Thank you for trying Sticky AMP!!

নওয়াজের ওভাবে সরে যাওয়া আলোচনার জন্ম দিয়েছে

নওয়াজের ওভাবে সরে যাওয়া নিয়ে ক্রিকেটের আইন কী বলে

ম্যাড়মেড়ে এক ম্যাচ সব নাটকীয়তা নিয়ে হাজির হয়েছিল আজ। ১২৪ তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে জয় থেকে ৮ রান দূরত্বে ছিল পাকিস্তান। নিয়মিত কোনো বোলারকে আনার উপায় ছিল না। তাই নিজেদের সৃষ্ট ‘অমোঘ নিয়ম’ ভেঙে দুজন ডানহাতি ব্যাটসম্যানের সামনেই বল করতে এসেছিলেন অফ স্পিনার মাহমুদউল্লাহ। আগের ১৯ ওভারে একবারও বোলিং না করে শেষ ওভারে ৮ রান ঠেকানোর চেষ্টা করতে এসেছিলেন অধিনায়ক।

মহা নাটকীয় সে ওভারে প্রথম পাঁচ বলে একটি ছক্কা ও ৩ উইকেটের পতন ঘটল। কিন্তু মূল নাটকটি হয়েছে শেষ বলে। যখন মাহমুদউল্লাহর বল খেলার চেষ্টা না করে তা ছেড়ে দিলেন মোহাম্মদ নওয়াজ। আর সে বল গিয়ে ভাঙল স্টাম্প। একদিকে সমর্থকেরা আনন্দে মাতলেন, উইকেটকিপার নুরুল হাসানও জয়ের উল্লাস করতেই ছুটতে চাইছিলেন। কিন্তু ডেড বল ঘোষণা করলেন আম্পায়ার। নতুন করে আবার বল করতেই চার মারলেন নওয়াজ। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ। ক্রিকেটের আইনে কি বাংলাদেশ চাইলে ম্যাচ শেষ হওয়ার আবেদন করতে পারত?

আম্পায়ারের প্রায় পাশ থেকে বল করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ

শেষ বলে দুই রান দরকার ছিল। মাত্রই নামা নওয়াজ ব্যাটিং স্টান্স নিচ্ছিলেন। এমন অবস্থায় মাহমুদউল্লাহ দৌড়ে এসে বল করলেন, ওদিকে বল উইকেটে পিচ করছে এমন অবস্থায় হঠাৎ সরে যান পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। এ নিয়ে নুরুল হাসান বেশ অসন্তুষ্ট হলেও নওয়াজ ও আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলে আবার বোলিং মার্কে ফিরে গেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

প্রথমে মনে হয়েছিল ক্রিজের অনেক পেছন থেকে বল করাতেই হয়তো ছাড় পেয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ বল করার আগে মাহমুদউল্লাহ বেশ বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছিলেন। ক্রিজের অনেক পেছনে প্রায় আম্পায়ারের সমান্তরালে থাকা অবস্থায় বল করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার মার্ক ওয়াট বেশ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এটা ব্যবহার করেছেন। কাইরন পোলার্ডও প্রায়ই এটা করেন।

শেষ ওভারে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ

আম্পায়ারের সামনে থেকে বল করলেই সেটা বৈধ বল। ফলে এদিক থেকে কোনো সমস্যা ছিল না। বরং প্রস্তুত হওয়ার আগেই বোলার বল করেছেন, একে কারণ দেখিয়েই আজ পার পেয়ে গেছেন নওয়াজ। ভিডিওতে দেখা গেছে নওয়াজ মাথা মাত্র উঁচু করেছেন, এমন অবস্থায় বল করে ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ফলে স্টান্স নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাননি নওয়াজ। আর এ কারণেই সরে গেছেন তিনি। তবে সময়মতোই সরেছিলেন বলে আজ রক্ষা পেয়েছেন। যদি সে সময় সরে না গিয়ে মুহূর্তের উত্তেজনায় বল খেলে ফেলতেন, তখন সেটা বৈধ বল হিসেবেই গণ্য হতো।

ক্রিকেটের আইনে এ ব্যাপারে ২০.৪.২.৫ ধারায় বলা হচ্ছে, ‘যদি বল করার সময় ব্যাটসম্যান প্রস্তুত না থাকেন এবং বল করার পর সেটা খেলার চেষ্টা না করেন, তাহলে সে বল “ডেড বল” হিসেবে গণ্য করা হবে। আম্পায়ার যদি বিশ্বাস করেন, ওভাবে সরে যাওয়ার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে, তাহলে সে বলকে ওভারের অংশ হিসেবে ধরা হবে না।’

মাহমুদউল্লাহ ক্রিজ ঘেঁষে বল করেছিলেন

মাহমুদউল্লাহর অত পেছন থেকে বল করায় অবশ্য আরেকটি আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। আজ মাহমুদউল্লাহ বল করার সময় পা ক্রিজের একদম কাছে ছিল, অর্থাৎ পা ক্রিজের দাগ স্পর্শ করছে এমন মনে হচ্ছিল। দাগ স্পর্শ করলেই আম্পায়ার নো বল ডাকতে পারেন। কারণ, ক্রিকেটের আইনের ২১.৫ ধারা বলছে, ‘বোলারের বাঁ পা অবশ্যই ক্রিজের মধ্যে এবং ক্রিজ স্পর্শ না করে থাকতে হবে। আম্পায়ারের যদি মনে হয়, এই কন্ডিশন মানা হয়নি, তাহলে নো বল ডাকতে পারবেন।’ কিন্তু আগেই ‘ডেড বলে’র সংকেত দিয়ে ফেলায় আর এ নিয়ে আলোচনার অবকাশ নেই।