নাজমুল একাদশকে খুব বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ একাদশ। ১৯৭ রান তাড়া করতে নেমে নাজমুল একাদশ ৭৯ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ৫ উইকেট। ম্যাচটা যখন জমে যাওয়ার আভাস—তখনই ষষ্ঠ উইকেটে ইরফান শুক্কুর-তৌহিদ হৃদয়ের প্রতিরোধ। এই জুটির সৌজন্যে ৪ উইকেটে হাতে রেখেই বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের উদ্বোধনী ম্যাচ জিতল নাজমুল একাদশ।
মাহমুদউল্লাহ একাদশের মতো নাজমুল একাদশের টপ অর্ডারও ব্যর্থ। সাইফ হাসান, সৌম্য সরকার, নাজমুল—তিন ব্যাটসম্যানই থিতু হয়েও পারেননি ইনিংস লম্বা করতে। নাজমুল একাদশের বড় তারকা মুশফিকুর রহিম ইবাদত হোসেনের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলটা খেলতে গিয়ে উইকেটে টেনে আনলেন। আউট হলেন মাত্র ১ রান করে। কিছু পরে মাহমুদউল্লাহর শিকার হয়ে আউট আফিফ (৪)। ৭৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় নাজমুল একাদশ।
ঠিক এ সময় ইরফান-তৌহিদের প্রতিরোধ। খাদের কিনার থেকে ১২৭ বলে ১০৫ রান যোগ করে এই জুটি। তৌহিদ ৫২ রানে আউট হলেও ম্যাচ শেষ করে আসেন ইরফান। বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান অপরাজিত ছিলেন ৭৮ বলে ৫৬ রানে।
পরীক্ষামূলক সিরিজটা আকর্ষণীয় করে তুলতে চেষ্টার কমতি নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের উদ্বোধনী ম্যাচের প্রথম ইনিংস অবশ্য খুব বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ একাদশের ব্যাটসম্যানরা।
লিটন দাস-নাঈম শেখের ওপেনিং জুটি ভেঙেছে ১৭ রানে। আল আমিন-তাসকিন আহমেদের অসাধারণ বোলিংয়ে ২১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে এলোমেলো তাদের টপ অর্ডার।
একটু তো জড়তা থাকবেই। আমার ধারণা, একটা করে ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরে খেলোয়াড়েরা আরও ছন্দে ফিরতে পারবে।নাজমুল হাসান, বিসিবি সভাপতি
ইমরুল কায়েস-মাহমুদউল্লাহর চতুর্থ উইকেট জুটি ৭৩ রান যোগ করে স্কোরটা ভদ্রস্থ করার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। ইমরুল এগোচ্ছিলেন বেশ স্বচ্ছন্দে। লম্বা ইনিংস তাঁর কাছে পাওনাই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নাঈম হাসানকে স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়েই শেষ সেই সম্ভাবনা, সাইফ হাসানের ক্যাচ হয়ে আউট হয়েছেন ৪০ রান করে।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তবু দলকে ভালো স্কোর এনে দেওয়ার প্রত্যয়েই এগোচ্ছিলেন। মুকিদুল ইসলামকে তিনিও (৫১) স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হলেন আফিফ হাসানের হাতে। নুরুল হাসানের শিশুতোষ রানআউট কিংবা মুকিদুলের দুর্দান্ত ফিরতি ক্যাচ হয়ে সাব্বির রহমান (২২) ফিরে যাওয়ায় লোয়ার মিডল অর্ডার বলার মতো অবদান রাখতে পারেনি স্কোরটা বড় করতে। ৪৭.৩ ওভারে ১৯৬ রান করে অলআউট মাহমুদউল্লাহ।
মিরপুরের উইকেট আজ ভালো ছিল বলেই দাবি বিসিবির কর্মকর্তাদের। তবু কম রানের ম্যাচ নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের পর্যবেক্ষণটা হচ্ছে, ‘এখানে দুটি জিনিস আমার মনে হয়েছে। একটা হলো অনুশীলন ম্যাচ যে দুটি দেখেছি সেগুলোর তুলনায় আজ বল কিছুটা নিচু হয়ে যাচ্ছিল দেখলাম। বৃষ্টি একটা নিয়ামক হতে পারে, আমি নিশ্চিত নই। তবে বৃষ্টিটা হওয়ার পর মনে হয়েছে ফাস্ট বোলারদের বল একটু লো হয়ে যাচ্ছিল।’
বিশ্লেষণে আরেকটা দিকও উঠে এসেছে বিসিবি সভাপতির চোখে, ‘আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে এত দিন পরে খেলা হচ্ছে। একটা টুর্নামেন্ট, কেউ তো হারতে চায় না, সবাই জিততে চায়। একটু তো জড়তা থাকবেই। আমার ধারণা, একটা করে ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরে খেলোয়াড়েরা আরও ছন্দে ফিরতে পারবে।’