মাশরাফি-সাকিবের বাঁধা দামের ভালো-মন্দ
শাইনপুকুরের কোচ ফয়সাল হোসেন ভীষণ খুশি। খুশি হবেন না কেন! ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ ‘প্লেয়ার বাই চয়েজের’ প্রথম ডাকের সুযোগ পেয়েই তাঁরা দলে ভিড়িয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। প্রথম বিভাগ থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত শাইনপুকুর দলটা হয়েছে একেবারেই তারুণ্যনির্ভর। সেই দলের অধিনায়ক মাশরাফি।
যদি আগের মতো প্লেয়ার বাই চয়েজ না থাকত, মাশরাফি কি স্বেচ্ছায় শাইনপুকুর বেছে নিতেন? প্লেয়ার বাই চয়েজের মূল কথা, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলোয়াড়ের স্বাধীনভাবে যে দল বেছে নেওয়া ও নিজেদের দরদাম ঠিক করার যে রেওয়াজ ছিল, সেটি এবার নেই। প্লেয়ার বাই চয়েজ আগেও দুবার দেখা গেছে প্রিমিয়ার লিগে। প্রতিবারই আপত্তি উঠেছে খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে। আপত্তি উঠেছে এবারও।
প্রিমিয়ার লিগের গত দুই মৌসুমেই বোলারদের মধ্যে শীর্ষে পাঁচে ছিলেন এমন এক বোলারের পারিশ্রমিক এবার ১৫ লাখ টাকা। বেশ দুঃখ নিয়েই দুদিন আগে তিনি বলেন, ‘ভালো খেললে খেলোয়াড়ের দাম বাড়ে। আর আমাদের দাম দেখি দিনে দিনে কমছে! লিগে ভালো খেলে তাহলে লাভ কী?’
বিপিএলে যেখানে আইকন খেলোয়াড়েরা কোটি টাকা কিংবা কোটি টাকার কাছাকাছি পাচ্ছেন প্রিমিয়ার লিগে সেটির অর্ধেকও কম। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্লেয়ার্স বাই চয়েজ নিয়ে আগেও খেলোয়াড়দের পাশে ছিলেন। এবারও দাঁড়াচ্ছেন, ‘আমি কখনোই এটার পক্ষে নই। খেলোয়াড়েরা যেন স্বাধীনভাবে খেলতে পারে, ইচ্ছেমতো দল বেছে নিতে পারে সেটাই চাই। এটা নিয়ে অনেক খেলোয়াড়ই খুশি নয়। আমি নিজেও খুশি নই। এখানে খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।’
প্লেয়ার বাই চয়েজ শুধু আর্থিকভাবে নয়, এটি একজন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সেও যে প্রভাব পড়তে পারে সেটিও বললেন ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সফল কোচ সালাউদ্দিন, ‘একজন খেলোয়াড় যখন নিজের স্বাধীনমতো দল পছন্দ করে খেলতে পারবে না, সে তখন মানসিক চাপে থাকবে। আগের মৌসুমে যে ক্লাবে সে খেলেছে সেখানে বাজে অভিজ্ঞতা হতে পারে, পারিশ্রমিকে সমস্যা হতে পারে, অফিশিয়াল, কোচিং-স্টাফকে পছন্দ না-ও হতে পারে। সেখানে একজন খেলোয়াড়ের স্বাধীনতা আছে আরেক ক্লাবে যাওয়ার। এখানে সেই সুযোগ খেলোয়াড়কে দেওয়া হচ্ছে না।’
২০১৬ প্রিমিয়ার লিগেও প্লেয়ার বাই চয়েজে দল গড়েছিল ক্লাবগুলো। লিগ শেষে সেবার কিছু ক্লাবের বিরুদ্ধে পারিশ্রমিক পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছিল। বিসিবির দুয়ারে খেলোয়াড়েরা দিনের পর দিন ঘুরেছেন পারিশ্রমিকের জন্য। শেষ পর্যন্ত বিসিবিকে টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে খেলোয়াড়দের।
এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার পর আবারও কেন একই পথে হাঁটা? ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) বলছে, খেলোয়াড়দের আকাশচুম্বী চাহিদার কারণে অনেক ক্লাব অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। আর্থিক বিষয়ে ভারসাম্য আনতেই খেলোয়াড়দের লাগাম পরানোর সিদ্ধান্ত। সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী এনাম বললেন, ‘অনেক ক্লাবের টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলোয়াড়দের যে চাহিদা সেটি অনেক ক্লাব দিতে পারছিল না। অনেক ক্লাবের দলই করতে পারছিল না। এটা নিয়ে নির্বাচকেরা, পরিচালকেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বারবার কথা বলেছেন।’
যোগ্যতা অনুযায়ী পারিশ্রমিক না পাওয়ার যে অভিযোগ তুলেছেন খেলোয়াড়েরা, সেটির সঙ্গে একমত নন কাজী এনাম, ‘দুই বছর আগে যখন প্লেয়ার বাই চয়েজ হয়েছিল, তখন যে পারিশ্রমিক ধরা হয়েছিল সেখান থেকে অনেক খেলোয়াড়ের দাম বাড়ানো হয়েছে। খেলোয়াড়দের যে পারিশ্রমিক ধরা হয়েছে সেটা নিশ্চিতও করা হচ্ছে। ক্লাবগুলো যেমন ৫০ শতাংশ পারিশ্রমিক এরই মধ্যে দিয়ে দিয়েছে।’
সব ঠিক থাকলেই ভালো। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, প্রিমিয়ার লিগ শুরুর পর ঠিক থাকে না অনেক কিছুই।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কে কোন ক্লাবে— | |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
| |||
অগ্রণী ব্যাংক ধরে রেখেছে: সৌম্য সরকার, শাহরিয়ার নাফীস, আব্দুর রাজ্জাক, শফিউল ইসলাম, আজমীর আহমেদ। ড্রাফট থেকে: আল আমিন হেসেন, ধীমান ঘোষ, সালমান হোসেন, শাহবাজ চৌহান, সাইমন আহমেদ, ইসলামুল আহসান, গোলাম কবীর। |
আরও পড়ুন...