Thank you for trying Sticky AMP!!

মাহমুদউল্লাহ-মিঠুনকে আগলেই রাখছেন মাশরাফি

মাহমুদউল্লাহর ওপর আস্থা হারাচ্ছেন না অধিনায়ক মাশরাফি। ছবি: বিসিবি
শেষ দুই ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট হাসেনি। কথা হয়েছে তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়েও। মিডল অর্ডারের আরেক ব্যাটসম্যান মিঠুনও হতাশ করেছেন। তবে মাশরাফি এখনই নেতিবাচকভাবে ভাবতে চাইছেন না। বরং ঢাল হয়ে আটকেছেন দুই সতীর্থের দিকে ধেয়ে আসা সমালোচনার তির।

২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের অন্যতম বড় দুই ভরসা মাহমুদউল্লাহ ও মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু প্রত্যাশার শতভাগ পূরণ করতে পারছেন কোথায় তাঁরা! মাহমুদউল্লাহ প্রথম ম্যাচে ভালো খেললেও পরের দুই ম্যাচে তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরনে জেগেছে বিস্ময়। রান নেই মিঠুনের ব্যাটেও। তবে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা আগলে রাখতে চাইলেন দুজনকেই।

সাকিব আল হাসান সেঞ্চুরি করার আগে মাহমুদউল্লাহই ছিলেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান। গত বিশ্বকাপে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রানও করেছিলেন। কিন্তু এবার এখনো নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। মিঠুনও পাঁচে নেমে তিন ম্যাচেই হতাশ করেছেন। গত ম্যাচে তো ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। মিডল অর্ডারের পারফরম্যান্সটা তাই মনমতো হচ্ছে না বাংলাদেশের।

ম্যাচ–পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এই দুই ব্যাটসম্যানের রান না পাওয়া নিয়ে। নেতিবাচক আলোচনায় না গিয়ে অধিনায়ক ভাবতে চাইলেন ইতিবাচকভাবে, ‘আমি এখনো সব ইতিবাচকভাবে দেখতে চাচ্ছি। আমার মনে হয় সবাই মানসিকভাবে ঠিক আছে। বাইরের আলোচনাগুলো যেন ড্রেসিংরুমে না যায়, সেটাই হচ্ছে আমার কাছে মূল ব্যাপার। আমরা সবাই তো একটু বেশি আবেগি। রাতারাতি অনেক চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপার থাকে। এটি খেলোয়াড়দের মধ্যেও আছে। সব ম্যাচে সবাইকেই ভালো করতে হবে, এটা মানুষও যেমন প্রত্যাশা করে, তামিম-রিয়াদও প্রত্যাশা করে। জাতি হিসেবেই আমরা এমন। তাই বাইরের আলোচনাটা যেন ড্রেসিংরুমে না যায়। কারণ সেটার একটা খারাপ প্রভাব পড়েই। তাই এগুলো থেকে দূরে থাকতে পারলেই স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে পারবে ওরা।’

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ দলের ফিনিশারের ভূমিকাটা দারুণ সফলতার সঙ্গে পালন করে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ। হয়ে উঠেছেন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানদের একজন। বিশ্বকাপে তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশাটা একটু বেশিই ছিল। মাহমুদউল্লাহ শুরুটাও করেছিলেন দারুণ, প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অপরাজিত ছিলেন ৩৩ বলে ৪৬ করে। ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহটা বাংলাদেশ পেয়েছিল তাঁর ব্যাটে চড়েই। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে সেই মাহমুদউল্লাহই কেমন যেন অচেনা। রান না পাওয়ার চেয়েও যে বিষয়টা বড় হয়ে উঠছে, সেটা হলো তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যখন বড় একটা সংগ্রহের আশা করছিল বাংলাদেশ, তখন ছয়ে নেমে করেছেন ৪১ বলে ২০ রান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচেও একই অবস্থা। সাকিব আল হাসান যখন ব্যস্ত দ্রুত রান তোলায়, মাহমুদউল্লাহ তখন করলেন ৪১ বলে ২৮ রান। দুই ম্যাচেই তাঁর নেতিবাচক ব্যাটিং ও ডট বলের সংখ্যা চিন্তায় ফেলেছে সমর্থকদের।

মাশরাফি অবশ্য মাহমুদউল্লাহর পাশেই দাঁড়িয়েছেন, ‘আলাদা করে রিয়াদের (মাহমুদউল্লাহ) কথা বললে প্রথম ম্যাচে কিন্তু ও প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ঠিক পথেই যাচ্ছিল। কিন্তু ভুল সময়ে আউট হয়ে গিয়েছে। শেষ ম্যাচে হয়তো আরেকটু ভালো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে পারত। ও কি চিন্তা করেছে ও ভালো জানে। আবার অনেক সময় কিছু উইকেট পরপর চলে যায়। এ জন্যেও কাজটা কঠিন হয়ে যায়। আর ছয় নম্বরে নামা কারও কাছ থেকে তো প্রতি ম্যাচে সেঞ্চুরি বা ফিফটি আশা করা যায় না। ও চেষ্টা করতে গিয়ে আউট হয়েছে।’

হতাশ করেছেন মিঠুনও। এশিয়া কাপে দলের বিপর্যয়ের মুখে নেমে দুটি ফিফটি করার পর থেকে বিশ্বকাপের জন্য মিডল অর্ডারে ভরসা ভাবা হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ৪৭ রান। আগামীকালের ম্যাচে তাঁর দলে থাকাটাও অনিশ্চিত। মাশরাফি এখানেও দাঁড়ালেন মিঠুনের ঢাল হয়ে। একজনের কাঁধে দায় চাপানোর বদলে সবাই মিলে খারাপ খেলার কথাই স্বীকার করে নিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘একই কথা মিঠুনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শেষ ম্যাচে ব্যাটিং বোলিং সবই আমাদের বিপক্ষে গিয়েছে। সত্যি বলতে, সিদ্ধান্তে আসা অনেক কঠিন। বিশ্ব একাদশের কাছে যদি হারি, তাহলেও এখন কথা হবে। কারণ বাংলাদেশ দল এখন জিততে চায়।’