Thank you for trying Sticky AMP!!

সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে একটু অতৃপ্তি

খারাপ ব্যাটিং অবশ্য করেননি, তবে ইনিংসগুলো আরও লম্বা হতে পারত সাকিবের। ফাইল ছবি

মাশরাফি বিন মুর্তজা সব সময়ই চান সাকিব আল হাসান যে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলুন অন্তত রান করুন। এবারের আইপিএলে বোলিংটা মোটামুটি ভালো হলেও সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে তৃপ্ত হওয়ার কথা নয় মাশরাফির। মাশরাফি কেন, নিজের ব্যাটিং নিয়ে বাঁহাতি অলরাউন্ডারও কি পুরোপুরি তৃপ্ত?

এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচেও সাকিবকে সাইডবেঞ্চে বসে থাকতে হয়নি। ১৫ ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন ১১ ইনিংসে। ২০.৮৮ গড়ে করেছেন ১৮৮ রান। স্ট্রাইক রেট মোটামুটি, ১১৮.৯৮। এখনো ফিফটি করা হয়নি, সর্বোচ্চ করেছেন ৩৫। যেহেতু পাঁচ-ছয়ে নামতে হয় টপ অর্ডারের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। তবে হায়দরাবাদের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাকিবের পরিসংখ্যানটা যে সবচেয়ে অনুজ্জ্বল, সেটি বললে ভুল হবে না। তাঁর পরে থাকবেন শুধু উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা, ১০ ম্যাচে যাঁর মোট রান তিন অঙ্কও ছোঁয়নি।

পরিসংখ্যান যদিও সব সময় প্রকৃত সত্যটা তুলে ধরে না। ৭ মে রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। সেই বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তুলেছিল চতুর্থ উইকেটে সাকিব-উইলিয়ামসনের ৬৪ রানের জুটি। সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছিল ৩৫ রানের সময়োপযোগী এক ইনিংস। পরিস্থিতি বিবেচনায় যেটি অবশ্যই মূল্যবান। ১৪৬ করেও ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হায়দরাবাদ জিতে যায় ৫ রানে।

সাকিবের আরেকটি ভালো ইনিংস এসেছিল ১৪ এপ্রিল ইডেন গার্ডেনে, তাঁর আগের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে। ১৩৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারানো হায়দরাবাদকে জয়ের প্রান্তে নিয়ে যায় সাকিব-উইলিয়ামসনের চতুর্থ উইকেটে ৫৯ রানের জুটি। সাকিব করেন মূল্যবান ২৭।

২৬ এপ্রিল রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে পাঞ্জাবের বিপক্ষে আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে হায়দরাবাদ। এবারও চতুর্থ উইকেটে ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত সাকিব। পার্থক্য বলতে অপর প্রান্তে ছিলেন মনীশ পান্ডে। সাকিব-মনীশের ওই ৫২ রানের জুটিটা না হলে হায়দরাবাদের ৬ উইকেটে ১৩২ রান করা কঠিনই ছিল। এই স্কোর শেষ পর্যন্ত ডিফেন্ড করে ফেলে হায়দরাবাদ। সাকিব করেন অতিগুরুত্বপূর্ণ ২৮ রান।

ভাবছেন কঠিন উইকেটে ম্যাচের রং বদলে দেওয়া ইনিংস দেখা গেছে যাঁর ব্যাটে, সাকিব খারাপটা করলেন কোথায়? পরিস্থিতি বিবেচনায় অবশ্যই ইনিংসগুলো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বেশির ভাগ ম্যাচেই কিন্তু ইনিংস লম্বা করার সুযোগ তাঁর ছিল। টি-টোয়েন্টিতে সবশেষ ফিফটি পেয়েছেন কবে, মনে আছে সাকিবের? প্রায় দুই বছর আগে, সিপিএলে গায়ানার বিপক্ষে। আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে প্রতিটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন, নামতে পেরেছেন পছন্দসই ব্যাটিং অর্ডারে। এমনও ম্যাচ গেছে সাকিব যখন নেমেছেন, তখন সেঞ্চুরিও করে ফেলা যায়! হাতে সময় নেই বা বল নষ্ট করা যাবে না—এমনটা ভেবে এলোমেলো চালানোর তাড়াও ছিল না অনেক ম্যাচে। ব্যাটিংয়ের এই অবারিত সুযোগটা তিনি নিজের দেশের বিপিএলেও অনেক সময় পান না। এবার যখন পেলেন, কতটা কাজে লাগাতে পেরেছেন, প্রশ্নটা সাকিবকে কিন্তু করাই যায়।

নিখাদ অলরাউন্ডার হিসেবে আইপিএলে যাঁরা খেলেছেন আন্দ্রে রাসেল, হার্দিক পান্ডিয়া, বেন স্টোকসদের সঙ্গে তুলনা করলে রান একটু কমই করতে পেরেছেন সাকিব। অবশ্য সাকিব প্রায় বলেন, ‘কত রান করলাম, কত উইকেট নিলাম, এটির চেয়ে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ দলে কতটা অবদান রাখতে পারলাম।’ অবদানের বিচারে সাকিবকে অবশ্য পিছিয়ে রাখা যাবে না। কিন্তু লম্বা ইনিংসের অতৃপ্তি তো থেকে গেছে! এই অতৃপ্তি দূর করার সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি।

আজ ইডেনে কলকাতার বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার আছে। এই বাধা টপকে গেলে ফাইনালও থাকবে। আইপিএল থেকে ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই সাকিব নিশ্চয়ই তৃপ্তি নিয়ে ফিরতে চাইবেন।