Thank you for trying Sticky AMP!!

আউট হয়ে ফিরছেন হতাশ নিগার সুলতানা

হারার পর নিগার–জাহানারাদের চোখ ছলছল

ইনোকা রানাওয়েরার বলে শটটা খেলে এদিক–ওদিক তাকাচ্ছিলেন নিগার সুলতানা। বল কোন দিকে গেল সেটিই খুঁজছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক। শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি স্পিনারের বলটি মিড উইকেট বাউন্ডারি ছাড়া করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু টাইমিং না হওয়ায় বল উঠে যায় ওপরে। সহজ ক্যাচ দেন উইকেটকিপারের হাতে।

এরপর নিগারের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। ঘাড় গুজে ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটার সময় তাঁর চোখটা যেন ভিজে যাচ্ছিল। হেলমেটের ভেতর থেকে নিগারের চোখের পানি মোছার ভঙ্গি দেখে তা–ই মনে হলো। ৭ ওভারে মাত্র ৪১ রান তাড়া করতে না পারার হতাশা যেন আবেগিই করে দিল নারী দলের অধিনায়ককে।  

আউট হওয়ার পর ড্রেসিংরুমে যেতে দেখা যায়নি নারী দলের অধিনায়ককে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ডাগআউটে বসে ছিলেন প্রায় মিনিট পনেরো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ৩ রানের হারটা দেখেছেন সেখানে বসেই।

ব্যাট হাতে জাহানারা কোনো বলই খেলতে পারেননি

এ তো গেল নিগারের কথা। হারে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি আরেক অভিজ্ঞ জাহানারা আলমও। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিজের শততম আন্তর্জাতিক উইকেট নেওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে চোখ যেন ছলছল করে ওঠে জাহানারার, ‘আমি আমার পরিসংখ্যান দেখি না। আমি নিজেও জানি না যে আমার এক শ উইকেট হয়েছে। একটু ভালোলাগা থাকলেও খারাপ লাগাটাই বেশি।’ সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন জাহানারা, ‘ঘরের মাঠে খেলা, আমরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। যদি কোনো কারণে সেমিফাইনালে না যেতে পারি, তাহলে আমাদের দলেরই সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগবে।’

তবে পেশাদার ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন থাকবেই। জাহানারাও সেটি মেনে নিয়েই এগোতে চান, ‘যে কোনো ক্রিকেটারেরই উত্থান-পতন থাকে। আমারও হয়েছে। যেহেতু একটা ক্রিকেটার একবারে উঠতে পারে না, উত্থান-পতন থাকলেই সে একজন পেশাদার ক্রিকেটার। আমি নিজেকে পেশাদার ক্রিকেটার মনে করি। তাই আমারও উথান-পতন থাকবে। যখনই সুযোগ পাব, যখনই দলের আমাকে প্রয়োজন হবে, আমি চেষ্টা করব সেরাটা দিয়ে অবদান রাখার জন্য।’

স্টাম্পড হয়ে গেলেন বাংলাদেশ নারী দলের ওপেনার ফারজানা হক

আজ অবশ্য দিনটা সে রকম ছিল না। জাহানারা প্রথমে ডাগআউটে বসে দেখেছেন সতীর্থ ব্যাটারদের আসা–যাওয়া। এরপর যখন ক্রিজে নেমেছেন, তখন কোনো বল খেলার আগেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গেছে। ম্যাচ শেষে সেই ব্যাটিং ব্যর্থতার ব্যাখ্যাটা দিতে হয়েছে জাহানারাকেই। তিনি বলেছেন, ‘লক্ষ্য বড় ছিল না। বলের সমান রান দরকার ছিল আমাদের। যেহেতু সমানই ছিল রানরেট, আমরা এক-দুই করে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারতাম। আমরা আরও বেশি সিঙ্গেল নিতে পারতাম। ইনিংসের শুরু থেকেই সেটা করতে পারতাম। শেষের দিকে এসে রানরেট যখন দ্বিগুণ হয়ে যায়, তখন আমরা বিগ হিটের জন্য যাইনি, সিঙ্গেলের জন্য খেলেছি। অথবা ওরা ভালো বল করেছে।’

এমন অভিজ্ঞতা এর আগেও হয়েছে বাংলাদেশ নারী দলের। জাহানারা নিজেই সে কথা মনে করিয়ে দিলেন, ‘২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে। আমরা ৪২ বলে ৪৩ রান করেছিলাম। আজকের ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ম্যাচটা হেরে আমরা সবাই হতাশই।’