Thank you for trying Sticky AMP!!

সর্বকালের সেরা চার ফাস্ট বোলারের একজন স্টেইন

এই প্রজন্মের সেরা ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইন। ফাইল ছবি
>

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত পেস ব্যাটারির একজন ছিলেন তিনি। খেলা ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার হিসেবেও ঘুরেছেন এ দেশ-ও দেশ। কাছ থেকে দেখেছেন শত শত ক্রিকেটারকে। সেই মাইকেল হোল্ডিং তাঁর চোখে ইতিহাসের সেরা চার ফাস্ট বোলার বেছে নিয়েছেন

সবার আগে এলেন অ্যান্ডি রবার্টস। দুই বছর পর মাইকেল হোল্ডিং। মাঝে ওয়েইন ড্যানিয়েলের অভিষেক হলো, তার দুই বছর পর মঞ্চে এলেন জোয়েল গার্নার ও কলিন ক্রফট। কেরি প্যাকার সিরিজের সময় বিশ্ব দেখল সিলভেস্টার ক্লার্ক আর ম্যালকম মার্শালের আগমন।

সত্তর-আশির দশকের ক্রিকেটে দাপুটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কথা বললে হয়তো সবার আগে ভয়ংকর এই ফাস্ট বোলিংয়ের কথাই কল্পনায় আসে প্রথমে। এঁদেরই একজন হোল্ডিং বেছে নিয়েছেন তাঁর চোখে সর্বকালের সেরা চার ফাস্ট বোলারকে। যে তালিকায় তাঁর দুই সতীর্থ মার্শাল ও রবার্টসের পাশাপাশি হোল্ডিং বেছে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ডেনিস লিলি আর সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটসম্যানদের বদলে চোটের সঙ্গেই বেশি লড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকান ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনকে।

অস্ট্রেলিয়ার ডেনিস লিলি, জেফ টমসন থেকে শুরু করে ম্যাকগ্রা-ব্রেট লিগ, ইংল্যান্ডের ফ্রেড ট্রুম্যান, বব উইলিস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস ব্যাটারিপর কোর্টনি ওয়ালশ-কার্টলি অ্যামব্রোস, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, ইমরান খান, দক্ষিণ আফ্রিকার শন পোলক, মাখায়া এনটিনি, নিউজিল্যান্ডের রিচার্ড হ্যাডলিরা... যুগে যুগে ক্রিকেট রাঙানো ফাস্ট বোলারের তালিকা অনেক লম্বাই। এঁদের মধ্যে থেকে চারজন বেছে নেওয়ার কাজটা কতটা কঠিন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলারের তালিকা করতে গেলে হোল্ডিংয়ের নিজের নামটাই হয়তো আসবে অনেকের তালিকায়। ১২ বছরের ক্যারিয়ারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে ১৬২ ম্যাচে ৩৯১ উইকেট নিয়েছেন গতি আর বাড়তি বাউন্সের জন্য ‘হুইসপারিং ডেথ’ নাম পেয়ে যাওয়া হোল্ডিং। কিন্তু নিজের তৈরি তালিকায় নিজের নাম তো আর রাখা যায় না! ক্রিকেট ছাড়ার পর ধারাভাষ্য বক্সে আলো ছড়ানো হোল্ডিং স্কাই স্পোর্টস পডকাস্টে বেছে নিয়েছেন মার্শাল, রবার্টস, লিলি আর স্টেইনকে।

