Thank you for trying Sticky AMP!!

পাকিস্তানের বিপক্ষে 'সেরা'দের পাচ্ছে না বাংলাদেশ

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশ তাদের ‘সেরা’ ব্যাটসম্যান ও বোলারকে পাচ্ছে না সময়ের কারণে
নিষেধাজ্ঞার কারণে সাকিবকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ছবি: প্রথম আলো

১৭ বছর! দীর্ঘ ১৭ বছর পর পাকিস্তানে আবার টেস্ট খেলতে যাবে বাংলাদেশ। সেখানে সর্বশেষ টেস্ট খেলার স্মৃতি ভীষণ কষ্টের। মুলতান-কান্নার বয়স যে ১৭ ছুঁয়েছে! পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ টেস্ট চিরস্থায়ী শোকের দাগ রেখে গেছে। মুলতানের সে হার পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের খেরোখাতায় সবচেয়ে বড় ক্ষত। জয়ের খুব কাছে গিয়েও অধরা থেকে যাওয়ার ব্যথা।

তবে এ লেখা মুলতান টেস্ট নিয়ে নয়। পাকিস্তানের মাটিতে টেস্টের প্রসঙ্গ উঠলে অবচেতনভাবেই মুলতান-প্রসঙ্গ আসে সবার আগে। সময় মানুষের দুঃখ ভুলিয়ে দিলেও কিছু দুঃখ, সেই ১ উইকেটের হার চিরকালীন ‘ঘা’ হয়েই থাকবে। সে যাই হোক, পাকিস্তানের মাটিতে এ পর্যন্ত চারটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। জয় নেই। আছে একটি ইনিংস ব্যবধানে হার, বাকি তিনটিতে পাকিস্তানকে দুই ইনিংসে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে পেরেছে বাংলাদেশ।

হাবিবুল বাশার। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। প্রথম আলো ফাইল ছবি

এর মধ্য থেকেও ইতিবাচক কিছু খুঁজতে চাইলে টেস্টের ফল ক্রমান্বয়ে সাজাতে হবে—২০০১ মুলতান টেস্ট ; ইনিংস ও ২৬৪ রানে হার। ২০০৩ করাচি টেস্ট; ৭ উইকেটে হার। ২০০৩ পেশোয়ার টেস্ট; ৯ উইকেটে হার এবং ওই বছরই মুলতানে ১ উইকেটের হার। অর্থাৎ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ধীরে ধীরে বেড়েছে। প্রায় দেড় যুগ পর বাংলাদেশ যখন আবারও পাকিস্তানে যাচ্ছে দৃশ্যপট কিন্তু পাল্টেছে। আগের সেই অবস্থা আর নেই—এ কথা বলেন অনেকে। তবে অবস্থা যে খুব বেশি পাল্টেছে সেটিও কিন্তু না। অন্তত টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও ৬টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, সবই ঘরের মাটিতে। সব মিলিয়ে ১০ টেস্টের মধ্যে ৪টিতেই ইনিংস ব্যবধানে হার। ড্র একটি, ২০১৫ সালে খুলনায়। দ্বিতীয় ইনিংসে রেকর্ড জুটি গড়া তামিম ইকবাল (২০৬) ও ইমরুল কায়েসের (১৫০) রানের কল্যাণে। এবার প্রথম টেস্ট খেলতে দল যাবে ৪ ফেব্রুয়ারি। অভিজ্ঞদের নিয়েই গড়া হবে দল। তবে অভিজ্ঞতা যতই থাক, টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ কিন্তু তাদের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলারকে পাচ্ছে না। এ জন্য না চোট না অফ ফর্ম দোষী, দোষ যদি কাউকে দিতেই সেটি সময় কিংবা বয়সের।

হাবিবুল বাশার জাতীয় দল ছেড়েছেন এক যুগ হয়ে গেছে। এখন তিনি জাতীয় দলের নির্বাচক। সে হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ‘সেরা’ ব্যাটসম্যানকে থাকতে হচ্ছে মাঠের বাইরে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ টেস্টে ১ সেঞ্চুরিসহ ৫৫৪ রান করেছেন সাবেক এ অধিনায়ক। এরপর যিনি তাঁকেও পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ৪ টেস্টে ১ সেঞ্চুরিসহ ৪১২ রান তোলা সাকিব আল হাসান যে নিষেধাজ্ঞার কারণে মাঠের বাইরে। ৪ ম্যাচে ৩৩৬ রান নিয়ে তৃতীয় তামিম ইকবাল অবশ্য আছেন।

মোহাম্মদ রফিক। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। প্রথম আলো ফাইল ছবি

২০০৩ সালের পর পাকিস্তানে আর টেস্ট খেলতে যায়নি বাংলাদেশ। এরপর যে চারটি টেস্ট হয়েছে সবগুলোই বাংলাদেশের মাটিতে। ২০১১ ও ২০১৫ সালে। অর্থাৎ বাংলাদেশ দলের বর্তমান অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের প্রজন্ম শুধু এ চারটি টেস্ট পেয়েছে। সে হিসেবে রান কিংবা উইকেটে পিছিয়ে থাকা অস্বাভাবিক কিছু না। পাকিস্তানের মাটিতে হাবিবুল বাশার এখনো সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (৪ টেস্টে ৪৪৮); এটিও তার একটি কারণ।

উইকেটের প্রসঙ্গেও ফিরতে হচ্ছে হাবিবুলদের প্রজন্মে। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের মাটিতে ৩ টেস্টে ১৭ উইকেট নেওয়া সাবেক স্পিনার মোহাম্মদ রফিক এখনো সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। সমান টেস্টে ১১ উইকেট নিয়েছেন খালেদ মাহমুদ। বর্তমান টেস্ট দলের স্পিনার তাইজুল ইসলাম ২ টেস্টে নিয়েছেন ১০ উইকেট। সাকিব ৪ টেস্টে ৯ উইকেট। লক্ষণীয় বিষয়, শীর্ষ চারের মধ্যে তিনজনই বাঁ হাতি স্পিনার।

ব্যাটিং গড়ে সাকিব (৬৮.৬৬) ও ইমরুল কায়েস (২ টেস্টে ২৪৯ রান ; ৬২.২৫) বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। সাকিব না থাকায় দলে এমনিতেই শূন্যতা। ইমরুল কিছুদিন আগেও চোটে ভুগেছেন। টেস্ট দলে ফিরবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত না। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট শুরু ৭ ফেব্রুয়ারি।