নিউজিল্যান্ডে যেন ‘জেলে’ আছেন মিরাজরা
‘মনে হয়েছে জেলখানায় আছি।’
নিউজিল্যান্ডে পা রেখে সোজা ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের সেনাবাহিনীর তৈরি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ঢুকেছে বাংলাদেশ দল। এর মধ্যে কাটিয়েছে চারদিন। এই চারদিনেই যেন হাঁপিয়ে উঠেছেন ক্রিকেটাররা। মেহেদী হাসান মিরাজই যেমন নিজের কোয়ারেন্টিন অভিজ্ঞতাকে জেলখানায় থাকার সঙ্গে তুলনা দিলেন। নিউজিল্যান্ডে তিনটি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে গত বুধবার নিউজিল্যান্ডে গিয়ে পৌঁছায় বাংলাদেশ। করোনাকালে এটিই বাংলাদেশের প্রথম বিদেশ সফর। নিউজিল্যান্ডে পৌঁছে সরাসরি ক্রিকেটারদের কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়। যেখানে প্রথম সাত দিন একদমই কক্ষবন্দী থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে চারটি করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে ক্রিকেটাররা সাত দিন পর ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে অনুশীলনে যেতে পারবেন।
প্রথম করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসায় ক্রিকেটাররা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় নিজ কক্ষ থেকে বের হতে পারছেন। গতকাল থেকে দিনে দুই বেলা বের হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এক ভিডিও বার্তায় মিরাজ বলছিলেন তাঁর কোয়ারেন্টিন অভিজ্ঞতার কথা, ‘প্রথম তিন দিন তো রুমের ভেতরেই ছিলাম। তারপর আধা ঘণ্টা করে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছি সবাই। আমি যেদিন প্রথম বেরিয়েছিলাম (শনিবার), শুরুর দিকে মাথা একটু ঘুরছিল। তারপর আস্তে আস্তে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঠিক হয়ে গেছে। তিন দিন ঘরের ভেতর যে বন্দী ছিলাম, আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে, জেলখানায় আছি। খুব হতাশ লাগছিল।’
নিয়ম করে দুই বেলা বাইরে বের হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় যেন একটু স্বস্তিই পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা, ‘যখন বাইরে বের হলাম, আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিলাম, তখন ভালো লেগেছে। পরে যখন রুমে ফিরে গেছি, তখন নিজেকে একটু সতেজ মনে হয়েছে। সারা দিন রুমে থাকতে তো আর ভালো লাগে না। তিন-চার দিন রুমে কাটানো, একইভাবে...এটা আসলে একটু আমাদের জন্য অস্বস্তিকর। এই যে ত্রিশ মিনিটের জন্য বাইরে আসতে দেয়, এটা ভালো লাগে যখন রুমে ফিরে যাই।’
ঘরবন্দী সময়টা কাটাতে ফোনে কথা বলার পথটাই বেছে নিয়েছিলেন মিরাজ, ‘এই প্রথম হোটেলের ভেতর এ রকম বদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। প্রথম দিকে সময় কাটছিল না। কারও সঙ্গে দেখাই হয়নি। প্রথম দিনগুলোয় তো কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। ফোনে ফোনে কথা হয়েছে সবার সঙ্গে, এ রুম থেকে আরেক রুমে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। প্রথম দিকে একঘেয়ে লাগছিল, সময় কাটছিল না। এখন যেহেতু কয়েক দিন কেটে গেছে, আশা করি বাকি দিনগুলোও এভাবেই কেটে যাবে।’
এখন কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন মিরাজ। প্রথম সাত দিন শেষ হলেই বাইরে আরও বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা, ‘ছয়-সাত দিন পর যখন আমরা জিম এবং মাঠে যেতে পারব, তখন আমাদের ভালো লাগবে। এখন হয়তো সময়টা কাটছে না। জিমে আমরা যদি কিছু কাজ করতে পারতাম, তাহলে আমাদের জন্য সহজ হতো, সময়টা কেটে যেত, ফিটনেস ভালো হতো। সুযোগটা আর কয়েক দিন পর আসবে...আশা করি তখন ভালো হবে।’