাড়া দুবার স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফি জিতেছেন শুধু মিচেল জনসন (২০০৯ ও ২০১৪)।

একসঙ্গে এত স্বীকৃতির পর উচ্ছ্বসিত না হয়ে কি পারা যায়! কোহলির সেই উচ্ছ্বাস আছে, তবে একই সঙ্গে পা-ও মাটিতেই রাখছেন, ‘এই অনুভূতি অসাধারণ। বছরজুড়ে কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতি এটি। আমি কৃতজ্ঞ এবং দলের দুর্দান্ত পথচলায় অবদান রাখতে পেরে খুবই খুশি। আইসিসির কাছ থেকে বিশ্বপর্যায়ের এই স্বীকৃতি পাওয়া সত্যিই গর্বের ব্যাপার। আমি কৃতজ্ঞ এবং দলের দুর্দান্ত পথচলায় অবদান রাখতে পেরে খুবই খুশি।’

কোহলি ছাড়া বর্ষসেরা টেস্ট ও ওয়ানডে দুই দলেই আছেন শুধু একজন—ভারতীয় পেসার জসপ্রীত বুমরা। ওয়ানডে দলে অনুমিতভাবেই আধিপত্য র‍্যাঙ্কিংয়ের এক ও দুই নম্বর দল ইংল্যান্ড ও ভারতের। দুই দেশ থেকেই আছেন চারজন করে। এর বাইরে নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের আছেন একজন করে। বর্ষসেরা টেস্ট দলে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের তিনজন করে। একজন করে আছেন শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের।

বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের পুরস্কার জিতেছেন অ্যারন ফিঞ্চ। গত বছর জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে ১০ ছয় ও ১৬ চারে ৭৬ বলে ১৭২ রানের ইনিংসটা তাঁকে এনে দিয়েছে এই স্বীকৃতি। অস্ট্রেলিয়ান এই ওপেনার ২০১৪ সালেও এই পুরস্কার পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৬ রানের ইনিংস খেলে।
মাঠে ও মাঠের বাইরে ক্রিকেটীয় চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ায় বড় ভূমিকা রেখে স্পিরিট অব দ্য ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। যাঁর সম্পর্কে আইসিসি বলেছে, ক্রিকেটটা কীভাবে খেলা উচিত, সেটির উজ্জ্বল উদাহরণ উইলিয়ামসন।