Thank you for trying Sticky AMP!!

বেতন কমবে জেনেও লড়ল জিম্বাবুয়ে

শেষ দিনে ভালো লড়াই করেছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। ছবি: এএফপি
>হারারে টেস্টে লড়াই করেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র মেনে নিতে বাধ্য হলো জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ে: ৪০৬ ও ২৪৭/৭ ডিক্লেয়ার। শ্রীলঙ্কা: ২৯৩ ও ২০৪/৩।

যাহ, বাগে পেয়েও হলো না!

হারারে টেস্টে চোখ রাখা নিরপেক্ষ ক্রিকেটপ্রেমীরা এমন ভাবতেই পারেন। শ্রীলঙ্কা টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত শক্তি। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট খাদের কিনারায়। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ কষ্ট দেবে যে কোনো ক্রিকেটপ্রেমীকে। সিরিজ শেষেই বেতন কমবে তা জেনেও হারারে টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে মরিয়া চেষ্টা করেছেন শন উইলিয়ামস-সিকান্দার রাজারা। কুশল মেন্ডিসের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে সেটি আর হয়নি। উইলিয়ামসদের দুঃখের ষোলো কলা যেন পূর্ণ হলো!

শ্রীলঙ্কাকে জয়ের জন্য ৩৬১ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। হাতে ছিল প্রায় এক দিন। টেস্টের শেষ দিনে হারারের ভাঙা উইকেটে যে কোনো দলের জন্যই সারা দিন ব্যাট করা চ্যালেঞ্জের। ওদিকে ছয় বোলার ব্যবহার করেছেন উইলিয়ামস। কিন্তু ‘অস্ত্রাগার’-এ কার্যকর তির না থাকায় লক্ষ্যভেদ হয়নি—মানে ৮৭ ওভার ব্যাট করেছে শ্রীলঙ্কা। দিনের খেলা শেষ হওয়ার প্রায় ১০ ওভার বাকি থাকতে ড্র মেনে নেয় দুই দল। তার আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ২০৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ১১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মেন্ডিস। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এ সিরিজে তথ্য উপাত্ত সম্ভবত কেউ মনে রাখবে না, শুধু জিম্বাবুয়ের লড়াইটা!

টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ষষ্ঠ দলটির বিপক্ষে প্রথম টেস্টও পাঁচ দিনে টেনে সাধ্যমতো লড়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু এ টেস্ট ছাপিয়ে গেছে আগের লড়াই। র‌্যাঙ্কিংয়ে ১১তম দলটি এক সময় তো জয়ের সুবাসই পাচ্ছিল। শেষ দিন সকালের সেশনে মাত্র এক বল (ছক্কা) খেলে ৭ উইকেটে ২৪৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে জিম্বাবুয়ে।৩৬১ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পর অনেকেই ভেবেছেন, জিম্বাবুয়ে উপমহাদেশের বৃত্ত পূরণ করলেও করতে পারে! ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশকে টেস্টে হারানোর পর শ্রীলঙ্কাও? তাতে উপমহাদেশের সব দলের বিপক্ষে টেস্টে জয়ের মুখ দেখত জিম্বাবুয়ে। কিন্তু লঙ্কানদের দৃঢ়তায় বাড়ল অপেক্ষা। সাত বোলার ব্যবহার করে শ্রীলঙ্কার মাত্র ৩ উইকেট নিতে পেরেছেন উইলিয়ামস। তবে প্রথম ইনিংসে চারশোর্ধ্ব সংগ্রহ তোলা মনে রাখবেন জিম্বাবুয়ের সমর্থকেরা।

এদিকে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারেরা মনে রাখবেন, জয় তুলে নিতে না পারার কষ্ট সঙ্গে বেতন হ্রাস। দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান তাভেঙ্গা মুকুহলানির ভাষ্য, টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত, ‘হ্যাঁ, বেতন কমাতে হবে। সুন্দর আগামী নিশ্চিত করতেই আজ ছাড় দিতে হবে। আশা করি সবাই মেনে নেবে।’ জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের আর্থিক সমস্যা নতুন কিছু না। বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের জন্য গত বছর জিম্বাবুয়েকে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি। ছিল দুর্নীতির অভিযোগও। তখন তহবিল সরবরাহ করাও বন্ধ করেছিল আইসিসি। গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়েকে ফিরিয়ে আনে আইসিসি।

জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারেরাও মাঠে (জয়ে) ফেরার চেষ্টা করলেন সাধ্যমতো। দুর্ভাগ্য, ভাগ্য সাহসী ও সামর্থ্যবানদের সহায় হয়।