Thank you for trying Sticky AMP!!

আহমেদাবাদে অনেক রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে কোহলিরা।

সিডনির পিচ বানাতে আহমেদাবাদের কিউরেটরকে চান লায়ন

এবার হয়তো একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন ভারত–ইংল্যান্ড আহমেদাবাদ টেস্টের পিচ কিউরেটর। গত বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে সিরিজের তৃতীয় টেস্টটি দুই দিনেই শেষ হয়ে যাওয়ার পর চারদিক থেকে তির ছুটে যাচ্ছে ওই ম্যাচের পিচ কিউরেটরের দিকে। সমালোচনার সুরটা এ রকম—ধুলা ওড়া এমন স্পিন–বান্ধব উইকেট কেন বানানো হলো!

চারদিক থেকে ছুটে আসা তিরে বিদ্ধ হতে থাকা ওই কিউরেটরের সমর্থনে আগেই কথা বলেছেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু অশ্বিন তো তাঁর পাশে দাঁড়াবেনই। স্পিনার হিসেবে ওই পিচের সুবিধা তো তিনিই ভোগ করেছেন। ম্যাচজয়ী ভারতের অধিনায়ক কোহলিরও তাঁর পক্ষে কথা বলাটা স্বাভাবিকই। তবে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের পিচ কিউরেটরকে নিয়ে এবার কিছুটা ঠাট্টার ঢংয়েই বললেন অস্ট্রেলীয় অফ স্পিনার নাথান লায়ন।

আহমেদাবাদ টেস্ট শেষ হতে সময় লেগেছে দুই দিনেরও কম।

লায়নের ঠাট্টা করেই জানিয়েছেন, আহমেদাবাদের উইকেট দেখে তিনি নাকি রীতিমতো ‘উচ্ছ্বসিত’, ‘আমি রাত জেগে (আহমেদাবাদ টেস্টে খেলার সময়টা অস্ট্রেলিয়ায় রাত ছিল) খেলাটা দেখেছি। এককথায় এটা ছিল দুর্দান্ত। আমি তো ওই কিউরেটরকে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নিয়ে আসার কথা ভাবছি!’

আহমেদাবাদ টেস্ট দেখে নিশ্চয়ই লায়নের হাত নিশপিশ করছিল। নিশ্চয়ই বারবার মনে হয়েছে, ‘ইশ! এই উইকেটে যদি বোলিং করতে পারতাম।’ ভারতের প্রথম ইনিংসে ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট মাত্র ৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে লায়নের আক্ষেপটা যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। ভারতীয় স্পিনার বিশেষ করে অক্ষর প্যাটেল আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল যেভাবে আহমেদাবাদের উইকেটে ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল, এতে লায়ন তেমন উইকেটে খেলতেই চাইবেন।

আহমেদাবাদ টেস্টে ছিল স্পিনারদের রাজত্ব।

আহমেদাবাদে দুই দিনে শেষ হওয়া টেস্টে ১০ উইকেটে হেরেছে ইংল্যান্ড। দিবারাত্রির টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল জো রুটের দল। কিন্তু প্রথম ইনিংসে তারা অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১১২ রানে। দুই দিনে যে ৩০টি উইকেট পড়েছে, এর ২৮টিই নিয়েছেন স্পিনাররা। ১১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ভারতের বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। অশ্বিন নিয়েছেন ৭ উইকেট। ইংল্যান্ডের পার্টটাইম স্পিনার রুটও ৬ ওভার বল করে ৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

আহমেদাবাদে স্পিনারদের বল পিচ করার পর ঘুরেছে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। বোলারও বুঝতে পারছিলেন না কোন বলটি কোন দিকে যাবে। প্রথম দিন থেকেই উইকেটে রীতিমতো ধুলা উড়েছে। এমন উইকেটের সমালোচনা করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন, অ্যালিস্টার কুক ও অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার ডেভিড লয়েডও। সমালোচকদের তালিকা থেকে বাদ যাননি ভারতের যুবরাজ সিং আর অজিত আগারকারও।

আহমেদাবাদ টেস্ট ১১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হযেছেন বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল।

তবে স্পিনিং উইকেট বানানোতে দোষের কিছু দেখছেন না লায়ন। একজন স্পিনার হিসেবে তিনি এর পক্ষেই কথা বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সিমিং উইকেটে খেলি। সেসব উইকেটে ৪৭ বা ৬০ রানে অলআউটও হই। সেই সময় কেউ কিছু বলে না।’ অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার এরপর যোগ করেন, ‘কিন্তু বল যখন কোনো উইকেটে স্পিন করতে থাকে, বিশ্বের সবাই কান্নাকাটি শুরু করে। আমি এর মানে বুঝতে পারি না।’

নিজে একজন স্পিনার। এ কারণেই হয়তো স্পিনারদের উইকেট পাওয়া দেখতে ভালো লেগেছে লায়নের। আহমেদাবাদ টেস্ট দুই দিনে শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে এত সমালোচনার পরও এ কারণেই হয়তো তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে এটা ভালো লেগেছে। আমি এটা সমর্থনও করি। খুব বিনোদনদায়ী একটি ম্যাচই হয়েছে।’