Thank you for trying Sticky AMP!!

দুটি ম্যাচই আমরা জেতার জন্য খেলব

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

কলকাতার একটা পত্রিকা থেকে জানতে চাইল বাংলাদেশ-ভারত খেলা সম্পর্কে। বুঝতে পারলাম, খেলা আসতে অনেক দেরি থাকলেও দামামা বাজতে শুরু করেছে। কারণটা বুঝতে পারি। এসব খেলায় তো আর ১১ জন খেলোয়াড়ই খেলে না, খেলে আজ-কাল এবং ইতিহাসও। উপমহাদেশের বিষাক্ত রাজনীতিও খেলে, খেলে খেলারাম। খেলে প্রতিবাদ, খেলে অত্যাচারী ও অত্যাচারিতের ক্রোধ। দেশে দেশে খেললে এই জাতীয়তাবাদী দামামা বাজবেই। সবই বুঝি। কিন্তু এটাও সত্য, এই দামামা যতটা সম্ভব শালীনভাবে বাজানো দরকার, যাতে মানুষে মানুষে সম্পর্কের বায়ু আর বিষাক্ত না হয়।

তা ছাড়া আরও একটা কারণ বোধ হয় আছে দামামার। এই লেখা যখন লিখছি, তখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ছাড়া আর কেউই অতটা নিরাপদ ভাবার অবস্থায় নেই। এটাই তো দামামা বাজার সময়। তো সেই পত্রিকাকে চলতি পথে যেটা বলেছি, তার সারমর্ম হলো, বাংলাদেশ সামনের দুটো খেলাতেই জেতার সামর্থ্য রাখে। কিসের ভিত্তিতে এটা বললাম, তার ব্যাখ্যা দিয়েই আজকের কলাম হোক।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিট স্মরণকালের সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় আছে। প্রথম সাতজন ব্যাটসম্যানের চারজন দাঁড়িয়ে পড়লেই বাংলাদেশ পৃথিবীর যেকোনো বোলিং ইউনিটের সামনে তিন শতাধিক রান অনায়াসে তুলে দিতে পারবে, যদি এ ধরনের ব্যাটিং–ফ্রেন্ডলি পিচ থাকে। তামিম প্রায় প্রতিদিনই সলিডলি শুরু করছে। এখন শুধু একটা-দুইটা বড় ইনিংস উপহার দেওয়ার পালা। সেটা সামনেই হবে। সৌম্য নির্ভার খেললে পৃথিবীর যেকোনো বোলিং এলোমেলো করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। মুশফিক বহুদিন ধরেই আমাদের মি. ডিপেন্ডেবল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ডিফিকাল্ট জায়গায় ব্যাট করেও নিজের জাত চেনাতে ভুল করছে না। আশা করি তার ইনজুরি লম্বা হবে না এবং চোট কাটিয়ে সে একাদশেই থাকবে। লিটন দাসও ক্ষমতা রাখে ম্যাচের মোড় ঘোরানোর।

আর সাকিব? নিশ্চয়ই আমার আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই তার ব্যাপারে। সম্ভবত জীবনের সেরা ফর্মে আছে সে। ক্রিকেটের অলটাইম গ্রেটের তালিকায় বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড় অনায়াসে থাকবে। তার নাম সাকিব আল হাসান। সিরিজে এখন পর্যন্ত দারুণ ব্যাট করেছে সে। আর গত ম্যাচে বোলিংয়েও সে ফিরে এসেছে দুর্দান্তভাবে। এই মুহূর্ত পর্যন্ত সে এই বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। আর নেতৃত্বে আছে মাশরাফির মতো ইউনিফায়ার।

এই দল যেকোনো দলকেই হারানোর ক্ষমতা রাখে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের শুরু থেকেই বলছি, বিশ্বাস রাখুন এই দলের ওপর, উৎসাহ দিন। আমাদের যা আছে, তা আমাদের আছে; আমাদের যা নেই, তার জন্য হাহাকার করে এখন আমরা কিছু অর্জন করতে পারব না। আমাদের বোলিং অ্যাটাকে কেন একজন মিচেল স্টার্ক নেই, কেন একজন বুমরা নেই, অমুক নেই, তমুক নেই—এ আফসোস করে এখন আমাদের কাজ হবে না। আমাদের বোলিং অ্যাটাক এখন যা আছে, তারই সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে। আমাদের শক্তির জায়গাটার ওপর এখন খেলতে হবে, আমাদের শক্তির জায়গা ব্যাটিং, এটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজাতে হবে এবং আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশ দল এখন সেটাই করছে।

আমি জানি, চারদিকে সবাই উৎকণ্ঠায় আছে। নানা রকম হিসাব–নিকাশের চার্ট অনলাইনে ঘুরতে দেখছি। কে জিতলে কী হবে, কে হারলে কী হবে। আমি নিজেও এ রকম কয়েকটা পড়ার চেষ্টা করেছি। সব কটিই অথেনটিক, সব কটিই আলাদা। একটার সঙ্গে আরেকটার কম্বিনেশনের মিল নেই। কয়েকটা পড়ার পর মোটামুটি মাথা ঘুরতে শুরু করেছে। বাকিগুলোর দিকে তাই আর হাত বাড়াইনি। তার চেয়ে বরং দুই খেলায় জেতার দিকে মন দেওয়াই শ্রেয়। আমরা দুটি ম্যাচই জেতার জন্য খেলব। বাকিটা দেখা হবে রাজপথে!

মিছিলের ভিড় ঠেলে সামনে এসো, দুঃখের পৃষ্ঠা উল্টে দেখো স্বপ্নের বাগিচা, ঘরে বসে থেকে লাভ কী বলো, এসো চুল খুলে পথে নামি।