Thank you for trying Sticky AMP!!

সেদিন ছিল 'শুক্রবার', তাই দ্রাবিড়কে আউট দিতে বলেছিলেন শোয়েব

সিরিজ শেষে আনন্দে দ্রাবিড়ের বাধা সহ্য হচ্ছিল না শোয়েব-আফ্রিদির। ফাইল ছবি

মাঠের সিদ্ধান্ত নিজের পক্ষে আনার জন্য কত কিছুই না করেন খেলোয়াড়েরা। ব্যাটসম্যানরা এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করতে পা নাড়ান, উইকেটরক্ষকেরা গলা ফাটান আম্পায়ারকে প্রভাবিত করতে। বোলার তো আবেদন করতে করতে উইকেটের অন্য প্রান্তেই পৌঁছে যান। কিন্তু শোয়েব আখতার যা করেছিলেন, সেটা একটু ব্যতিক্রমই। আম্পায়ারকে বলেছিলেন, আজ ‘ফ্রাইডে নাইট’, তাড়াতাড়ি আউট দিয়ে দিন।

১৯৯৯ সালে তিন জাতির পেপসি কাপ খেলতে ভারতে গিয়েছিল পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের দুই ম্যাচে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। কিন্তু গ্রুপ পর্বের মতো ফাইনালেও ভারতকে পাত্তাই দেয়নি পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে ২৯১ রান তুলে ফেলেছিল পাকিস্তান। ২৯২ রানের লক্ষ্যে বেঙ্গালুরুতে শুরুটা বাজে হয়েছিল ভারতের। দ্বিতীয় ওভারেই আউট হন ওপেনার সদাগোপান রমেশ। ক্ষণিক পর সৌরভ গাঙ্গুলীও বিদায় নেন। কিন্তু উইকেটে রাহুল দ্রাবিড় রয়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন শোয়েব, ‘রাহুল দ্রাবিড়ের মতো কোনো ব্যাটসম্যান থাকলে তাঁকে আমরা লেংথ বল করতাম। স্টাম্পের কাছাকাছি থেকে বল করাতাম, ব্যাট ও প্যাডের মাঝের ফাঁক লক্ষ্য করে বল ছুড়তাম, যাতে প্যাডে বল লাগে। বেঙ্গালুরুতে এক ফাইনাল ম্যাচে আমি রমেশকে দ্রুত আউট করে ফেলেছিলাম, ৩-৪ উইকেট বেশ দ্রুত পড়ে গিয়েছিল। সেদিন শচীন টেন্ডুলকার খেলেনি।’

বরাবরই দ্রাবিড়কে আউট করা কত কঠিন ছিল, সেটা জানান আফ্রিদি। আকাশ চোপড়ার ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলতে এসে সে প্রসঙ্গেই বলছিলেন। তবু সেদিন কেন দ্রাবিড়কে দ্রুত আউট করা দরকার ছিল সেটা আলাদা করে বললেন শোয়েব, ‘শহীদ আফ্রিদি এবং আমি বললাম রাহুল দ্রাবিড় অনেক সময় নেবে, আর আজ আমাদের “ফ্রাইডে নাইট”। আফ্রিদি বলল কিছু একটা কর এবং ওর উইকেট নাও। না হলে সে অনেকক্ষণ খেলবে। আমি তাঁর প্যাডে বল লাগালাম আর আম্পায়ারকে বললাম আউট দিয়ে দিন। আমি এটাও বললাম আজ আমাদের “ফ্রাইডে নাইট!” কিন্তু আম্পায়ার আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতেছি। দ্রাবিড় খুবই কঠিন ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এক ব্যাটসম্যান ছিল। আমার জন্য সে খুবই কঠিন ছিল। আমাকে খুব সহজে খেলত সে।’

দ্রাবিড় অবশ্য সেদিন খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখেননি। শোয়েবকে হতাশ করলেও ম্যাচ সেরা আজহার মেহমুদের পঞ্চম শিকার বনে আউট হয়েছেন ২৫ রানে। ৫৬ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্রাবিড়ের বিদায়ের পরই হার নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১৬৮ রানে থেমে ১২৩ রানে ফাইনাল হারে স্বাগতিকেরা।

একটু স্মরণ করিয়ে দেওয়া যাক, ১৯৯৯ সালের ৪ এপ্রিল দিনটা ছিল রবিবার। শোয়েবের ‘ফ্রাইডে নাইট’ কথাটির অর্থ হলো কাজ ফুরোনোর পর মজা করার দিন। ভারতের এসে সিরিজ শেষ করার রাতে আগে ভাগেই হোটেলে ফিরে পার্টি করতে চেয়েছিলেন শোয়েব-আফ্রিদি। আর এ কারণেই দ্রাবিড়কে আউট করার জন্য এমন তাড়া দেখা দিয়েছিল তাঁদের মাঝে।