Thank you for trying Sticky AMP!!

১০০-তে সেরা মাশরাফি, ২০০-তেও সেরা মাশরাফি

আজ সব চোখ ছিল মাশরাফির ওপর। নির্বাচনে নাম লেখানোর পর প্রথম ম্যাচ। আর তাতেই মাশরাফি সেরা খেলোয়াড়! তার ওপর এটি ছিল তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২০০তম ম্যাচও।
ওয়ানডেতে ১২তম বারের মতো ম্যাচ সেরা হলেন মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো

মাশরাফি বিন মুর্তজাকে এখন এক শতে এক শ বলা যায়। চাইলে দুই শতে দুই শও বলতে পারেন। দেশের পক্ষে শততম ম্যাচটা মাশরাফি কোনো দিন ভুলবেন না। আজ নিজের ব্যক্তিগত ২০০তম ম্যাচটাকে বললেন ‘ভোলার সুযোগ নেই।’ সেবারও বাংলাদেশ জিতেছিল, এবারও জিতল। সেবারও ম্যাচসেরা হয়েছিলেন মাশরাফি, হলেন এবারও।

বাংলাদেশের শততম ম্যাচটা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। এর থেকেও অনুমান করা যায়, কত আগের ঘটনা সেটি। ১৪ বছর আগে এমনই ডিসেম্বরের শীতে বাংলাদেশ হারিয়ে দিয়েছিল ভারতকে। তখন বাংলাদেশ জিততই কালেভদ্রে। তার ওপর ভারত! ব্যাট হাতে ৩১ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতে মাত্র ৩৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। বীরেন্দর শেবাগকে শূন্য রানে ফিরিয়ে ২২৯ রানের পুঁজিটাকেও বিশ্বাস করাতে শুরু করিয়েছিলেন। তাঁর দ্বিতীয় শিকার ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি নামের এক লম্বা চুলের তরুণ, মাত্র তিন দিন আগে অভিষেক হয়েছিল যাঁর।

অলরাউন্ডার মাশরাফিতে সেদিন ভারত ম্যাচ হেরেছিল ১৫ রানে। সুনামি নেমে আসার রাতে ভারতীয় ক্রিকেট বিধ্বস্ত হয়েছিল তখনকার পুঁচকে বাংলাদেশের কাছে। এত কিছু বিশদভাবে মনে থাকার কারণও ওই একটাই। বাংলাদেশের বিরল ওয়ানডে জয়, সেটিও ভারতের মতো সর্বজয়ী দলের বিপক্ষে।

এবার প্রেক্ষাপট আলাদা। এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো এককালের পরাশক্তি বাংলাদেশের কাছে আন্ডারডগ। তবু মাশরাফির লড়াইটা থামেনি। এ লড়াই শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরে। নিয়ত নিজেকে প্রমাণের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন এত এত পারফরমার পেয়ে গেছে বাংলাদেশ, সবাইকে ছাপিয়ে ম্যাচসেরা হওয়া এখন আর নিয়মিত অভিজ্ঞতা হয়ে আসে না তাঁর কাছে। ২০১৪, ২০১৬...আবার দুই বছর বিরতিতে ম্যাচসেরা হলেন মাশরাফি। এমন এক দিনে, যখন তাঁর ওপর চোখ ছিল রাজনীতি কতটা প্রভাব ফেলে ক্রিকেটার মাশরাফির ওপর। মাশরাফি আজ দেখিয়ে দিলেন, দলনেতা বলেই তিনি নেতা হতেও পারেন!

ম্যাচ শেষে তাই অধিনায়ক হিসেবে নয়, মাশরাফি এলেন ম্যাচসেরা হিসেবে। সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্মৃতির ভেলায় ভেসে চলে গেলেন ১৪ বছর আগের দিনটায়, ‘১০০তম ম্যাচের (বাংলাদেশ দলের) ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়াটা মনে আছে। বোধ হয় ভারতের সঙ্গে ম্যাচটি ছিল, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। এই স্মৃতি অনেক দিন ধরেই ছিল, এখনো আছে। আজকেরটা তো মাত্রই হলো, ভোলার সুযোগ নেই।’

১০০–তেও সেরা হয়েছিলেন, ২০০–তেও হলেন! এ কি কাকতাল? মাশরাফি বেশ প্রত্যয় নিয়ে বললেন, ‘আসলে দুনিয়ায় কাকতাল ব্যাপার বলে কিছু নেই। আমরা বানাই। ঘটনা ঘটে যায়, এই আরকি।’

ওয়ানডেতে এ নিয়ে ১২ বার ম্যাচসেরা হলেন। এক ডজন ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফি। এ নিয়ে অনুভূতি জানাতে বিশেষ আপ্লুত অবশ্য মনে হলো না তাঁকে, ‘মাইলফলক বলে আসলে ওই রকম কিছু মনে হচ্ছে না। তবে অবশ্যই ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ হতে পারলে ভালো লাগে। খুব স্বাভাবিক। বিশেষ করে ম্যাচটা জিততে পেরেছি।’

মাশরাফির ২০০তম ম্যাচ হয়েছে, আবার হয়ওনি। দুটি ম্যাচ খেলেছেন এশিয়া একাদশের হয়ে। ফলে দেশের হয়ে তাঁর ২০০তম ম্যাচ হবে সিলেটের ওয়ানডেতে। বড় উপলক্ষ যে তিনি বেছে নিতে জানেন, এ আর নতুন কী! তাঁর ‘ধরে দিবানি’ ক্রিকেটীয় আখ্যান হয়ে গেছে। সিলেট ম্যাচেও কি আবার...

মাশরাফির শুভাকাঙ্ক্ষী হলে কায়মনোবাক্যে আপনার তা প্রার্থনা করার কথা। সিলেটের তৃতীয় ওয়ানডে...কে জানে, দেশের মাটিতে মাশরাফির শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ কি না!