Thank you for trying Sticky AMP!!

হতাশ মুশফিক।

মুশফিকের আউটটাই যত প্রশ্ন তুলে দেয়

হয়তো তাঁর ওপর প্রত্যাশা বেশি ছিল বলেই তাঁর আউটটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বেশি।

আউটের ধরন, সময়...সবকিছু প্রশ্ন তুলে দেওয়ার মতোই। মুশফিকুর রহিম ওভাবে অযথা রিভার্স-সুইপ করতে গিয়ে আউট না হলে বাংলাদেশ হয়তো আরেকটু স্বস্তি নিয়ে মধ্যাহ্নবিরতিতে যেতে পারত। কিন্তু মুশফিকের হঠাৎ কী হয়েছিল, তা শুধু তিনি নিজেই বলতে পারবেন

ফিফটি করেই মুশফিক আউট হয়ে গেছেন। তার আগে ফিরেছেন আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনও। মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্নবিরতিতে আজ তাই খাবার গলাধঃকরণ করতেই হয়তো একটু কষ্ট হবে বাংলাদেশের। এখনো ফলোঅন এড়াতেই বাংলাদেশের দরকার আরও ২৯ রান, হাতে আছে আর ৪ উইকেট।

৬ উইকেটে ১৮১ রান নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন লিটন দাস (২৩*) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (১১)। এই সেশনে বাংলাদেশের দুটি উইকেটই নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশালদেহী অফ স্পিনার রাকিম কর্নওয়াল।  

২৬ ওভার, ৭৬ রান। এতটুকু পর্যন্ত সকালের সেশনটা আজ বাংলাদেশের জন্য ভালোই ছিল। কিন্তু সেটিকে খারাপ বানিয়ে দিয়েছে উইকেটের ঘরে '২' সংখ্যাটা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে মুশফিকের উইকেট।

আউট হয়ে যাচ্ছেন মিঠুন।

দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে দিন শুরু করা মুশফিক আউট হওয়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসের রানের কাছাকাছি যাওয়া তো পরের কথা, বাংলাদেশ ফলোঅন এড়াতে পারবে কি না, সে শঙ্কাই জেগেছে।

মুশফিক- মিঠুনের জুটি অক্ষত রেখে ফলোঅন এড়ানোই হয়তো বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য ছিল আজ। হাতে ৬ উইকেট থাকলে এরপর না হয় প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪০৯ রানের পাহাড়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করা যেত।

কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো কই? সকাল থেকে পরীক্ষার মুখে পড়া মিঠুন ফিরে গেছেন মুশফিক ফিফটি পাওয়ার পরপরই। পঞ্চম উইকেটে মুশফিক-মিঠুনের জুটিটা হয়েছে ৮১ রানের। এরপর আগের দিনের 'রীতি' মেনে ফিরেছেন দুজনই! মুশফিক ৫৪ রানে ফিরেছেন, মিঠুন ১৫ রান করে আউট হয়ে গেছেন।

দিনের দশম ওভারের প্রথম বলেই ফিরে গেছেন মিঠুন। কর্নওয়ালের অফ স্টাম্পে করা বলটা প্যাডের ওপর থেকে টেনে খেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু টাইমিং গড়বড় হওয়ায় ধরা পড়েন শর্ট মিডউইকেটে।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কাল থেকেই জোড়ায় জোড়ায় ফিরছিলেন, আজ মিঠুনের আউটের ২৫ বল পর আউট হয়ে মুশফিকও যেন সে ধারাটাই অব্যাহত রেখেছেন। রিভার্স সুইপ তাঁর অনেক প্রিয় শট, রিভার্স সুইপে মুশফিক অনেক রান করেছেন ঠিকই। কিন্তু দল যখন খাদের কিনারায়, তখন এই শট খেলার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে বললে মুশফিকের উত্তরটা কী হয়, সেটি দেখার মতোই হবে।

লিটন-মিরাজ ভালো কিছু করতে পারবেন?

হয়তো বাংলাদেশের টেস্ট খেলার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্নের বানে বাড়তি ঢেউ জোগাবে মুশফিকের আউটের ধরনটা। বাংলাদেশ ফলোঅনের শঙ্কায়, এরপর ব্যাটসম্যান বলতে শুধু লিটন আর মিরাজ...এই অবস্থায় ওই শট খেলার অর্থ শুধু মুশফিকই জানেন!

কর্নওয়ালের ওভারের আগের বলেই কোনোমতে লেগ স্লিপে ক্যাচ দিতে দিতে বেঁচে গেছেন, বল চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। সেই বলেই বাড়তি বাউন্স চোখে পড়েছে। কিন্তু তাতেও মুশফিকের কিছু এল-গেল না!

পরের বলেই আবার রিভার্স সুইপ করতে গেলেন। টাইমিং ঠিকঠাক হলো না, বাড়তি বাউন্স করা বল মুশফিকের ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে ক্যাচ উঠল শর্ট কাভারে, সেখানে থাকা মেয়ার্সের এই সহজ ক্যাচ ধরতে কোনো কষ্টই হলো না! বাংলাদেশের রান তখন ১৫৫, ফলো অন এড়াতে তখনো আরও ৫৫ রান দরকার।

বাংলাদেশের জন্য আরও বড় শঙ্কা এই যে, ক্রিজে এখন যে দুজন আছেন, দুজনই দলের সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। কিন্তু দুজনেরই ফর্ম ভরসা জাগায় না। লিটন চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজে ব্যাট হাতে ভালো করতে পারেননি। মিরাজ চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেও টেস্টে তাঁর ১৯.৬৮ গড় বাংলাদেশকে তেমন ভরসা জোগায় না।

তবু মুশফিক আউট হওয়ার পর লিটন-মিরাজ মিলে ১১ ওভার ৪ বল কাটিয়ে দিয়েছেন ক্রিজে, জুটিতে রান তুলেছেন ২৬।