Thank you for trying Sticky AMP!!

নাঈমুর-হাবিবুল-মাশরাফিরাও উচ্ছ্বসিত

বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে ইনিংস ঘোষণার স্বাদ পেয়েছিলেন হাবিবুল। ফাইল ছবি
>

টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির একেকটা ধাপ পেরিয়ে যাওয়া কত কঠিন! এক সময় বাংলাদেশ নিয়মিত ফলো অনে পড়ত, ইনিংব ব্যবধানে হারত। ২০০৪ সালে প্রথম বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ঘোষণা করার স্বাদ পায়। আর এবার ফলো অন করিয়ে ইনিংস ব্যবধানে প্রথমবার হারানো গেল প্রতিপক্ষকে

ম্যাচ তখনো শেষ হয়নি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফলো অনে ফেলে বাংলাদেশ জয়ের পথে। নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত নাঈমুর রহমান মুঠোফোনে ফলো অনের খবর শুনে দারুণ খুশি। খেলা না দেখেও তিনি যেন দেখতে পেলেন, টেস্ট ক্রিকেটের বাংলাদেশ ঢুকে যাচ্ছে নতুন যুগে।

নাঈমুরের মতো বাংলাদেশ দলের প্রায় সব টেস্ট অধিনায়কেরই একই প্রতিক্রিয়া। ২০০০ সালে শুরু করে এই ১৮ বছরে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অগ্রগতির মাইলফলকই মনে করছেন এই সাফল্যকে। নাঈমুর যেমন বললেন, ‘এটা দারুণ একটা অগ্রগতি। উন্নতির পথে বড় একটা পদক্ষেপ। তবে এই একটি টেস্টের সাফল্য দিয়েই সব বিচার করা যাবে না। কাজটা নিয়মিতই করে যেতে হবে আমাদের খেলোয়াড়দের।’

হাবিবুল বাশার প্রথমেই বললেন, ‘এটা অবশ্যই বিশেষ কিছু।’ যেকোনো কন্ডিশনেই কাউকে ফলো অন করানো এবং ইনিংস ব্যবধানে হারানোটা তাঁর কাছে অনেক বড় ব্যাপার, ‘টেস্ট ম্যাচ জেতাটা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ, সেটি যেকোনো দলের বিপক্ষেই হোক না কেন। একটা টেস্ট জয় অনেকগুলো ওয়ানডে জয়ের সমান।’ তবে নাঈমুরের মতো তিনিও এমন একটা জয়েই আত্মতৃপ্তির সুযোগ দেখেন না, ‘এটা আমাদের উন্নতির লক্ষণ তো বটেই। তবে একটা জয়েই থেমে থাকলে চলবে না।’

আরেক সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ বাংলাদেশ দলের এই সাফল্যকে দেখছেন দুভাবেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফলো অনে ফেলে বিশাল জয় তুলে নেওয়াটা তাঁর চোখেও টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের নতুন দিনের সূচনা, উন্নতির পথে আরও এক ধাপ ওপরে ওঠা। তবে তাঁর বিশ্লেষণ বলছে, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই সিরিজে খুবই খারাপ খেলেছে। যে উইকেটে মাহমুদউল্লাহ সেঞ্চুরি করল, বাংলাদেশ পাঁচ শর ওপরে রান করল, সেখানে তারা নেমেই ৫ উইকেট হারিয়েছে।’ বাংলাদেশের স্পিনারদের নিয়ে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের বাড়তি আতঙ্কই এর কারণ বলে মনে করেন তিনি, ‘চট্টগ্রাম টেস্টের পর আমাদের স্পিনারদের ওরা বেশি ভয় পেয়ে যায়। সে জন্যই ব্যাটিংটা এত খারাপ হয়েছে ওদের।’

বাংলাদেশের অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনবার ফলো অন করার তিক্ত স্বাদ পেয়েছেন খালেদ মাসুদ, হাবিবুল বাশার ও মুশফিকুর রহিম। এই তিনজনের কাছে প্রতিপক্ষকে ফলো অন করানোটা তাই বাড়তি তৃপ্তির। নিজে এটির অংশ বলে মুশফিকের তৃপ্তিটা একটু বেশিই, ‘এটা আসলেই অনেক বড় ব্যাপার। এই সিরিজে আমরা দেখিয়েছি বাংলাদেশ দল আর আগের জায়গায় নেই।’

মাশরাফি বিন মুর্তজা টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতিটা দুই বছর ধরেই দেখছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্ট জয় থেকেই ওপরের দিকে উঠছে তাঁর দেখা উন্নতির গ্রাফ। তবে টেস্টে ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে এখনো কিছু জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন দেখছেন মাশরাফি, ‘ব্যাটিংয়ে আমাদের আরও বড় জুটি গড়তে হবে। ব্যাটসম্যানদের আরও বেশি ধৈর্য দরকার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেকোনো উইকেটে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য তৈরি করা। এটা না পারলে যত ভালো ব্যাটিংই করুন, আপনি টেস্ট জিততে পারবেন না। নিয়মিত ভালো উইকেটে খেলে বোলারদের এই সামর্থ্যটা আরও বাড়াতে হবে।’

এ ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্য দলগুলোর উদাহরণ টানলেন সাবেক টেস্ট ও বর্তমানে ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘সৌরভ গাঙ্গুলী ভারতের অধিনায়ক হওয়ার পর তারা কিন্তু এটাতেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল। টেস্টের পারফরম্যান্সে উন্নতি আনতে এ রকম অনেক দেশই প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করেছে। কারণ, টেস্ট জেতার এটাই প্রথম শর্ত। আমাদেরও এটা নিয়ে কাজ করতে হবে।’