Thank you for trying Sticky AMP!!

টি–টোয়েন্টি পছন্দ করতেন না সৌমিত্র

ক্রিকেট খুবই পছন্দ ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।

বাংলা চলচ্চিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে কত বৈচিত্র্যময় চরিত্রেই না দেখা গেছে। ‘অভিযান’-এর কিছুটা রুক্ষ প্রকৃতির নরসিং, ‘কাপুরুষ’-এর সত্যি সত্যিই কাপুরুষ অমিতাভ, ‘কোনি’র ক্রীড়াপাগল ক্ষিদদা, ‘ঝিন্দের বন্দী’র তলোয়ার চালানো ময়ূরবাহন, ‘অশনি সংকেত’-এর চশমা-আঁটা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ, ‘শাখা প্রশাখা’র অপ্রকৃতিস্থ প্রশান্ত এবং সত্যজিতের অমর সৃষ্টি ফেলুদা তো বটেই। কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী ছাড়াও সৌমিত্রর আরেকটা পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক ক্রিকেটপাগল একজন মানুষ।

বলা হয়ে থাকে, আশির দশক পর্যন্ত ইডেন গার্ডেনসে হওয়া ভারতের একটা আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচও মিস করেননি সৌমিত্র। মাঠে গিয়ে দেখেছেন প্রতিটি ম্যাচ। বাংলার সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক জাতীয় নির্বাচক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছেন এ কথা। ক্রিকেটসংক্রান্ত ব্যাপারগুলোয় খোঁজখবর রাখতেন নিয়মিত, ‘তিনি ক্রিকেটের একজন দুর্দান্ত ভক্ত ছিলেন। উনি একবার আমাকে বলেছিলেন, ষাট-সত্তর কিংবা আশির দশকে ইডেনে হওয়া একটা টেস্টও মিস করেননি। মাঠে গিয়ে দেখেছেন সব। ক্রিকেট নিয়ে অনেক জানাশোনা ছিল তাঁর’।

ইডেনে অভিনেতাদের প্রদর্শনী ক্রিকেটে সৌমিত্র থাকতেনই।

টেস্ট বলতে অজ্ঞান ছিলেন সৌমিত্র। এতটাই ভালোবাসতেন এই ফরম্যাট যে টি-টোয়েন্টির ক্রমশ ‘আগ্রাসন’ মোটেও ভালো লাগত না তাঁর। ‘আইপিএল যখন শুরু হলো, আমরা প্রায়ই এটা নিয়ে কথা বলতাম। তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশেষ পছন্দ করেন না তিনি। তাঁর মন-প্রাণ পড়ে থাকত টেস্টে। তাঁর মৃত্যু আমার কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতির মতো মনে হচ্ছে।’

সৌমিত্রর মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন বিসিসিআইয়ের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘আপনি অনেক কিছু করেছেন। এখন আপনি শান্তি ঘুমান।’ সৌরভের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে সৌমিত্র নিজের ক্রিকেট পাগলামির কথা জানিয়েছিলেন ঠিক এভাবে—‘আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল একজন, ‘‘আপনি তো ক্রিকেট মাঠে যেতেন প্রচুর, আপনার দেখা ক্রিকেটের সব থেকে ভালো মুহূর্ত কোনটি?’’ আমি বললাম, একটা ক্যাচ মিস। বলল, ক্যাচ মিস? আমি বললাম, হ্যাঁ। ব্যাটসম্যান সজোরে সপাটে একটা বল মেরেছিলেন, সে ক্যাচ ধরতে গিয়ে সোবার্স পেছন দিকে ছুটছিল, চোখে সূর্যের আলো পড়ছিল। সে ক্যাচটা ধরতে পারেনি, হাত লাগিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু শেষটুকু করতে পারল না। কিন্তু একটা রান আটকাতে পারল। সে যে এফোর্টটা দিয়েছিল, তা দেখে ইডেন গার্ডেনসের দর্শকেরা টানা পাঁচ মিনিট হাততালি দিয়েছিল। এই যে মানুষকে দেওয়ার খিদে, সে কিন্তু সবটুকু দিয়ে ক্রিকেটটা খেলছে! এটাই গ্যারি সোবার্স, ওয়ান অব দ্য গ্রেটেস্ট!’