Thank you for trying Sticky AMP!!

দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন ল্যাথাম।

বাংলাদেশকে পেলেই খেপে ওঠেন ল্যাথাম

বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচটি পারলে ভুলে যেতে চাইবেন। সিরিজ বাঁচামরার ম্যাচে জয় থেকে অর্ধেক দূরে থাকা অবস্থায় নেমেছিলেন। এক বল খেলেই আউট। তাও আবার রানআউট! টম ল্যাথামের প্রথম বাংলাদেশ সফরটা ভালো কাটেনি একদম। দ্বিতীয় ম্যাচে পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই একটা ইনিংস খেলেছিলেন, কিন্তু দলের হার আটকাতে পারেননি। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসে ধবলধোলাইয়ের তেতো স্বাদ নিয়ে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে।

এর প্রতিশোধ বলেকয়ে নিচ্ছেন ল্যাথাম। আজও আরেকবার নিলেন। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ভালোই বিপদে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। ২৭২ রানের লক্ষ্যে ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল স্বাগতিক দল। সেখান থেকেই দলকে ৫ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন আপৎকালীন অধিনায়ক। বাংলাদেশি ফিল্ডারদের মাখন–গলা হাত যদিও তাঁকে সাহায্য করেছে, তাও তাঁর অপরাজিত ১১০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটির গুরুত্ব কমছে না।

দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন ল্যাথাম।

১১তম ওভারে ৩ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডের ওপর চেপে বসার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। মেহেদী হাসানের বোলিং বেশ অস্বস্তিতে ফেলছিল তিনে নামা ডেভন কনওয়ের। কিন্তু স্পিনের বিপক্ষে এতটাই স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন ল্যাথাম যে অন্য প্রান্তেও কনওয়ে ছন্দ ফিরে পেলেন। দুজনে মিলে বাড়তি কোনো ঝুঁকি না নিয়েই রানের গতিটা ধরে রেখেছেন। শুধু স্ট্রাইক পরিবর্তন করেই ম্যাচের লাগাম নিজেদের পক্ষে নিয়ে গেছেন দুজন।

১১৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটির পরও বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার আশা দেখেছিল। ব্যক্তিগত ৭২ রানে কনওয়ে রানআউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরই দুটি বড় সুযোগ দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ১৬৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছিল স্বাগতিক দল। ১৭১ রানেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন উইকেটে আসা জিমি নিশাম। উইকেটরক্ষকদের জন্য সহজ এক ক্যাচ ফেলে দেন মুশফিক। সে ওভারেই ল্যাথামের দেওয়া কঠিন ক্যাচ ধরতে পারেননি মিঠুন। পরের ওভারেই সে ভুল শোধরানো যেত। কিন্তু এবার নিজের বলে নিজে ক্যাচ ফেলেছেন মেহেদী হাসান। ল্যাথামের রান তখন ৫৮, নিউজিল্যান্ডের ১৮১।

মিচেলকে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে এসেছেন ল্যাথাম।

এরপর কি আর ম্যাচে টিকে থাকা যায়? বিশেষ করে ক্রিজে যেখানে আছেন ল্যাথামের মতো একজন, যিনি বাংলাদেশকে পেলেই জ্বলে উঠতে পছন্দ করেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে হারের স্বাদ পাওয়া ল্যাথাম ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটি খেলেছিলেন তৃতীয় দেখাতে। এরপর থেকেই বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত তিনি। প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ৪৩ রান করা ল্যাথাম পরের ৮ ম্যাচে পাঁচটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন, তুলেছেন ৪৭০ রান। আজসহ বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ ইনিংসে ব্যাট করেছেন, তাতে পাঁচবার পঞ্চাশ পেরিয়েছেন। যার মধ্যে দুবার ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক। ওয়ানডেতে একমাত্র বাংলাদেশের বিপক্ষেই তাঁর একাধিক সেঞ্চুরি আছে।

ল্যাথাম তাই জয় না নিয়ে মাঠ ছাড়েননি। ৭৬ রানের জুটি গড়ে নিশাম ফিরে যাওয়ার পরও কোনো চাপ নেননি। ২৭ বলে ৩০ রানের লক্ষ্যটা অনায়াসে শেষ করে এনেছেন। ইনিংসের শেষ ১০ বল অপ্রয়োজনীয় ঠেকে নিউজিল্যান্ডের। ১১০ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের রান ও গড় দুটোই বাড়িয়ে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কিউই অধিনায়ক। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ ইনিংসেই ল্যাথামের রান এখন ৫১৩, আর গড় ৫৭। অথচ ১০১তম ওয়ানডে খেলতে নামা ল্যাথামের ওয়ানডে গড় মাত্র ৩৪.২১। বাংলাদেশকে নিজের প্রিয় প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছেন ল্যাথাম। বাংলাদেশ ছাড়া নিয়মিত খেলেন—এমন আর মাত্র একটি দলের বিপক্ষেই ৫০-এর ওপরে গড় ল্যাথামের, সেটি ভারত (৫৩.৯২)।

এমনিতেই সিরিজ হার নিশ্চিত। তৃতীয় ম্যাচে মোস্তাফিজ-তাসকিনরা ল্যাথামকে থামানোর কোনো উপায় বের করতে পারেন কি না, এখন সেটাই দেখার বিষয়।