Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ কোচের এই কথা ভালো লেগেছে মাহমুদউল্লাহর

ভারতের বিপক্ষে হায়দরাবাদে টেস্টে ৬৪ রানের ইনিংসটা খেলার পথে মাহমুদউল্লাহ। ফাইল ছবি

আরেকটি ভারত সফর সামনে। বাংলাদেশ একবারই ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলেছে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে হায়দরাবাদ টেস্টে বাংলাদেশে হারে ২০৮ রানে। আরেকটা সেশন কাটিয়ে দিতে পারলেই টেস্ট ড্রয়ের আনন্দ নিয়েই ভারত থেকে ফিরতে পারত মুশফিকুর রহিমের দল। শেষ দিনে ড্রয়ের আশা জাগিয়েছিল আসলে মাহমুদউল্লাহর ৬৪ রানের ইনিংসটা। আরেকটি ভারত সফর যখন সামনে, এবার মাহমুদউল্লাহ চান পুরোনো দুঃখে প্রলেপ দিতে।

শুধু কী টেস্ট, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ গত তিন বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে চারটি ম্যাচ হেরেছে খুব কাছে গিয়ে। এর মধ্যে দুটিতে জড়িয়ে মাহমুদউল্লাহর নাম। ভারত এমনিতেই শক্তিশালী এক দল। নিজেদের মাঠে তো আরও। এই ভারতের বিপক্ষে কঠিন এক সিরিজই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। দেশের বাইরে শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলতে নামলে বাংলাদেশ ‘ভালো খেলা’র লক্ষ্যটাই সাধারণত বলে। এবার শুধু ভালো খেললে হবে না, জিততে হবে। না জিতলে হারাতে হবে পয়েন্ট। ভারত সফর দিয়েই যে শুরু বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশ দলের অন্যতম ভরসা মাহমুদউল্লাহ কাল প্রথম আলোকে জানালেন এই সফর নিয়ে তাঁর আশা-স্বপ্নের কথা—

>ভারতের বিপক্ষে যে কটা ম্যাচে কাছে গিয়ে হেরেছি, শেষ দিকে গিয়ে ফিনিশ করতে পারিনি। পুরো ম্যাচে কিন্তু ভালো খেলেছি, শেষ অংশে গিয়ে পারিনি। মনস্তাত্ত্বিক বাধা, নাকি আমরাই পারিনি, নিশ্চিত না।

* চলমান ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজ নিশ্চয়ই দেখছেন?
মাহমুদউল্লাহ: (হেসে) হ্যাঁ, ভারতের বোলিং দেখছিলাম। ভাবছি আমাদের বিপক্ষে ওদের সম্ভাব্য বোলিং আক্রমণ কী হতে পারে? তামিম-মুশির (মুশফিক) সঙ্গে আলাপ করছিলাম, কারা কারা আমাদের বিপক্ষে খেলতে পারে।

* ভারত সফর দিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হচ্ছে। এখন তো শুধু ভালো খেললে হচ্ছে না। পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারও আছে। নির্দিষ্ট কী লক্ষ্য নিয়ে ভারতে যাবে বাংলাদেশ?
মাহমুদউল্লাহ: গত ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনাল শেষে আমরা যখন বসলাম, কোচ রাসেল ডমিঙ্গো একটা কথা বলল, ‘এই যে আমরা ড্রেসিংরুম আজ ছাড়ব, ছাড়ার সময় সবাই যেন ভাবতে থাকি ভারতে গিয়ে কী করব। চিন্তা করব না কীভাবে সিরিজ জিতব, চিন্তা করব কীভাবে ম্যাচ জিতব। আমরা ম্যাচ জিতব—সবাই যেন এই বিশ্বাসটা ভেতরে–ভেতরে লালন করতে থাকি। কাজ হতেও পারে, না–ও হতে পারে। যদি এভাবে চিন্তা করতে পারি সবাই, ওখানে যাব ম্যাচ জিতব। ক্রিকেট একটা দলীয় খেলা। সবাই কম-বেশি কষ্ট করছি। সবার চিন্তাভাবনা যখন এক হয়, তখন সেটা অনেক শক্তিশালী হয়।’ কোচের এই কথা ভালো লেগেছে। আমরা এটাই ভাবছি, ওখানে গিয়ে আমরা ম্যাচ জিতব। জানি এটা কঠিন হবে। সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন সিরিজ, কঠিন কাজ আমাদের। কঠিন তবে অসম্ভব নয়।

