Thank you for trying Sticky AMP!!

শেবাগের ৩০৯-এর চেয়ে টেন্ডুলকারের ১৩৬ ভালো ছিল: সাকলায়েন

দলকে না জেতাতে পারলেও ১৯৯৯ সালে চেন্নাইয়ে টেন্ডুলকারের ইনিংসটি বিশেষই। ছবি: এএফপি

দুটি টেস্টেই পাকিস্তান দলে ছিলেন সাকলায়েন মুশতাক। একটিতে ক্রিকেট রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসানোর পর পাকিস্তান জিতেছে ১২ রানে, অন্যটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। একটিতে ভারতের জার্সিতে ১৩৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন শচীন টেন্ডুলকার, অন্যটি দেখেছে বীরেন্দর শেবাগের ব্যাটে ৩০৯ রানের ইনিংসের ঝড়—ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানের টেস্টে প্রথম ত্রিশতকও সেটি।

কিন্তু শেবাগের ৩০৯ নয়, টেন্ডুলকারের ১৩৬ রানের ইনিংসকেই এগিয়ে রাখেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি স্পিনার সাকলায়েন।

টেন্ডুলকারের ১৩৬ রানের ইনিংসটি ১৯৯৯ সালে চেন্নাই টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে। ভারতকে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিল ইনিংসটি। কিন্তু ২৭১ রানের লক্ষ্যে নামা ভারতের হয়ে ২৫৪ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেন্ডুলকার আউট হলেন, আর ৪ রানের মধ্যেই বাকি তিন ব্যাটসম্যানও আউট! ৪০৫ মিনিটে ২৭৩ বলে ১৮ চারে টেন্ডুলকারের দুর্দান্ত ইনিংসের পরও ভারত তীরে এসে তরি ডোবে ভারতের। ওই ইনিংসে টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির বাইরে বলার মতো রানই শুধু নয়ন মঙ্গিয়ার ৫২। দুই ইনিংসেই পাঁচটি করে উইকেট পান সাকলায়েন।

শেবাগের ৩০৯ রানের ইনিংসটির ম্যাচের গল্প পুরো ভিন্ন। ২০০৪ সালে মুলতানে সে ম্যাচে শেবাগের ত্রিশতক আর টেন্ডুলকারের ১৯৪ রানের সৌজন্যে আগে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ৬৭৫ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। সাকলায়েন সে ইনিংসে ৪৩ ওভারে ২০৪ রান দিয়ে পান ১ উইকেট। পাকিস্তান ইনিংস ও ৫২ রানে হারে হারে ম্যাচ।
কিন্তু সিরিজের আগে দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি, টেস্টের কোন সময়ে ইনিংসটি এসেছে, সব বিবেচনায় টেন্ডুলকারের ইনিংসই এগিয়ে রাখেন সাকলায়েন। ইউটিউবে আলোচনা অনুষ্ঠান ক্রিকেটবাজে সাকলায়েন বলেছেন, ‘চেন্নাই টেস্টের ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে টেন্ডুলকারের ১৩০-এর কিছু বেশি রানের ইনিংসটিকে বীরেন্দর শেবাগের ট্রিপল সেঞ্চুরির চেয়ে এগিয়ে রাখব আমি। কারণ ওই সময় (টেন্ডুলকারের ইনিংসের সময়, ১৯৯৯ সালে) আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলাম। দারুণ লড়াই ছিল সেটা।’
কিন্তু শেবাগের ইনিংস নিয়ে সাকলায়েনের কথা, ‘এখানে (মুলতানে ২০০৪ সালে) কোনো লড়াই-ই হয়নি। ওটা টেস্টের প্রথম ইনিংস ছিল, (টেন্ডুলকারের ইনিংসের মতো) দ্বিতীয় ইনিংস নয়। প্রথম দিনের পিচ ছিল, কোনো প্রস্তুতি ছিল না আমাদের। ওর (শেবাগ) নিজের নতুবা ওর মা-বাবার কোনো ভালো কাজের ফলই হয়তো সেদিন পড়েছিল ওর ওপর।’
মুলতান টেস্টে পাটা পিচ ছিল বলে জানালেন সাকলায়েন। শোয়েব আখতার আর তিনি নিজে চোট নিয়ে বোলিং করছিলেন বলেও সাকলায়েন দাবি করেছেন অনুষ্ঠানে। সঙ্গে সে সময় বোর্ডের সঙ্গে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের কিছু ঝামেলা চলছিল জানিয়ে সাকলায়েন বললেন, ‘পরিস্থিতিটা একেবারে ওর (শেবাগ) জন্যই যেন মঞ্চ ঠিক করে দিয়েছে। প্রকৃতি ওর ওপর দয়া করেছে। আমি এটা বলছি না ও ভালো ব্যাটসম্যান নয়, গ্রেট একজন খেলোয়াড় সে। শুধু আমি বা শোয়েব আখতার চোট নিয়ে বোলিং করেছি বলে নয়, উইকেট পাটা ছিল, পরিস্থিতি বোলারদের জন্য কঠিন ছিল। আমাদের পুরো বোলিং ইউনিটই খারাপ করেছে। বোর্ডেরও ঝামেলা ছিল। হঠাৎ করে ইনজামাম অধিনায়ক হলো, অন্য কেউ তখন অধিনায়ক ছিলেন।’
সব মিলিয়েই সাকলায়েনের অনুভূতি, ‘অনেক বদল হচ্ছিল। আমাদের মনোযোগ ঠিক ছিল না। প্রস্তুতি ভালো ছিল না। অ্যাশেজের জন্য ওরা এক বছর ধরে প্রস্তুতি নেয়। আর আমরা ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি-পরিকল্পনা ছাড়াই নেমেছি। শেবাগ অনেক ভয়ংকর ব্যাটসম্যান, কিন্তু আমরা ওই ট্রিপল সেঞ্চুরিকে তেমন বিশেষ বলে মনে করি না।’