Thank you for trying Sticky AMP!!

যেভাবে করোনা মোকাবিলায় সফল শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কান কোচ জানালেন কীভাবে করোনা মোকাবিলায় সফল শ্রীলঙ্কা। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে, ‌দুদিন আগে খবরটা শুনেই আঁতকে উঠেছিলেন চম্পাকা রমানায়েকে। আজ আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩১-এ। গত দুই দিনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী বেড়েছে ৪২৮ জন। এ তথ্যটা অবশ্য আর তাঁকে জানানো হয়নি। দুদিন আগে তাঁর সঙ্গে কথা বলে বোঝা যাচ্ছিল, বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কতটা উদ্বিগ্ন।

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে চম্পাকা কেন এতটা উদ্বিগ্ন? বরং একটা বিষয় ভেবে তিনি কিছুটা স্বস্তিতেই থাকতে পারেন। তাঁর দেশ শ্রীলঙ্কা তো খুব ভালোভাবে সামাল দিতে পেরেছে করোনার বিস্তার। এ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় আক্রান্ত ২৩৩, মারা গেছে ৭ জন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজের দেশ ভালো অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা থাকবেই চম্পাকার। তাঁর কর্মস্থল যে ঢাকা, নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে চম্পাকা বিসিবিতে কাজ করছেন হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের বোলিং কোচ হয়ে। গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন ছুটিতে। বাড়িতে গিয়েই আটকা।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় অন্য দেশগুলোর মতো শ্রীলঙ্কাও লকডাউন ঘোষণা করেছে গত মাসে। প্রায় একই সময় থেকে অঘোষিত লকডাউন চলছে বাংলাদেশেও । এ সময়ে শ্রীলঙ্কা বেশ ভালোভাবে পারলেও বাংলাদেশ পারছে না করোনার বিস্তার ঠেকাতে। বরং তা বেড়েই চলেছে দিন দিন।

শ্রীলঙ্কা কীভাবে সফল হলো, কলম্বো থেকে বলছিলেন চম্পাকা, ‘জনসংখ্যা ঘনত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার একটা পার্থক্য আছে। আর শ্রীলঙ্কায় কোনো এলাকায় যদি করোনা রোগী ধরা পড়ে, পুরো এলাকা, গ্রাম লকডাউন করা হচ্ছে। কেউই বের হতে পারবে না। এরপর সেই এলাকায় প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর মানুষ সরকারের নির্দেশনা ভালোভাবে মানছে। বাংলাদেশের মানুষের তুলনায় শ্রীলঙ্কানরা বোধ হয় একটু বেশিই নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এভাবেই সরকার করোনা সামাল দিচ্ছে। অন্য দেশগুলোর তুলনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে বলা যায়।’

এক মাস হলো চম্পাকা গৃহবন্দী। ঘরে আটকে থাকার সময়টা তিনি পার করছেন গান শুনে, কাজ করছেন ফিটনেস নিয়ে। প্রশাসনের কাছ থেকে অবশ্য বিশেষ অনুমতি নিয়ে রেখেছেন যেন জরুরি দরকার হলে যেকোনো সময়ে বাইরে যেতে পারেন। বর্তমান কলম্বোর পরিস্থিতি নিয়ে চম্পাকা বলছিলেন, ‘কলম্বোতে কারফিউ চলছে। আমি চাইলে বের হতে পারি, সে অনুমতি নেওয়া আছে। তবে বের হচ্ছি না। যা যা দরকার, সবই ঘরে চলে আসছে। শুধু ফার্মেসি খোলা। বাকি সব বন্ধ। আমাদের খাবারের স্বল্পতা নেই।’

লকডাউনে যাওয়ার আগে বিদেশফেরতদের কঠোরভাবে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কান সরকার। নিজের দেশের করোনা পরিস্থিতি বেশ ভালো থাকলেও চম্পাকার চিন্তা হচ্ছে তাঁর ছাত্রদের নিয়ে। করোনার কারণে থমকে আছে বিসিবির এইচপির কর্মসূচি। জুলাইয়ে এইচপি দলের সফর ছিল শ্রীলঙ্কায়। সেটি এখন ঝুলছে অনিশ্চয়তার সুতোয়। অসহায় কণ্ঠে চম্পাকা বলছেন, ‘এইচপিতে থাকা খেলোয়াড়দের ফিটনেসের কাজ করে যেতে বলা হয়েছে। খাবারের অভ্যাস ধরে ঠিক রাখতে বলা হয়েছে। এর বাইরে কিছুই করার নেই। দেখি কী হয় সামনের সময়টায়।’

এটিই হচ্ছে কথা, ঘন কুয়াশা ঢাকা পথ ধরে এগোতে হচ্ছে সবাইকে। সামনে কী, কারও বলার উপায় নেই।