Thank you for trying Sticky AMP!!

দুই বছর পর সেই মাশরাফি

আবারও আবাহনীকে জেতালেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রথম আলো

জাতীয় দলের ব্যস্ততায় বেশির ভাগ মৌসুমেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সব ম্যাচ খেলা হয় না। সেই সব ‘না পারা’র শোধ কি এই মৌসুমে তুলবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা! প্রতি ম্যাচের শেষে স্কোর কার্ডগুলো তেমনই তো বলছে। এবারের লিগে প্রথম ম্যাচে খেলাঘরের বিপক্ষে ২৩ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট, পরের ম্যাচে কলাবাগানের বিপক্ষে ৬৭ রান ও ৪ উইকেট। পরের দুই ম্যাচে উইকেট না পেলেও কাল শেখ জামালকে ধসিয়ে দিয়েছেন ২৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে।
এর আগে যেকোনো ধরনের ক্রিকেটে মাশরাফি সর্বশেষ ৫ উইকেট নিয়েছিলেন প্রায় দুই বছর আগে। কলাবাগানের হয়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। এবারের লিগে এখন পর্যন্ত ১২ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় উঠেছেন ৩ নম্বরে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের দুই বোলার মোশাররফ রুবেল (১৫) ও আসিফ হাসানই (১৩) শুধু তাঁর ওপরে।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে মাশরাফির ৫ উইকেট আবাহনীকে এনে দিয়েছে মৌসুমে টানা পঞ্চম জয়। ২৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা শেখ জামাল অলআউট ২২৩ রানে। মাশরাফির পর আবাহনীর দ্বিতীয় সেরা বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ (২ / ৪৪)। শেখ জামাল অধিনায়ক নুরুল হাসান করেছেন সর্বোচ্চ ৮৩ রান।
আবাহনীর ৪৭ রানের এ জয়ের ভিতটা অবশ্য গড়ে দিয়ে গেছেন এনামুল হক। খেলাঘরের বিপক্ষে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি পাননি। এবার সেই দুঃখ ঘুচিয়েছেন ১১৬ রান করে। আবাহনীর ২৭০ রানের ইনিংসে ৫০ পেরোতে পারেননি অন্য কেউ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৯ রান পঞ্চম উইকেটে এনামুলের সঙ্গে ১২১ রানের জুটি গড়া মোসাদ্দেক হোসেনের। আবাহনীর স্কোর ২৭০ হয়েছে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সানজামুল ইসলাম ৩২ বলে ৫৮ রান যোগ করাতেই। মিরাজ ১৮ বলে ৩৪ ও সানজামুল ১৫ বলে করেন ২৪।
এনামুলের মতো এদিন পাশের মাঠে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ব্রাদার্স ইউনিয়নের দেবব্রত দাস। তবে গাজী গ্রুপকে হারাতে পারেনি তাঁর দল। ব্রাদার্সের ভারতীয় ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ১১২ ও ইয়াসির আলীর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে (৩৬ বলে ৫৪) ৫ উইকেটে ২৭৩ রান করে ব্রাদার্স। জবাবে ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারালেও জাতীয় দলের দুই ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হকের ব্যাট পথ হারাতে দেয়নি গাজীকে। দ্বিতীয় উইকেটে ১১১ রান যোগ করেন তাঁরা। ফিফটি পেয়েছেন দুজনেই। ১৫ রানের মধ্যে দুজনেরই বিদায়ের পর বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা বাকিটা পথ পাড়ি দিয়েছে গুরকিরাত সিংয়ের ব্যাটে ভর করে। ৪৩ তম ওভারে ২৩৫ রানে অষ্টম উইকেট হারায় গাজী। এরপর চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশ দলে ডাক পাওয়া নাঈম হাসানকে নিয়ে ৪১ রান যোগ করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন গুরকিরাত। ভারতীয় ব্যাটসম্যান অপরাজিত ছিলেন ৮৮ বলে ৭১ রানে।
দিনের অন্য ম্যাচে মিরপুরে প্রাইম দোলেশ্বরকে ৫৫ রানে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ম্যাচসেরা নাঈম ইসলামের ৭৮, মুশফিকুর রহিমের ৬৫ ও ওপেনার আবদুল মাজিদের ৫৯ রানে ৭ উইকেটে ২৭২ রান তোলে রূপগঞ্জ। জবাবে মোশাররফ হোসেন আর আসিফ হাসানের ঘূর্ণিতে দিগ্ভ্রান্ত দোলেশ্বর অলআউট ২১৭ রানে। মোশাররফ ৪০ রানে ৪ ও আসিফ ৩ উইকেট নিয়েছেন ৪৬ রান দিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৭০ / ৭ (এনামুল ১১৬, মোসাদ্দেক ৪৯, মিরাজ ৩৪ *; রবিউল হক ৩ / ৪৭)। শেখ জামাল: ৪৫.৩ ওভারে ২২৩ (নুরুল ৮৩, সাক্সেনা ৪৩; মাশরাফি ৫ / ২৯, মিরাজ ২ / ৪৪)। ফল: আবাহনী ৪৭ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাশরাফি বিন মুর্তজা ও এনামুল হক।
ব্রাদার্স: ৫০ ওভারে ২৭৩ / ৫ (দেবব্রত ১১২ *, ইয়াসির ৫৪, জুনায়েদ ৪৩, অলক ৪১; নাঈম ২ / ২৯, রুহেল ২ / ৫৬)। গাজী গ্রুপ: ৪৯.১ ওভারে ২৭৬ / ৮ (গুরকিরাত ৭১ *, ইমরুল ৬৫, মুমিনুল ৫৭; নিহাদুজ্জামান ২ / ৪৩, রানা ২ / ৪৯, খালেদ ২ / ৫৭)। ফল: গাজী গ্রুপ ২ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: গুরকিরাত সিং।
রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৭২ / ৭ (নাঈম ৭৮, মুশফিক ৬৫, মজিদ ৫৯; সানি ৩ / ৪০, ফরহাদ রেজা ২ / ৭৫)। দোলেশ্বর: ৪৭.৫ ওভারে ২১৭ (শরিফউল্লাহ ৪১, ইমতিয়াজ ৩৫; মোশাররফ ৪ / ৪০, আসিফ ৩ / ৪৬)।
ফল: রূপগঞ্জ ৫৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাঈম ইসলাম।