Thank you for trying Sticky AMP!!

খালেদ মাহমুদ সুজন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

মাহমুদউল্লাহদের নিয়ে মাহমুদ: জানি না কেন ছাড়তে চায় না

এই প্রজন্মের ক্রিকেটাররা অবসরে যাওয়ার সাহস কেন দেখাতে চান না, সেটি বুঝে উঠতে পারেন না সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ। তবে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত একান্তই ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। এশিয়া কাপের দলে সুযোগ না পাওয়া মাহমুদউল্লাহ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মাহমুদ বলেন, জাতীয় দলের নির্বাচক কমিটির কেউই মাহমুদউল্লাহর ‘শত্রু’ নন। অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান আবার ফিরে আসার লড়াই করবেন বলেও বিশ্বাস তাঁর।

বাংলাদেশের সর্বশেষ তিনটি ওয়ানডে সিরিজের দলে না থাকলেও সম্প্রতি জাতীয় দলের অনুশীলনে মাহমুদউল্লাহর উপস্থিতির কারণে তাঁর দলে ফেরার আলোচনা শুরু হয়েছিল। তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন দল ঘোষণার সময় জানিয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেই মাহমুদউল্লাহকে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আজ জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় মাহমুদকে।

Also Read: মাহমুদউল্লাহ যে কারণে এশিয়া কাপের দলে নেই

এ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের অবসর নেওয়ার ‘সাহস’ কম কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ বলেন, ‘(অবসর নেওয়ার সাহস) আমার তো ছিল। আমি তো অবসর নিয়েছি। আমি বুঝতে পেরেছি, এখন আমার সময় শেষ। আমি যদি না ছাড়ি, নতুন মুখরা কীভাবে আসবে।’

২০০৬ সালে বগুড়ায় শ্রীলঙ্কা সিরিজে অবসরে যান সাবেক অধিনায়ক মাহমুদ। এখন পর্যন্ত ঘোষণা দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শেষ ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার তিনি। সিদ্ধান্তটা যে কঠিন, তা মানছেন তিনিও, ‘এটা ক্রিকেটারদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কখন “বিদায়” বলার সঠিক সময়। এটা খুব কঠিন। আমি কেঁদেছিলাম ওই সময়ে। আমিও ওই মুহূর্তটা পার করেছি। আমার যেটা ভালোবাসা, সেটা আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম।’

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সঙ্গে খালেদ মাহমুদ

তখনকার সঙ্গে এখনকার পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে মাহমুদ বলেন, ‘আমরা তো আর মাহমুদউল্লাহদের মতো এত পেশাদার ছিলাম না। এখনকার মতো এত টাকা পেতাম না ক্রিকেট খেলে। খুব অল্প টাকায় খেলেছি। তবে তখন ওইটা আমাদের ভালোবাসা ছিল। সেটা আমরা ছাড়তে পেরেছি। আমি জানি না, এই প্রজন্মের ছেলেরা কেন ছাড়তে চায় না, ছাড়ার সাহসটা তাদের আসে না। তবে একটা সময় আপনাকে ছাড়তে হবে। আকরাম (খান) ভাই ছেড়েছেন, (মিনহাজুল) নান্নু ভাই—বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন, তিনিও ছেড়েছেন। হাবিবুল বাশার—একটা সময় তাকে “মিস্টার ফিফটি” বলা হতো, বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছে, অনেক রান করেছে। সে-ও ছেড়েছে।’

Also Read: এশিয়া কাপের দলে নেই মাহমুদউল্লাহ, নতুন মুখ তানজিদ

কেউ খেলা চালিয়ে যেতে চাইলে লড়াইটা তাঁকেই করতে হবে, এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মাহমুদ, ‘ক্রিকেটারদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আমি মনে করি, এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা কেউ জোর করতে পারব না। আমরা কেউ বলতে পারব না, তোমার বয়স হয়েছে। এ কথা বলার অধিকার আমাদের কারও নেই। তারা নিজেদের কথা চিন্তা করবে। তারা যদি মনে করে, “আমার আরও খেলা উচিত, দু–তিন বছর খেলতে পারব।” ঠিক আছে, কোনো অসুবিধা নেই। তবে আপনি তখন এটা বলতে পারবেন না যে “আমাকে বাদ দিতে পারবেন না”। বাদ আপনি পড়তেই পারতেন। ফর্ম চিন্তা করে বা আপনার জায়গায় অন্য একটা ছেলেকে সুযোগ দিতেই পারে। আসলে এগুলো নিয়ে অনেক বিতর্কের সুযোগ আছে।’

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

বর্তমান নির্বাচক কমিটির প্রসঙ্গ টেনে এরপর মাহমুদ যোগ করেন, ‘তবে আমি এটাও বলি যে জবাব দেওয়া বা প্রমাণ করা আসলে ভুল কথা। একজন ক্রিকেটার নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করবে। তাকে বাছাই করা বা না করার জন্য নির্বাচক কমিটি আছে। আপনারা কি বলবেন—নান্নু ভাই, হাবিবুল বাশার, আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদের (মাহমুদউল্লাহ) শত্রু? কোনো দিনও না। রাজ্জাক আর রিয়াদ তো এক দলেও খেলেছে। এগুলো আসলে ভুল কথা। ওনারা অনেক পরিকল্পনা করেন।’

অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে মাহমুদ মনে করেন, মাহমুদউল্লাহর সুযোগ ফুরিয়ে যায়নি এখনো, ‘আমি এখনই বলব না যে ওর শেষটা দেখছি। এখনো রিয়াদ ভালো লড়াকু মানসিকতা রাখে। দলের কম্বিনেশন বা যে কারণেই বাদ পড়ুক না কেন, তাতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। এটাও সত্যি কথা, রিয়াদের বয়সও হচ্ছে। তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি, রিয়াদ যেভাবে লড়াই করে, চেষ্টা করে, তাতে “শেষ হয়ে গেছে” বলাটা ঠিক হবে না। সুযোগ আবার আসতেও পারে।’

Also Read: মাহমুদউল্লাহ যে চ্যালেঞ্জ জানালেন নিজেকে

এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করা হলেও বিশ্বকাপের জন্য এখনো দল দেয়নি বাংলাদেশ। আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঘোষণা করতে হবে বিশ্বকাপের প্রাথমিক দল। ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৫ জনের চূড়ান্ত দলও দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে বাদ পড়া মাহমুদউল্লাহর বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেওয়াটা কঠিন।

মাহমুদও বলছেন সেটিই, ‘এখনই “রিয়াদ শেষ হয়ে গেছে” বলাটা খুব দ্রুত হয়ে যাবে। আপনি একবার ক্রিকেটার হলে সব সময়ই ক্রিকেটার। রিয়াদ যতক্ষণ না পর্যন্ত বলছে ও শেষ করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত লাইনে সে অবশ্যই থাকবে। রিয়াদ বাংলাদেশে খেলার মতো যোগ্যতা অবশ্যই রাখে। (বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া) চ্যালেঞ্জিং তো অবশ্যই হবে। এটাই সত্যি কথা। কেউ খারাপ খেলুক, রিয়াদ ওখানে জায়গা করে নিক, আমি এটাও বলতে পারি না। আবার এটাও বলতে পারি না, কেউ চোটে পড়ুক আর রিয়াদ ওখানে খেলুক। যদি যোগ্যতা থাকে, সে অবশ্যই সুযোগ করে নেবে।’