* হায়দরাবাদ টেস্টে বাংলাদেশ প্রায় ড্রয়ের কাছাকাছি গিয়েছিল। এক সেশন টিকে গেলেই হতো। এখন কি মনে হয় সেই টেস্টের চেয়ে আরেক ধাপ এগোনোর সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে?
মাহমুদউল্লাহ: আমি বিশ্বাস করি আমাদের সে সামর্থ্য আছে। তবে সব সময়ই মনে করি টেস্ট ক্রিকেটের মেজাজটা ধরা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কখন রান করতে হবে, কখন টিকে থাকতে হবে, এ জিনিস বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কখন স্ট্রোক খেলতে পারবেন, কখন খেলতে পারবেন না, এটা বোঝা জরুরি। কখন বল সুইং করছে, কখন রিভার্স করছে, এটা বুঝে সুযোগ কাজে লাগাতে হয়। আমরা অনেক সময় বুঝি, বুঝেও ভুল করি। ক্রিকেটে অনেক উপায় থাকে রান করার। নিল (ম্যাকেঞ্জি, দলের ব্যাটিং কোচ) বলছিল, ‘রান তোলার অনেক উপায় আছে। কিন্তু আগে বুঝতে হবে কখন রান তুলতে পারবে, কখন পারবে না।’ বোলারদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

* ভারতকে হারাতে হলে তো তাদের ২০ উইকেট নিতে হবে। ভারতের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের বোলারদের?
মাহমুদউল্লাহ: আমাদের স্পিন বিভাগ অনেক ভালো। সাকিব, তাইজুল, মিরাজ, নাঈম—সবাই খুব ভালো বোলার। পেস বোলিং আক্রমণে আরও উন্নতি করতে হবে। মোস্তাফিজ আছে। তাসকিন যদি ফিট হয়, ইবাদত সম্ভাবনাময়। অনেক পরিশ্রম করতে হবে। সহজে শূন্য ভাগও ফল পাওয়া যাবে না। ১১০ ভাগ দিয়ে যদি সফল হতে পারেন। দল হিসেবে আমাদের কিছু করার এটাই সেরা সুযোগ।

* গত তিন বছরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ বেশ কিছু ম্যাচ হেরেছে খুব কাছে গিয়ে। তীরে এসে এ তরি ডোবা কি পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক?
মাহমুদউল্লাহ: মনস্তাত্ত্বিক বাধা কি না বলতে পারব না, তবে কেন যেন কাছে গিয়ে বেশ কিছু ম্যাচ আমরা হেরেছি। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে আমার একটা ভুল ছিল। আমার ভুলের কারণে ম্যাচটা হেরেছি। নিদাহাস ট্রফিতেও হারলাম। মনস্তাত্ত্বিক বাধা কি না জানি না, কেন যেন শেষটা ভালোভাবে করতে পারি না। ভারতের বিপক্ষে যে কটা ম্যাচে কাছে গিয়ে হেরেছি, শেষ দিকে গিয়ে ফিনিশ করতে পারিনি। পুরো ম্যাচে কিন্তু ভালো খেলেছি, শেষ অংশে গিয়ে পারিনি। মনস্তাত্ত্বিক বাধা, নাকি আমরাই পারিনি, নিশ্চিত না।

বাংলাদেশের ভারত সফর সূচি:

৩ নভেম্বর- প্রথম টি-টোয়েন্টি

৭ নভেম্বর- দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি

১০ নভেম্বর- তৃতীয় টি-টোয়েন্টি

১৪-১৮ নভেম্বর- প্রথম টেস্ট

২২-২৬ নভেম্বর- দ্বিতীয় টেস্ট