Thank you for trying Sticky AMP!!

কাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মেহেদী হাসান মিরাজ।

চট্টগ্রামের ভুলগুলো ঢাকায় করতে চান না মিরাজ

ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি, বোলিংয়ে দুই ইনিংসেই ৪টি করে উইকেট। চট্টগ্রাম টেস্টের নায়ক হওয়ার কথা ছিল মেহেদী হাসান মিরাজের। কিন্তু শেষ দিনে অসাধারণ এক ডাবল সেঞ্চুরি করে সব আলো কেড়ে নিলেন কাইল মেয়ার্স। অভিষেকেই ইতিহাস গড়ে নায়ক ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। আর মিরাজ হয়ে গেলেন এক ম্যাচে সেঞ্চুরি ও দুবার ৪ উইকেট নিয়েও হারের মুখ দেখা দ্বিতীয় ক্রিকেটার। দুর্ভাগা প্রথম জন জর্জ গ্রিফিন। ১৮৯৪ সালে সিডনিতে এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পরও ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল গ্রিফেনের অস্ট্রেলিয়া।

চট্টগ্রাম এখন অতীত। ভবিষ্যৎ ঢাকার মিরপুরে। বৃহস্পতিবার শুরু সেই টেস্টে না জিতলে জুটবে সিরিজ হার। সেই ম্যাচের আগে গতকাণ কথা বলতে গিয়ে বারবার চট্টগ্রাম টেস্টের কথাই টেনে আনলেন মিরাজ। বললেন, চট্টগ্রামে করা ভুলগুলো যেন ফিরে না আসে শেরেবাংলায়, ‘তাইজুল ভাই খুব ভালো বোলিং করেছে, হয়তো আমি বা নাঈম (হাসান) যদি আরেকটু ভালো বোলিং করতাম, হয়তো ওদের আরও একটা উইকেট পড়ার সুযোগ তৈরি হতেও পারত। ওরা হয়তো এক্সট্রাঅর্ডিনারি ব্যাটিং করেছে দুই সেশনে। আমরা যদি চান্সগুলো নিতে পারতাম, তাহলে হয়তো (ফল) আমাদের পক্ষেই থাকত। একটা-দুইটা উইকেটই অনেক জরুরি ছিল। তাহলে পরের ব্যাটসম্যানের জন্য অত ইজি হতো না খেলাটা। আমরা ভুল করে গেছি, চেষ্টা করব যেসব ভুল করেছি, সেগুলো যেন পরের ম্যাচে না করি।’

চোটের কারণে প্রথম টেস্টের বেশিরভাগ সময় মাঠের বাইরেই ছিলেন সাকিব আল হাসান।

সাকিব আল হাসানকে পুরো ম্যাচে না পাওয়াটাও ম্যাচে প্রভাব ফেলেছে বলেই মনে করেন মিরাজ। অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার বললেন, সাকিব মাঠে না থাকায় দলের বাকি স্পিনারদের পরামর্শ দেওয়ার মতো কেউ ছিল না আর, ‘সাকিব ভাই মাঠে থাকলে স্পিনারদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিতেন এবং তিনি নিজেও ভালো বোলিং করতেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সাকিব ভাইকে মিস করেছি।’

মিরপুর টেস্টে খেলবেন না সাকিব। কাল পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গেছে ব্যাপারটা। দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের অনুপস্থিতিতে বাকিদের দায়িত্ব বেড়ে গেল বলেই মনে করছেন মিরাজ, ‘সাকিব ভাই থাকলে অনেক ভালো হতো, আমাদের ভুলগুলো কম হতো এবং আমাদের আত্মবিশ্বাস বেশি থাকত। কিন্তু যেহেতু সে নাই, আমাদের স্পিনারদের দায়িত্ব নিতে হবে। আমি আছি, তাইজুল ভাই আছে, নাঈম আছে। আমাদের তিনজনের ওপরে বেশি দায়িত্ব থাকবে। আমরা চেষ্টা করব ভালো জায়গায় বল করার জন্য। চেষ্টা করব ওদের সহজে খেলতে না দিতে।’

এখন তো কোনো অপশনই নাই ওপরে ব্যাটিং করার। বাংলাদেশ দলে সিনিয়র খেলোয়াড়েরা আছেন, আমার হয়তো সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি, ইনশা আল্লাহ ৪-৫ বছর পর আমার সুযোগ আসতেও পারে।
মেহেদী হাসান মিরাজ
চট্টগ্রামে সেঞ্চুরির পর মেহেদী হাসান মিরাজ।

চট্টগ্রামে তাঁর দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পরও হেরেছে দল। তাতে অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে মিরাজের অর্জন। এ নিয়ে তেমন আক্ষেপ নেই বলেই জানালেন ২০১৬ সালে টেস্ট অভিষিক্ত অলরাউন্ডার, ‘না, ও রকম আক্ষেপ নেই। কারণ হলো, ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই হতে পারে। খারাপ লাগছে যে দল হেরে গেছে। কারণ, আমরা আশাও করিনি যে হেরে যাবে। দল জিতলে হয়তো আমার পারফরম্যান্সটা আরও নজর কাড়ত বা খুব ভালো লাগত নিজের কাছে। শেষ পর্যন্ত তো আমরা কিন্তু দলের জন্যই খেলি। তারপরও বলব যে প্রথম সেঞ্চুরি করেছি, অবশ্যই ভালো লাগছে এবং এটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন।’

বয়সভিত্তিক ক্রিকেট ব্যাটিং–ক্রমের ওপরের দিকেই ব্যাটিং করতেন মিরাজ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেই মিরাজকে এখন ব্যাটিং করতে হয় লোয়ার অর্ডারে। ২৩ বছর বয়সী খেলোয়াড় এখন পাখির চোখ করেছেন ভালো করে ব্যাটিং–ক্রমের ওপরে উঠে আসার, ‘এখন তো কোনো অপশনই নাই ওপরে ব্যাটিং করার। বাংলাদেশ দলে সিনিয়র খেলোয়াড়েরা আছেন, আমার হয়তো সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি, ইনশা আল্লাহ ৪-৫ বছর পর আমার সুযোগ আসতেও পারে। আমি মনে করি, তার জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে, নিজেকে প্রতিনিয়ত ঝালাই করতে হবে। বের করতে হবে আমার কোন কোন জায়গায় উন্নতি করার সুযোগ আছে সেগুলো।’