তামিম-কোহলির মধ্যে মিলও কম নেই
>পরিসংখ্যানের বিচারে তামিম ইকবাল ও বিরাট কোহলির মধ্যে বিরাট পার্থক্য থাকলেও কিছু কিছু জায়গায় দুজনের মধ্যে রয়েছে দারুণ মিল
আগমনী বার্তাটা ভারতকে পেয়েই দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। ২০০৭ বিশ্বকাপে সেরা ফর্মের জহির খানকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কা মেরে তামিম পুরো বিশ্বকে যেন জানান দিয়েছিলেন, আমি থাকতেই এসেছি।
সেখান থেকে তামিম দেখেছেন অনেক উত্থান-পতন। খুব ভালো সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। খুব বাজে সময়ও পার করেছেন।বিশ্বসেরাদের একজন হওয়ার ইচ্ছে ও প্রচেষ্টা সবসময়ই তাঁর ছিল। সেই তেড়েফুঁড়ে ছক্কা মারা ছেলেটি এখন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক।
বিরাট কোহলির গল্প কিছুটা ভিন্ন। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক হয়ে পরিচিতি পেয়ে যান খুব অল্প সময়েই।প্রতিভা তো ছিলই। কিন্তু ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোহলির শুরুটা তামিমের মতো চমকে দেওয়া ছিল না। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি তাঁকে দলেই নিতে চাননি!
নির্বাচকদের পছন্দে ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিমান ধরেন কোহলি। এরপর যতই সময় গড়িয়েছে, কোহলি উন্নতি করেছেন লাফিয়ে লাফিয়ে। রাহুল দ্রাবিড় বলতেন, 'কোহলিকে আমি যতবারই দেখি, আগেরবারের থেকে ভিন্ন ক্রিকেটার মনে হতো। প্রতিবারই তাঁর কিছু না কিছু উন্নতি অবাক করত।' উন্নতির ধারা এখনো থেমে যায়নি। তাই তিন সংস্করণের ক্রিকেটে গত কয়েকবছর ধরেই কোহলি বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। দেশের অধিনায়ক হয়েও কোহলির রেকর্ডও ঈর্ষা করার মতো।
সেই ২০০৭ থেকে শুরু, এখনো কোহলির ভারতকে ঠেকাতে তামিমের দরকার পড়ে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ, ভারত দুই দলকেই তামিম ও কোহলির ব্যাটিংয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। ব্যাটিংয়ের ধরনেও ভালো মিল আছে দুজনের। তারা গতির বিপক্ষে ব্যাটিং করতে বেশ পছন্দ করেন।
আগ্রাসী মেজাজের ব্যাটিং দুইজনকে এক করে। একই বলে দুই-তিন রকমের শট খেলার সামর্থ্য রাখেন কোহলি-তামিম। বিশেষ করে প্যাডের ওপরের বলে দুজনই ভয়ংকর।পেছনের পায়েও সমান কার্যকর। কবজির মোচড়ে সেরা বোলারদেরও বাউন্ডারি ছাড়া করেন। স্পিনেও সাবলীল। বাংলাদেশের মাটিতে স্পিন উইকেটে তামিমের বেশ কিছু বড় ইনিংস আছে। কোহলিও স্পিন স্বর্গ জয় করেছেন বেশ কয়েকবার। স্পিনে দুইজনই কাভারের ওপর দিয়ে ইনসাইড-অউট শট খেলতে পছন্দ করেন।
তামিম স্পিনে সুইপ-রিভার্স সুইপ বেশি খেলেন। কোহলিকে খুব একটা রিভার্স সুইপ করতে দেখা যায় না। তবে ১-২ রান নেওয়ার ক্ষেত্রে তামিম থেকে কোহলি ঢের এগিয়ে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে কোহলি যেন অন্য গ্রহের কেউ।
ক্যারিয়ারের মাঝপথে এসে দুজনই নিজেদের ব্যাটিংয়ে বড় পরিবর্তন আনেন। ২০১৪ সালে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কোহলির সমস্যা হচ্ছিল। শচিন টেন্ডুলকারের সঙ্গে কাজ করে সমস্যার সমাধান করেন কোহলি। একই সময় ঝুঁকিপূর্ণ শট কমিয়ে খেলে নিজের ব্যাটিংয়ে আমুল পরিবর্তন আনেন তামিম। এরপর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে তামিমের গড় ৫০ এর নিচে নামেনি। একই সময় কোহলি নিজের ফিটনেসে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনেন। তামিমও ফিটনেস নিয়ে ভাবা শুরু করেন একই সময়ে।
দুজনই সব কন্ডিশনের ব্যাটসম্যান। তামিম ২০১০ সালের ইংলিশ গ্রীষ্মের শুরুতে বড় রান করেছিলেন। গ্রীষ্মের শুরুতে রান করা কত কঠিন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোহলি ক্যারিয়ারের শুরুতে ইংল্যান্ডে ব্যর্থ হলেও ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে পুষিয়ে দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে দুজনই রান করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় কোহলির রেকর্ড দারুণ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় তামিমের খুব বেশি খেলার সুযোগ হয়নি।
দুই প্রতিবেশি দেশের দুই তারকা ক্রিকেটার আজ একই সঙ্গে অনলাইনে আড্ডা দিতে যাচ্ছেন। আজ রাত সাড়ে ১০টায় তামিমের সঙ্গে ফেসবুক পেজে লাইভ আড্ডায় যোগ দেবেন কোহলি। দুই দেশের এ দুই তারকা ব্যাটসম্যানের আড্ডায় নিশ্চিতভাবেই ক্রিকেট প্রাণ খুঁজে পাবে এই করোনাকালে।
আরও পড়ুন
-
বিলাসিতা ছেড়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিতে শিল্পমালিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
-
আগামীকাল স্কুল-কলেজ খোলা না বন্ধ, সিদ্ধান্ত জানায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়
-
ভেঙে গেল ১২৭ বছরের পুরোনো গোদরেজ গ্রুপ, কে কী পাচ্ছেন
-
দমন নাকি সমঝোতা, কোন পথে হাঁটবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
-
সরকারি ডে-কেয়ারে শিশুসন্তানকে হারালেন, বিচার পাবেন কি না জানেন না