Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশেই ক্যারিয়ার শেষ হয়েছিল, মনে আছে আজমলের?

মোস্তাফিজের অসাধারণ বোলিং বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে এশিয়া কাপের ফাইনালে। ছবি: এএফপি
>
  • বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন হার লজ্জার মনে করেন আজমল
  • পাকিস্তানের নাম শুনেই বাংলাদেশ হেরে যেত, দাবি সাবেক স্পিনারের

শ্রীলঙ্কা আগে ভাগেই বিদায় নেওয়ায় পাকিস্তান আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভারত ফাইনালে উঠেছে। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ জেতার পর পাকিস্তান হয়তো আশা করেছিল, প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ফাইনালে তারাই খেলবে। কিন্তু দুর্দান্ত বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে পাকিস্তান। ফলে এশিয়া কাপে প্রথমবারের মতো ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল দেখার স্বপ্নটাও গুঁড়িয়ে গেছে দুই দেশের। পাকিস্তানের সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়দের হতাশার কারণটা তাই বোঝাই যায়। তবে সে হতাশা প্রকাশ করতে গিয়ে বাংলাদেশকে অপমান করেছেন সাইদ আজমল।

ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে পাকিস্তান। আফগানিস্তানের সঙ্গে শেষ ওভারের জয়ের পরও সে হারগুলো পোড়াচ্ছে আজমলকে। বলেছেন, ‘ভারতের বিপক্ষে আমরা ওদের বাচ্চার মতো খেলেছি।’ উত্তরসূরিদের এভাবে অপমান করে ক্ষান্ত হলেও চলত আজমলের। কিন্তু বর্তমান পাকিস্তান দলের অবস্থা বোঝাতে বাংলাদেশ দলকেও টেনে এনেছেন। এবং সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশকেও অপমান করেছেন তিনি।

কাল বাংলাদেশের ২৩৯ তাড়া করতে নেমে ৩৭ রানে হেরেছে পাকিস্তান। তবে পরাজয়ের ব্যবধানে বোঝা যাচ্ছে না, পাকিস্তান বহু আগেই হার স্বীকার করে নিয়েছে। ব্যবধান পঞ্চাশের বেশি থাকা অবস্থাতেই ৯ উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত অলআউট না হলেও হারের ধরনটা জ্বলুনি বাড়াতে বাধ্য যে কোনো পাকিস্তানি সমর্থকের। এমন হারে লজ্জা পেয়েছেন আজমল। তাঁর চোখে বাংলাদেশের কাছে এমন হার মেনে নেওয়া যায় না। পাক নেশনের সঙ্গে কথোপকথনে বলেছেন, ‘এ দলগুলো (বাংলাদেশ) এক সময় পাকিস্তানকে ভয় পেত। তারা এক সময় পাকিস্তানের নাম শুনেই হেরে যেত। এখন এ দলগুলোর বোলার আমাদের ব্যাটসম্যানদের দিকে চোখ রাঙায়। আমাদের হুমকি দেয়। অবস্থা এখন এ পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পারফরম্যান্স এত বাজে ছিল যে আমার দেখতেই লজ্জা লাগছিল।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি দাপুটে জয় বাংলাদেশের। ছবি: এএফপি

বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ভয় পেত শুনেই মনে হতে পারে, পাকিস্তানকে বাংলাদেশ হয়তো এর আগে কখনো হারায়নি। এই প্রথম বোধ হয় পাকিস্তানকে হারাতে পেরেছে বাংলাদেশ। আজমল হয়তো ভুলেই গেছেন মুখোমুখি লড়াইয়ে গত চারটি ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে এসে ধবল ধোলাই হয়েছিল তারা। এশিয়ার কোনো দলের বাংলাদেশে ধবল ধোলাই হওয়ার প্রথম ও শেষ ঘটনা এটি। আর টানা তিন ম্যাচেই ম্যাচের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এমন দাপুটে জয় বাংলাদেশ কখনো কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পায়নি। যে দুই ম্যাচে রান তাড়া করেছে, দুটোতেই ৪০ ওভারের আগে ম্যাচ শেষ হয়েছিল।আগে ব্যাট করা ম্যাচেও বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেছিলেন, তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান হার মেনেছে প্রায় ৫ ওভার আগেই। গতকালের ম্যাচেও ঠিক তাই হয়েছে।

এরপরও মনে হতে পারে আজমল হয়তো এ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছেন। তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের এমন প্রতাপ সরাসরি দেখা হয়নি তাঁর। আর এ কারণেই হয়তো তাঁর গায়ে এভাবে বিছুটি লেগেছে। কিন্তু আজমল হয়তো ভুলেই গেছেন, তাঁর ক্যারিয়ারটা বাংলাদেশই শেষ করেছে।

২০১৫ সালে বোলিং অ্যাকশন নিষিদ্ধ প্রমাণিত (খুব বেশি নয়, নির্দিষ্ট সীমার চেয়েও প্রায় ২৫ ডিগ্রি বেশি বাঁকাতেন এই অফ স্পিনার) হওয়ায় বিশ্বকাপে খেলা হয়নি তাঁর। প্রত্যাবর্তনেই বাংলাদেশে এসেছিলেন। প্রথম ম্যাচে ১০ ওভারে ৭৪ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। দ্বিতীয় ম্যাচে ১ উইকেট পেলেও তাতে জায়গা ধরে রাখতে পারেননি দলে। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বাদ পড়েছেন একাদশ থেকে। ওয়ানডে ক্যারিয়ার ওখানেই থেমেছে তাঁর। এক সপ্তাহের মধ্যেই টি-টোয়েন্টিতে শেষ সুযোগ মিলেছিল। কিন্তু নখদন্তহীন বোলিংয়ে সেটাও হেলায় হারিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটাও সেদিনই শেষ হয়েছে তাঁর।

দুঃখিত আজমল, বাংলাদেশ ‘এখন’ চোখ রাঙাচ্ছে, এ কথা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের চোখ রাঙানি দেখেই ক্যারিয়ার শেষ করেছেন আপনি। এমন ‘লজ্জা’ দেওয়া পারফরম্যান্স নিজেই করে দেখিয়েছেন মাঠে।