Thank you for trying Sticky AMP!!

সাকিবের 'প্রিয় প্রতিপক্ষ' ও দুই রহস্য

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচসেরার ট্রফি হাতে সাকিব আল হাসান। ছবি: বিসিবি
>

প্রথম ম্যাচেই ফিফটি, মুশফিকের সঙ্গে জুটি এবং কালকের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড-পরশু ওভালের মিক্সড জোনে সাকিব বললেন তিন প্রসঙ্গেই।

পরশু ওভালের মিক্সড জোনে ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ কথাটা শুনে মজাই পেলেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত জয়-দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে ‘ডান’ লিখে বাংলাদেশ এবার তাকাচ্ছে নিউজিল্যান্ডের দিকে। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড শুনলেই সাকিবের চোখটা কি জ্বলজ্বল করে ওঠে? এই দলটার বিপক্ষে পারফরম্যান্স সব সময়ই দুর্দান্ত বলে ‘নিউজিল্যান্ড তাঁর প্রিয় প্রতিপক্ষ’ কথাটা প্রায় প্রতিষ্ঠিতই হয়ে গেছে।

সাকিব অবশ্য বলতে পারতেন, কোন দলের বিপক্ষে আমার পারফরম্যান্স নেই! সরাসরি কথাটা না বলে বরং বললেন, ‘আমার কাছে প্রিয় প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই!’ তা তো অবশ্যই-প্রতিপক্ষ, মাঠ, সিরিজ, টুর্নামেন্ট যেটিই হোক; তিনি ধারাবাহিক বলেই অলরাউন্ডার র‍্যাঙ্কিংয়ের সিংহাসনে তিনি বসতে পেরেছেন বারবার। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর পারফরম্যান্স সব সময়ই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, এটিও তো এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আইসিসির টুর্নামেন্টে যে একবার কিউইদের হারিয়েছে বাংলাদেশ, সেটির নায়ক সাকিবই। কার্ডিফে গত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই দুর্দান্ত জয়ের স্মৃতি কখনোই ধূসর হওয়ার নয়। যে ম্যাচে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে গড়েছিলেন ২২৪ রানের অসাধারণ এক জুটি। দুজনই করেছিলেন সেঞ্চুরি। তবে ম্যাচের সুর বদলে দিতে সাকিবের ইনিংসটা বেশি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল বলে ম্যাচসেরার পুরস্কার তাঁরই হাতে উঠেছিল।

ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাকিব একবারই ৪ উইকেট পেয়েছেন, সেটিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। গত বিশ্বকাপে হ্যামিল্টনে ৫৫ রানে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট-ক্রিকেটের বড় মঞ্চে এখনো ওটাই তাঁর সেরা বোলিং হয়ে আছে। শুধু ওয়ানডেতেই নয়, টেস্টে সাকিবের সর্বোচ্চ ২১৭ রান, সেরা বোলিং-৩৬ রানে ৭ উইকেট, সবই কিউইদের বিপক্ষে। যে দলটার বিপক্ষে ধারাবাহিক দ্যুতি ছড়ান, তাদের সঙ্গেই গত ফেব্রুয়ারিতে খেলতে পারেননি সফরের আগমুহূর্তে পাওয়া আঙুলের চোটে। উইলিয়ামসন-গাপটিলদের কাছে সতীর্থদের ধবলধোলাই হওয়ার দৃশ্য অসহায় চোখে দেখেছেন ঢাকায় বসে। সেই নিউজিল্যান্ডকে কাল আবার পাওয়া যাচ্ছে। টুর্নামেন্টের পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করতেই শুধু নয়, উইলিয়ামসনদের সঙ্গে কিছু হিসাব-নিকাশও চুকানোর আছে।

সাকিব অবশ্য নিউজিল্যান্ডকে দেখছেন সতর্ক চোখে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেভাবে জেতা গেছে, একই পথ ধরে এগোলে কিউইদের হারানো কঠিন কিছু নয় বলে মনে করেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার, ‘নিউজিল্যান্ড আমাদের জন্য খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ। ওরা আইসিসির টুর্নামেন্টে খুব ভালো খেলে। জিততে হলে ওদের সঙ্গে খুব ভালো খেলতে হবে। ওরা দুই দিন আগে ভালো একটা দলের (শ্রীলঙ্কা) বিপক্ষে ১০ উইকেটে জিতেছে। যদি আমরা আমাদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারি ফল এমনই হতে পারে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেটা হলো)।’

ফিফটি রহস্য
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ মানেই তাঁর ফিফটি। টানা চার বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ফিফটি পেলেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। টানা চার বিশ্বকাপে দলের প্রথম ম্যাচে ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান সাকিব। আগের তিনটি ফিফটি ম্যাচসেরার পুরস্কার এনে দিতে পারেনি, পরশু দিয়েছে। বিশ্বকাপে এটিই তাঁর প্রথম ম্যাচসেরার পুরস্কার। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ফিফটি করবেনই, এ ব্রত নিয়েই কি খেলতে নামেন? এর রহস্যটাই-বা কী? সাকিব হাসেন, ‘জানি না! তবে অন্য বিশ্বকাপের মতো শেষটা ওভাবে করতে চাই না। আরও ভালো যেন হয় সেই চেষ্টা থাকবে। তবে শুরুটা ভালো হলে সুবিধা একটু বেশি থাকে। যেহেতু আরও ৮ ম্যাচ আছে, চেষ্টা থাকবে দলে আরও অবদান রাখতে।’

জুটি রহস্য
ওয়ানডে এমনকি টেস্টেও বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল জুটি সাকিব-মুশফিক। ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও দুজন গড়লেন অসাধারণ এক জুটি, যেটি গড়ে দিল ম্যাচের পার্থক্য। ৭৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে দুজন যোগ করলেন ১৪২ রান, বিশ্বকাপে যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটি এটিই। দুজনের এমন জুটি আগে অনেকবার দেখা গেছে বলেই সাকিব-মুশফিক হয়ে উঠেছেন দেশের সফলতম ওয়ানডে জুটি। এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে দুজনের জুটিতে এসেছে ২৭৮৮ রান। ২২ গজে মুশফিকের সঙ্গে জুটিটা এত জমে কীভাবে, পরশু ম্যাচ শেষে সাকিব সে রহস্য উন্মোচন করলেন এভাবে, ‘বিকেএসপিতে পড়েছি, সেটির চেয়ে অনূর্ধ্ব-১৫ ক্রিকেট থেকে খেলছি মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে। বেশির ভাগ সময়ে ব্যাটিং অর্ডারে তাঁর পরে কিংবা আগে নামা হয়েছে। ওনার সঙ্গে তাই অনেক ব্যাটিং করা হয়েছে। জাতীয় দলে আসার পরও তা-ই হয়েছে। এ কারণে সুযোগগুলো সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর সঙ্গে অনেক বড় বড় জুটি হয়েছে। (বিশ্বকাপের) বাকি ৮ ম্যাচে যদি ৪-৫টা এমন বড় জুটি গড়তে পারি, অনেক ভালো হবে।’