Thank you for trying Sticky AMP!!

২৫ দলের বিশ্বকাপ চান টেন্ডুলকার

শচীন টেন্ডুলকার

এ কারণেই তিনি শচীন টেন্ডুলকার। বাকি সবার চেয়ে আলাদা। খেলোয়াড়ি জীবনে এটা প্রমাণ করেছেন ব্যাট হাতে, অবসরের পর প্রমাণ দিচ্ছেন ক্রিকেট নিয়ে নিজের ভাবনা বিনিময় করেও। আগামী বিশ্বকাপে দলসংখ্যা কমিয়ে ১০টি করার কথা ভাবছে আইসিসি। প্রভাবশালী দেশগুলোর সমর্থনও আছে এই পরিকল্পনায়। তবে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টেন্ডুলকার। শুধু বিরোধিতাই করেননি, এটা ক্রিকেটের জন্য ক্ষতিকারক হবে বলেও মন্তব্য করেছেন। কমানো দূরের কথা, টেন্ডুলকার চান আগামী বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫টি করা হোক।
আগামী বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা কমিয়ে ১০টি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই ফেলেছে আইসিসি। বাকি শুধু চূড়ান্ত অনুমোদনের। আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসনের ভাষ্যমতে, বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আভিজাত্য ধরে রাখতে এবং ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত। যদিও এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত হওয়া ম্যাচগুলোর ফল বলছে উল্টোটা। একমাত্র অকল্যান্ডে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচটি ছাড়া বড় দলগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ ম্যাচই হয়েছে একতরফা। খুদে বলে পরিচিত দলগুলোর ম্যাচই হয়েছে বেশি রোমাঞ্চকর। সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ড তো এরই মধ্যে হারিয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। বিশ্বকাপে দল কমানোর খবরটা প্রকাশের পরই তাই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সহযোগী দেশগুলো। আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড তো ধুয়ে দিয়েছেন আইসিসিকে, ‘এটা খুবই হতাশার যে, আমরা টুর্নামেন্টে ভালো খেলছি, তার পরও আইসিসি দল কমাতে চাইছে। যখন আপনি দল কমাতেই থাকবেন, তখন ওটাকে বিশ্বকাপ বলা যায় না।’ সিডনিতে পরশু আইসিসির এক বিশেষ ভোজে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ছোট দলগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বকাপে আইসিসির শুভেচ্ছাদূত টেন্ডুলকারও, ‘আমি শুনতে পেলাম আইসিসি পরের বিশ্বকাপে দল কমিয়ে আনতে চাইছে। এটা আমার জন্য কিছুটা হতাশাজনক খবর। কারণ ক্রিকেটার হিসেবে আমি চাই খেলাটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের ফলে আমরা এক ধাপ পিছিয়ে যাব। আমাদের তো ছোট দলগুলোকে উৎসাহিত করার একটা পথ খুঁজে বের করতে হবে।’
পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে ছোট দলগুলোও নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে পারবে বলে মনে করেন টেন্ডুলকার, ‘ছোট দলগুলো প্রতি বিশ্বকাপেই অনেক বড় দলকে চমকে দিয়েছে। তারা এটা নিয়মিত করতে পারবে যদি তাদের যথাযথ সুযোগ দেওয়া হয়। এখন ওরা প্রতি চার বছর পর একবার সুযোগ পায় অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলগুলোর সঙ্গে খেলার। এটা তো তাদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে।’
তথাকথিত এই ছোট দলগুলোকে আরও সুযোগ দিতে নিজের মতো করে একটা পরিকল্পনাও দিয়েছেন ‘লিটল চ্যাম্পিয়ন’, ‘অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার ‘এ’ দলগুলো কেন নিয়মিত এসব ছোট দলের সঙ্গে খেলছে না? কেন আমরা ১০ দলের বিশ্বকাপ করার কথা ভাবছি, আমরা তো পরের বিশ্বকাপটা ২৫ দল নিয়েও করতে পারি। শুধু ছয়-সাতটি দল খেললে ক্রিকেট কখনো বৈশ্বিক হবে না। খেলাটাকে ছড়িয়ে দিতে হলে এর সঙ্গে আরও অনেককে জড়াতে হবে, যাতে ক্রিকেটের ভক্ত-সমর্থক বাড়ে।’
ওয়ানডে ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় করতে আরেকটা অভিনব প্রস্তাবও দিয়েছেন টেন্ডুলকার। ৫০ ওভারের ম্যাচ দুই ভাগ করে ২৫ ওভারের দুটি করে ইনিংস করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। অনেকটা টেস্টের মতো, তবে এখানে উইকেট থাকবে ১০টি। তাঁর এতগুলো প্রস্তাবে আইসিসি আদৌ কোনো সাড়া দিয়েছে কি না এমন প্রশ্নে টেন্ডুলকারের জবাব, ‘আমি এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি, তবে অপেক্ষায় আছি।’
টেন্ডুলকারের মতো হয়তো অপেক্ষায় আছেন আরও অনেক ক্রিকেটপ্রেমীও। ক্রিকইনফো।