কেন এই চারজনকে বেছে নেওয়া, পডকাস্টে সে ব্যাখ্যাও একে একে দিয়েছেন হোল্ডিং। প্রথম তিনজনের নাম এক ব্র্যাকেটে রেখেই শুরু তাঁর বিশ্লেষণ, ‘অস্ট্রেলিয়ার ডেনিস লিলি আর আমার পুরোনো দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সতীর্থ ম্যালকল মার্শাল ও অ্যান্ডি রবার্টসকে থাকবে তালিকায়।‘ লিলি তাঁর কাছে বিশেষ মর্যাদা পাচ্ছে চোট কাটিয়ে বোলিং অ্যাকশন পাল্টেও উইকেট নেওয়ার ক্ষমতার কারণে, ‘লিলির সবকিছুই ছিল। গতি, নিয়ন্ত্রণ, আগ্রাসন। যখন শুরু করেছিলেন, তখন অবিশ্বাস্য গতি ছিল। কিন্তু পিঠের চোটের পর তাঁকে অ্যাকশন বদলে ফেলতে হলো। তাতে অনেক গতি হারিয়ে ফেলায় ব্যাটসম্যানদের আউট করার ভিন্ন উপায় খুঁজতে হলো। এত দারুণভাবে কাউকে মানিয়ে নিতে দেখার পর তাঁকে অনেক বেশি মর্যাদা দিতেই হবে। কারণ অনেক বোলারই আছে যারা গতি হারিয়ে ফেলার পর আর কখনোই একই রকম কার্যকরী থাকেননি।’

এরপর হোল্ডিংয়ের বিশ্লেষণ তাঁর সাবেক দুই সতীর্থকে নিয়ে। মার্শালের ক্রিকেট মস্তিষ্ক তাঁর বিশেষ সনদ পাচ্ছে, ‘ম্যালকম শুরু করেছিল দারুণ গতি নিয়ে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ও ফাস্ট বোলিংয়ের এত এত দিক শিখেছে! এত দ্রুত আর এত সহজে ও প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে পড়ে ফেলতে পারত! সে যুগে তো (প্রতিপক্ষকে বিশ্লেষণে) এত ভিডিও টেপ বা কম্পিউটার ছিল না। কিন্তু ওর মাথায় সবই থাকত। কোন ব্যাটসম্যানকে কীভাবে সামলাতে হবে, এটা খুব ভালো বুঝতে পারত ও।’

আর আপাতদৃষ্টিতে বদমেজাজি রবার্টসের রুমমেট থাকার অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর অন্য দিকটা তুলে ধরলেন হোল্ডিং, ‘অ্যান্ডি এমন একজন যার কাছ থেকে আমি অনেক শিখেছি। ও কথা বলত খুব কম, এমন একটা বদমেজাজি ভাব নিয়ে মাঠে ঘুরত যে মানুষ মনে করত ও অনেক আগ্রাসী কেউ, হয়তো ওর সঙ্গে মেশা খুব কঠিন। কিন্তু অ্যান্ডি ওরকম ছিল না।‘ কথাটা হোল্ডিং বলছেন রবার্টসকে খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকেই, ‘ক্যারিয়ারের বড় একটা অংশ ও আমার রুমমেট ছিল। প্রায় প্রতি রাতেই ক্রিকেট নিয়ে কথা হতো আমাদের। অনেক সময়ই এমন হতো যে আমরা বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে নিতাম, রুমেই থাকতাম আর ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করতাম। ও যে এত জানে, এটা কেউ বিশ্বাসই করতে পারবে না!’

এই তিনজনের সঙ্গে একটু চমক হয়েই যেন এসেছে গত কয়েক বছর ধরেই কাঁধের চোটের সঙ্গে লড়তে থাকা ডেল স্টেইনের নাম। নিজের দিনে ভয়ংকর দক্ষিণ আফ্রিকান ফাস্ট বোলারের ‘দিনে’র দেখাই যে এখন কম মেলে! মাঠে কম, ডাক্তারের টেবিলে দিন বেশি কাটে তাঁর। তবু হোল্ডিংয়ের কাছে স্টেইন বিশেষ, ‘এতক্ষণ যে তিনজনের কথা বললাম, তাঁদের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। কিন্তু শুধু দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বললে ডেল স্টেইনকে আপনি হিসাবের বাইরে রাখতে পারবেন না। এ যুগের সেরা ফাস্ট বোলারদের একজন ও। ওকে দেখার জন্য গাঁটের পয়সা খরচ করাই যায়।’