Thank you for trying Sticky AMP!!

লড়াই কাকে বলে দেখিয়ে দিলেন ইয়াসির

সেঞ্চুরির পর ইয়াসির শাহ। টেস্ট ক্যারিয়ারে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। ছবি: এএফপি

অ্যাডিলেডের ড্রেসিং রুম থেকে মাঠে নেমে এসেছিল পাকিস্তান দল। মাঠে ইতিহাস গড়ছেন ইয়াসির শাহ। তা আরও কাছ থেকে দেখতেই বুঝি এই নেমে আসা! সতীর্থদের হতাশ করেননি ইয়াসির, হতাশ করেননি পাকিস্তানের সমর্থকদেরও। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ারই ঘরে আটে নেমে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এ লেগ স্পিনার!

অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেটে ৫৮৯ রানের পাহাড় মাথায় নিয়ে কাল ব্যাটিংয়ে নেমেছিল পাকিস্তান। ৬ উইকেটে ৯৬ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল তারা। উইকেটে ছিলেন বাবর আজম ও ইয়াসির। আজ তৃতীয় দিনে বাবরের দুর্ভাগ্য মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি। তবে সপ্তম উইকেটে বাবর-ইয়াসিরের ১০৫ রানের লড়াকু জুটি অনেকটা পথ এগিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। ৯৭ রানে বাবর মিচেল স্টার্কের শিকার হওয়ার পর একাই বুক চিতিয়ে লড়াই করছেন ইয়াসির। ২১৩ বলে ১১৩ রান করে আউট হন তিনি। বাবর আজম বাদে পাকিস্তানের টপ অর্ডার এবং মিডল অর্ডার মিলে খেলেছেন যেখানে ১৩২ বল, ইয়াসির সেখানে দুই শ-র বেশি বল খেলে তো উদাহরণই সৃষ্টি করলেন।

ব্যক্তিগত ৮০ রানে থাকতে অস্ট্রেলিয়া নতুন বল নিয়ে স্টার্ক-হ্যাজলউড দিয়ে আউট করার চেষ্টা করেছে ইয়াসিরকে। কিন্তু চোস্ত ব্যাটসম্যানদের মতোই তাঁদের সামলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইয়াসির। এ প্রতিবেদন লেখার সময় ৩০২ রানে প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় পাকিস্তান। সফরকারি দলকে আবারও ব্যাটিংয়ে অর্থাৎ ফলোঅনে পাঠিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

নবম উইকেটে পেসার মোহাম্মদ আব্বাসকে নিয়ে আরেকটি লড়াই উপহার দিয়েছেন ইয়াসির। নবম উইকেটে মোহাম্মদ আব্বাসকে নিয়ে গড়েছেন ৮৭ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত ৭৮ বলে ২৯ রান করে আউট হন এ পেসার। ইয়াসির আউট হয়েছেন ১১৩ রানে। এ দুজনের লড়াই নিশ্চিতভাবেই প্রেরণা জোগাবে পাকিস্তানের টপ অর্ডারকে।

>

অ্যাডিলেড টেস্টে আজ তৃতীয় দিনে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইয়াসির শাহ। আটে ব্যাটিংয়ে নেমে লড়াকু এ সেঞ্চুরি পাকিস্তানকে এখনো ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছে

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আটে নেমে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার নজির খুব বেশি নেই। ইয়াসিরের আগে মাত্র চারজন তা করতে পেরেছেন—১৯৫৫ সালে ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লেয়ারমন্তে দেপেয়জা, ১৯৬১ সালে সিডনিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই গ্যারি আলেকজান্ডার, ২০১১ সালে সিডনিতে ইংল্যান্ডের ম্যাট প্রায়র ও ২০১৭ সালে রাঁচিতে ঋদ্ধিমান সাহা। এ তালিকায় এবার নিজের নামটা যোগ করলেন ইয়াসির। শুধু কী তাই, এ ইনিংসটি দিয়ে ইয়াসির বুঝিয়ে দিয়েছেন গড় কিংবা টেকনিক যাই হোক, একাগ্রতা ও মনঃসংযোগ থাকলে বড় রান পাওয়া সম্ভব।

টেস্টে সেঞ্চুরির মুখ দেখাদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ব্যাটিং গড় ইয়াসিরের (১৪.০৮)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার জেরোম টেলরকে (১২.৯৬) টপকাতে পারেননি তিনি। অথচ এই ইয়াসিরকেই কাল অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ১৯৭ রান দেওয়ার জন্য ঠাট্টা-মশকরা করেছেন সমর্থকেরা। আজ ব্যাট হাতেই তার জবাব দিলেন ৩৩ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টে ইয়াসিরের ব্যাটিং গড় (৩২.৫৭) অবশ্য এ সময়ের অনেক স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের চেয়েও ভালো।