Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আমি

>
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ দেখতে জয়া গিয়েছিলেন ওভালে। ছবি: সংগৃহীত
লন্ডনে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান। সঙ্গে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাচ-গানের পাশাপাশি বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে এবার যোগ হয় ১০ দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা অতিথিদের নিয়ে ‘স্ট্রিট ক্রিকেট’। ৬০ সেকেন্ডের ক্রিকেট চ্যালেঞ্জে দেশের জার্সিতে জয়া আহসানের এই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? জানালেন ঈদ উপহারে…

অনেকটা হুট করেই ২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সঙ্গে জুড়ে গেলাম। আমার নিমন্ত্রণকর্তা ছিল এবারের আসরের স্বাগতিক দেশ ইংল্যান্ড আর আইসিসি। তারা জানিয়েছিল, নিজ দেশের একজন কিংবদন্তী ক্রিকেটারের সঙ্গে আমাকে একজন তারকা ক্রিকেটভক্ত হিসেবে এ আসরের অংশ হতে হবে। শুরুতে যাব কি না, এমন একটা দ্বিধা ছিল মনে। পরে যখন জানলাম, যেখানে অন্য সব দেশ থেকে দুজন প্রতিনিধি যাচ্ছেন, সেখানে আমি না গেলে বাংলাদেশ থেকে একজন কমে যাবে, তখন অল্প সময় থাকা সত্ত্বেও রাজি হয়ে গেলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাত্র এক দিন আগে উড়ে গেলাম লন্ডনে। ফলে দম ফেলার ফুরসতই পাইনি। অনুষ্ঠানে কে কীভাবে কোথায় ঢুকবেন, কোথায় আয়োজন—তখন-তখনই ওরা বুঝিয়ে দিল সব।

স্যার ভিভ রিচার্ডস ও আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে জয়া আহসান

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জন্য চার বছর ধরে মানুষের কী অধীর প্রতীক্ষা! আর বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রিকেটের আসরে ঢোকার জন্য ক্রিকেটারদের অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর, অনেক ধাপ পেরিয়ে, কঠোর অনুশীলন করে। অনেকের তো জীবনই পার হয়ে যায়। ঢোকাই হয়ে ওঠে না। আমার কী সৌভাগ্য! আমি কিনা জীবনে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট ব্যাট হাতে নিলাম এই আসরে এসেই! ভাবা যায়? অবশ্য আমাদের সবটাই ছিল আনন্দে মেশানো, লঘু মেজাজের। তবু দারুণ এক অভিজ্ঞতা হলো।

পরের দিন মহড়া। আমরা ১০ দেশের অতিথিরা বাসে করে রানির বাড়ি বাকিংহাম প্যালেসের সামনে দ্য মলে গিয়ে পৌঁছালাম। আমার পাশে বসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ব্রেট লি। বাসে যেতে যেতেই কথা হলো তাঁর সঙ্গে। তিনি আলাপ শুরু করলেন আমি ঢাকা থেকে এসেছি, নাকি চট্টগ্রাম থেকে—এই প্রশ্ন দিয়ে। এরপর তো অনেক কথাই হলো।

ব্রেট লির সঙ্গে

যাহোক, মহড়া শুরু হলো। তাল মিলিয়ে শুরু হলো বৃষ্টিও। আমি এমনিতেই শীতকাতুরে। দ্রুতই কাবু হয়ে গেলাম। সাবেক ক্রিকেটার রাজ্জাক ভাই, মানে আবদুর রাজ্জাকও গিয়েছিলেন সঙ্গে। তাঁকে বললাম, আমি তো খেলতে পারি না, অভিনয় পারি। তাই আপনি খেলবেন আর আমি খেলার অভিনয় করব।

অনুষ্ঠান শেষ হলো কাঁটায় কাঁটায়। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের অনেক দর্শক এসেছিলেন অনুষ্ঠান দেখতে। কথা হলো বাংলাদেশিদের সঙ্গে। ছবিও তোলা হলো। অন্য দেশের দর্শকেরাও ছবি তুললেন আমার সঙ্গে।

আমার ছোট ভাই অদিত থাকে লন্ডনে। লন্ডনে গিয়ে যে এক দিনের জন্য ওকে পেয়ে গেলাম, সেটাই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের। সময় কম ছিল, কিন্তু মধুর।

সঙ্গে ছিলেন ফারহান আখতারও

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার স্যার ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ায় আমার আনন্দ বেড়ে গিয়েছিল বহুগুণ। ১৯৯৯ সালেও একবার তাঁর পাশে বসে বেশ কয়েকটি ম্যাচ দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। সে কথা জানালাম তাঁকে। সেবার যে তাঁর ছবি তুলেছিলাম আর অটোগ্রাফ নিয়েছিলাম, সে কথাও জানালাম। তিনি জানতে চাইলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্প সম্পর্কে। এ কথাও বললেন যে বাংলাদেশ দলটা এবার বেশ ভালো।

স্যার ভিভ রিচার্ডস, অলিম্পিকজয়ী ক্রীড়াবিদ ইয়োহান ব্লেক আর বলিউড তারকা ফারহান আখতারের সঙ্গে ফুটবল নিয়েও আলাপ জমে গিয়েছিল। ফটোশুট আর সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আমি আমার হাতব্যাগটি ছোট ভাইয়ের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছিলাম। তা–ই দেখে ভিভ আর ফারহান মিটিমিটি হেসে ওকে বললেন, ‘আমাদের সবাইকেই এ অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে!’

ব্যাট হাতে জয়া

সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইও এসেছিলেন অনুষ্ঠানে। আমাদের পরিচয় হলো। মালালা বললেন, আমি যে অভিনয় করি, তা তিনি আগেই জানতে পেরেছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরদিন প্রথম খেলা দেখলাম মাঠে গিয়ে। অনিল কুম্বলে, জ্যাক ক্যালিসসহ অনেকেই এসেছিলেন। খেলা শেষেই ফিরতি ফ্লাইটে রওনা দিলাম কলকাতায়। ওখানে অপেক্ষা করছে টেলিসিনে অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার।