Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্বকাপ ট্রফির সঙ্গে দুই অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও প্যাট কামিন্স

জমে উঠুক আবেগ আর প্রত্যাশার লড়াই

রোহিত শর্মা বা প্যাট কামিন্স—আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল শেষে কেউ একজন বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে তোলার আগপর্যন্ত এউইন মরগানই বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া মরগান ‘ব্যাটন’টা আরেকজনের হাতে যাওয়ার আগে আইসিসির ওয়েবসাইটে কলামে লিখেছেন দুই ফাইনালিস্টকে নিয়ে—

বিশ্বকাপ জেতা মানে শুধু ট্রফি উঁচিয়ে ধরা নয়। এটা অতুলনীয় এক অনুভূতি, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়, সীমানা ও প্রজন্ম ছাপিয়ে ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করে। লর্ডসে ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে এই উচ্ছ্বাসের অভিজ্ঞতা থাকায় আমি জানি, এমন একটা মুহূর্ত কী রকম প্রেরণা দেয়।

ক্লাইভ লয়েড, কপিল দেব, অ্যালান বোর্ডার, ইমরান খান, অর্জুনা রানাতুঙ্গা, স্টিভ ওয়াহ, রিকি পন্টিং, এম এস ধোনি, মাইকেল ক্লার্কের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিরা এবং তাঁদের দল নিজেদের গৌরবদীপ্ত ত্যাগ, নিবেদন আর দলবদ্ধতার মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নশিপ অভিযানে ইতিহাসে নাম খোদাই করে নিয়েছে।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে এখন আরেকটি ব্লকবাস্টার ইভেন্টের মঞ্চ তৈরি হয়ে আছে। ১ লাখ ৩০ হাজার আসনের এই মাঠে হয়েছে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ, এবার মঞ্চায়িত হতে চলেছে স্বাগতিক ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার চরমতম লড়াইয়ের।

গতকাল ফাইনালের দুই অধিনায়ক আহমেদাবাদের ঐতিহাসিক আদালাজ স্টেপওয়েলে প্রথাগত ফাইনাল-পূর্ব ফটোসেশনে অংশ নিয়েছেন। কোনো সন্দেহ নেই যে আজকের ফাইনাল ঘিরে তাঁরা আবেগের ঘূর্ণাবর্তে আছেন। যদিও ফাইনালের দিনটি এমনিতেই দুর্দান্ত প্রদর্শনীর প্রতিশ্রুতি দেয়, তবে এই আয়োজনের আসল মাহাত্ম্য দুই দলের মাঠের ক্রিকেটীয় শৌর্যে।

১০ ম্যাচের সব কটিতে জিতে ভারত এখন পর্যন্ত অপরাজিত। রান সংগ্রাহকদের তালিকায় বিরাট কোহলি আর উইকেট সংগ্রাহকদের তালিকায় মোহাম্মদ শামির শীর্ষে থাকা এবং ভারতীয় দলের পারমরম্যান্স অবিশ্বাস্যের চেয়ে কম কিছু নয়।

Also Read: বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে পাঁচতলা কূপের সিঁড়িতে রোহিত-কামিন্স

অধিনায়ক রোহিত শর্মার প্রভাব ভারতের এই দলকে আলাদা করে তুলেছে। গত বছর অ্যাডিলেডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর রোহিত এই দলের ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন আনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। শুধু রান করাই নয়, ভারত এখন তাঁর নেতৃত্বে আক্রমণাত্মক ও ভীতি জাগানো ধারার ক্রিকেট খেলছে। রোহিতের ব্যক্তিগত রূপান্তরের সাক্ষ্য দিচ্ছে তাঁর স্ট্রাইক রেট, যা ক্যারিয়ার গড় ১০২ থেকে বিশ্বকাপে ১২৪-এ গিয়ে ঠেকেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারত একই মনোভাব এবং একই ধারার ক্রিকেট ফাইনালেও ধরে রাখতে পারে কি না?

ফাইনাল শেষে ট্রফিটা হাতে তুলবেন যে কোনো একজন

পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, যাদের শুরুটা হয়েছিল দুই হারে, তারা এখন অষ্টম ফাইনালের অপেক্ষায়। আমরা যেটা আগেও দেখেছি, কীভাবে শুরু করলেন সেটা বড় কথা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কীভাবে শেষ করলেন। প্যাট কামিন্সের দল টানা আট ম্যাচ জিতে এসেছে। সেটাও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের কনকাশন, মিচেল মার্শের ব্যক্তিগত কারণসহ গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতির চ্যালেঞ্জকে জয় করে। অপরাজিত ভারতকে হারানোর সামর্থ্য শুধু অস্ট্রেলিয়ারই আছে, চাপের মধ্যে ভালো খেলতে পারার সক্ষমতায় যাদের আলাদাভাবে চেনা যায়। তিন সংস্করণে তাদের সুগঠিত দল গড়ে উঠেছে, যা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটীয় সংস্কৃতির অনন্য আত্মবিশ্বাস ও বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

Also Read: রোহিত জানেন অস্ট্রেলিয়া কী করতে পারে

ফাইনালে আন্ডারডগ হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া চালিত হবে আবেগে, যেখানে ভারতের কাঁধে থাকবে ১৩০ কোটি মানুষের প্রত্যাশার ভার। অস্ট্রেলিয়ার সুযোগ খুঁজে নেওয়া এবং চাপের মধ্যে পারফর্ম করতে পারার প্রমাণিত সামর্থ্য দলটিকে অদম্য প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

ভারতকে এখন টুর্নামেন্টজুড়ে পাওয়া দর্শক সমর্থনের শক্তি ফাইনালের চ্যালেঞ্জ জয়ে কাজে লাগাতে হবে। প্রত্যাশার চাপ সামলাতে হবে। ফাইনাল শুধুই একটা ম্যাচই নয়, এটা দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার তৈরি করার সুযোগ। এমন একটি উপলক্ষ, যা বিশ্বব্যাপী ভক্তদের ও ক্রিকেটারদের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

সেরা দলটিই এই ঐতিহাসিক সুযোগটি কাজে লাগাক এবং ক্রিকেট ইতিহাসের সমৃদ্ধ ক্যানভাসে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে যাক।

* এউইন মরগান: ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক