Thank you for trying Sticky AMP!!

মাশরাফির পর কে

রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও শফিউল ইসলাম। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানিয়েছেন। টেস্ট খেলছেন না দীর্ঘদিন। ওয়ানডেকেও বিদায় জানানোর সময় ঘনিয়ে আসছে। জাতীয় দলে মাশরাফির পর কে হবেন পেস বোলিংয়ের নেতা?

বাংলাদেশ দলে পেস বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বটা প্রায় দুই দশক ধরে পালন করে আসছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় এসে ইনজুরি ও অফ ফর্মের ছায়াটা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মাশরাফি সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০০৯ সালে, ২০১৭ সালে জানিয়েছেন টি-টোয়েন্টিকে বিদায়। ওয়ানডেতেও স্পাইকজোড়া পুরোপুরি তুলে রাখার সময়টা এসেই গেছে বলা যায়। কিন্তু ক্রিকেট তো থেমে থাকবে না। মাশরাফির জায়গায় নতুন কেউ পেস বোলিং আক্রমণের নেতা হবেন। তিনি কে?

বেড়ে ওঠার সময়টায় মিড অন, মিড অফে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসদের পেয়েছেন তরুণ শোয়েব আখতার, আবদুল রাজ্জাকরা। ভারতে জাভাগল শ্রীনাথের পর গুরুর দায়িত্বে ছিলেন জহির খান। তাঁদের দেখানো পথ ধরেই তৈরি হয়েছে আজকের ভারতের পেস আক্রমণ। চামিন্দা ভাস থাকতে থাকতে এসেছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। মালিঙ্গাও চলে গেছেন, কিন্তু ধীরে ধীরে উত্থান ঘটছে নুয়ান প্রদীপদের। মাশরাফিকে কাছ থেকে দেখা বাংলাদেশের পেসারদের সামনেও এখন সেই পরীক্ষা। হাল ধরতে হবে পেস আক্রমণের।

রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলামদের সঙ্গে হালের মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরাও ৩০ গজের মধ্যে পেয়েছেন মাশরাফিকে। লাইন-লেন্থ একটু এদিক-ওদিক হলেই কাঁধে হাত রেখে পরামর্শ দিতেন। কখনো কঠিন, আবার কখনো নরম স্বরে। অদূর ভবিষ্যতে একই দায়িত্ব পালন করতে হবে রুবেল-মোস্তাফিজদেরও।

অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে মাশরাফির পর রুবেল হোসেনই আছেন সামনে। ১০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৫৪ ম্যাচে ১৮৭ উইকেট নিয়েছেন। মাশরাফির পর সত্যিকারের ফাস্ট বোলারের নাম নিতে গেলে রুবেলের নাম সবার ওপরে থাকবে। সম্প্রতি গতি হারানোর সঙ্গে দলে অনিয়মিতও হয়ে পড়েছেন রুবেল। কাঁধের চোটের কারণে নিজের সেরাটা দিতে পারছেন না। তবে নিজেকে বোলিং আক্রমণের নেতা হিসেবে দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যই বোধ করেন তিনি, ‘মাশরাফি ভাই যা করেছেন, তা অতুলনীয়। আমি এখন তাঁর পরের বোলারদের মধ্যে সিনিয়র। আমার ওপর একটা বাড়তি দায়িত্ব থাকেই। তবে এটা চাপ নয়। সব দলেই এটা হয়। ক্রিকেটের নিয়ম এটা।’

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মাত্র চার বছরের হলেও মোস্তাফিজের রেকর্ড অবিশ্বাস্য। ছোট্ট ক্যারিয়ারেই তিন সংস্করণের ক্রিকেটে ৯৯ ম্যাচে ১৮৩ উইকেটের মালিক ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার। তবে বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেওয়া বা বাকি বোলারদের সামনে থাকার অবস্থায় এখনো তিনি এসেছেন কি না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। অবশ্য জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি পেসার মঞ্জুরুল ইসলামের ভোট মোস্তাফিজের ব্যালটেই, ‘দুটি জিনিস থাকতেই হবে এই দায়িত্ব পালন করতে হলে। প্রথমত, নিয়মিত একাদশে সুযোগ পেতে হবে। দেখতে হবে কে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন। আর নতুন বলে বল করতে হবে। মোস্তাফিজ নিয়মিত নতুন বলে বল না করলেও দলের নিয়মিত সদস্য সে।’

নতুন বলের দক্ষতার দিক থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পেসার শফিউল ইসলাম। কিন্তু ৯ বছরের ক্যারিয়ারে কখনোই জাতীয় দলে ধারাবাহিক হতে পারেননি। সব সময়ই আছেন আসা-যাওয়ার মধ্যে। কখনো চোট, আবার কখনো অফ ফর্ম—এই দুইয়ের সঙ্গে লড়াই করে কাটিয়ে দিয়েছেন অনেক বেলা। ২০১৬ সালের পর গত শ্রীলঙ্কা সিরিজে ৩টি ওয়ানডে খেলেছেন শফিউল। নতুন বলে নিয়মিত ভালো বল করেছেন, তবে খেই হারিয়েছেন শেষে বল করে। এখন পর্যন্ত তিন সংস্করণে ৮২ ম্যাচ খেলে ৯৪ উইকেট নিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী শফিউল।

তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ারও উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ৫৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৬৪ উইকেট নিয়েছেন। চোট আর বাজে ফর্ম মিলিয়ে দুই বছর ধরে জাতীয় দলে অনিয়মিত। গত নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকলেও ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। মাশরাফি না থাকলে পেস বোলিং বিভাগের দুয়ার খুলতে পারে তাসকিনের সামনে। সম্প্রতি ভালো করছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এ ছাড়া আবু জায়েদ ও আবু হায়দার এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক নন।

তাহলে মাশরাফির কাছ থেকে পেস বোলিং নেতৃত্বের ব্যাটনটা নিতে যাচ্ছেন কে? জাতীয় দলের সাবেক কোচ সরোয়ার ইমরান অনেক ভেবেও নির্দিষ্ট করে কারও নাম বলতে পারলেন না, ‘রুবেল, শফিউল, তাসকিনরা সেভাবে গড়ে ওঠেনি, যেভাবে মাশরাফি গড়ে উঠেছে। তার নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য, সাহসিকতা, পারফর্ম করার প্রচণ্ড ইচ্ছার প্রশংসা করতেই হয়। মাশরাফির বড় গুণ, সে এক জায়গায় বল করতে পারে। এটা সবার মধ্যে দেখা যায় না।’ তবু আশা হারাচ্ছেন না এই পেস বোলিং কোচ, ‘কারও নাম বলতে পারছি না। তবে নিশ্চয়ই জায়গা খালি থাকবে না। একজন না একজন আসবেই। তবে কে আসবে, নামটা বলা খুব কঠিন।’